টাইফয়েড জ্বর : কিছু পরামর্শ
টাইফয়েড জ্বর হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা জরুরি। না হলে রোগ জটিল হয়ে উঠতে পারে। এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮৪৩তম পর্বে কথা বলেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. কে এফ এম আয়াজ।
প্রশ্ন : টাইফয়েড জ্বরের ক্ষেত্রে কী পরামর্শ দিয়ে থাকেন?
উত্তর : সব সময় আমি বলি যে অ্যান্টিবায়োটিকটা না জেনে খাবেন না। টাইফয়েড এমন একটি জ্বর, যেখানে সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার প্রয়োজন হয় ন্যূনতম ১৪ দিন। অন্য জ্বরের মতো সাত দিন অ্যান্টিবায়োটিক খেলে টাইফয়েড জ্বর সরে যায় না। এ কারণে রোগ নির্ণয় করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
টাইফয়েডের মূল পরীক্ষা হলো ব্লাড কালচার। এটা প্রথম সাত দিনের মধ্যে করলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়। আপনি যদি না জেনে অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে ফেলেন, তাহলে দুটো সমস্যা দেখা দেবে। এক, কালচার নেগেটিভ হয়ে যেতে পারে। এতে আপনি বুঝতে পারবেন না এটি টাইফয়েড কি না। এরপর কালচার করলেন। ফলে বোঝা যাবে না এই অ্যান্টিবায়োটিকটি কি আমি সাত দিন খাওয়াব, নাকি ১৪ দিন খাওয়াব। এটি এক নম্বর সমস্যা।
দুই নম্বর সমস্যা হলো, অনেকেই টাইফয়েডের জন্য নিজে নিজে চিন্তা করে নেন যে আমি টাইফয়েডের পরীক্ষা করাব এবং গিয়ে ওউডাল টেস্ট নামক একটি টেস্ট করে থাকেন। এখানে জানা প্রয়োজন, ওউডাল টেস্ট সাধারণত দ্বিতীয় সপ্তাহের আগে পজিটিভ হয় না। তাহলে এটি একটি অত্যন্ত ভুল প্রক্রিয়া। এখন বলাই হয় এটি না করতে। তাই আপনি যদি এটি করে চিন্তা করেন, আমার টাইফয়েড হয়েছে কি হয়নি, তাহলেও রোগ নির্ণয়ে একটি গণ্ডগোল থেকে যাবে। অ্যান্টিবায়োটিকটা কত দিন খেতে হবে, সেটি বোঝা যায় না। তিন নম্বর সমস্যা যেটা দেখা যায়, আপনি এমন একটি অ্যান্টিবায়োটিক শুরু করলেন, যেটি আসলেই টাইফয়েডের বিরুদ্ধে কাজ করে। ওই গ্রুপের একটি অ্যান্টিবায়োটিক দোকানদার বা আরেকজন ডাক্তার সাহেব দিয়ে দিয়েছেন। আপনি খাচ্ছেন, জ্বর কমে গেল। পাঁচ দিনের দিন জ্বর কমে গেল। সপ্তম দিন আপনি দেখলেন জ্বর ভালো হয়ে গেছে। অ্যান্টিবায়োটিক আপনি বন্ধ করে দিলেন। ঠিক পরের সপ্তাহে জ্বরটা ফেরত আসবে। যখন ফেরত আসবে, আপনি ও আপনার চিকিৎসক উভয়েই সংকটে পড়ে যাবে। বোঝা যাচ্ছে না জ্বরের কারণ কী? এই রোগীরাই দেখা যায় দীর্ঘ মেয়াদে জ্বরে ভুগতে থাকে এবং রোগ নির্ণয় হয় না। তাই অ্যান্টিবায়োটিক শুরু করার আগে আপনি পরামর্শ নেন আমি শুরু করব কি না, কোন রোগের কারণে শুরু করব। ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করেন, আপনি যেই অ্যান্টিবায়োটিক দিচ্ছেন, সেটি কেন দিচ্ছেন। আমি আমার রোগীকে বলি, এটা জানার অধিকার আপনার রয়েছে।