দীর্ঘমেয়াদি কিডনি বিকল হওয়া : চিকিৎসা কী?
দীর্ঘমেয়াদি কিডনি বিকল হওয়ার সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশে এখন উন্নত চিকিৎসা রয়েছে। এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮৪৬তম পর্বে কথা বলেছেন কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউটের কিডনি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. হারুন অর রশিদ।
প্রশ্ন : এ অবস্থায় চিকিৎসাগুলো কী রয়েছে?
উত্তর : বাংলাদেশে পুরোপুরি অগ্রবর্তী পর্যায়ের চিকিৎসা রয়েছে। কিডনির কার্যক্রম যদি ৯৫ ভাগ শেষ হয়ে যায়, তখন আমরা তাদের অনুরোধ করি, আপনার জীবন বাঁচানোর জন্য ওষুধের পাশাপাশি হয় ডায়ালাইসিস করুন অথবা কিডনি সংযোজন করুন।
ডায়ালাইসিস বর্তমানে আমরা দুই পদ্ধতিতে করতে পারি। যার বাড়ি গ্রামগঞ্জে, তার জন্য শহরে আশা কঠিন। তাকে আমরা হোম ডায়ালাইসিসের পদ্ধতিটা বলে দিই। আর যারা শহরে থাকে, যাদের বয়স ষাটের নিচে, যাদের হার্টের রোগ নেই, তাদের আমরা বলি মেশিনের সাহায্যে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ডায়ালাইসিস করো। আর যাদের কিডনি ডোনার রয়েছে, বাবা, মা, ভাইবোন, চাচা, মামা, ফুফু, খালা—তাদের সঙ্গে যদি রোগীর ব্লাড গ্রুপে মিল থাকে, তাহলে আমরা তাকে বলি কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করে সম্পূর্ণ নতুন জীবন ফিরে নাও। এই পদ্ধতিগুলো আমরা অবশ্যই করতে পারি। আমাদের দেশে নিয়মিত কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন হয়। হাজার হাজার ডায়ালাইসিস মেশিন রয়েছে, যেগুলো দিয়ে ডায়ালাইসিস করা সম্ভব। ইদানীং আমরা হোম ডায়ালাইসিসও করে যাচ্ছি।
রোগীরা কিডনি ফেইলিউর হওয়ার পরও বর্তমান যুগে যদি চিকিৎসকের উপদেশটা মেনে চলে, সে কিন্তু এসব করার পরও নিজের অফিস-আদালত কাজকর্ম করতে পারে। তবে সমস্যা হলো প্রায় ৬০ ভাগ কিডনি ফেইলিউর রোগীর ক্ষেত্রে হার্টের সমস্যা থাকে। এই হার্টের রোগ থাকার কারণে তাদের ডায়ালাইসিসটা অত সুন্দরভাবে শেষ করা যায় না। হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেতে পারে ডায়ালাইসিসের মধ্যে। হঠাৎ করে স্ট্রোক হয়ে যেতে পারে। বেশির ভাগ কিডনি ফেইলিউর রোগী কিডনি ফেইলিউরের কারণে মারা যায় না। বেশির ভাগ কিডনি ফেইলিউরের রোগী মারা যায় স্টোকের কারণে অথবা হার্ট অ্যাটাকে। সে জন্য দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগ দেখার সঙ্গে সঙ্গে তার হার্টটা সবল আছে কি না, হার্ট স্বাভাবিক রয়েছে কি না, সেটা যাচাই-বাছাই করতে হয়। প্রত্যেক রোগীর জানা উচিত যদি কিডনি রোগ থাকে হার্টের রোগ হওয়ার আশঙ্কা ৩০/৪০ ভাগ।