কিডনির ক্ষতি করতে পারে যেসব অভ্যাস
শরীরের প্রত্যেক অঙ্গই ভিন্ন ভিন্ন এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। এর মধ্যে কিডনি একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। মানুষের শরীরে দুটো কিডনি রয়েছে। অনেকসময় একটি কিডনি দিয়েও মানুষ বেঁচে থাকে। কিডনি শরীরের দূষিত পদার্থ বাইরে বের করে দিতে সাহায্য করে। কিডনি যদি কোনো কারণে কাজ করা বন্ধ করে দেয় বা কাজ করতে না পারে তবে শরীর বড় ধরনের সমস্যায় পড়ে।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কিছু বাজে অভ্যাস কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। ফ্যামিলি হেলথ ফ্রিডম নেট ওয়ার্ক জানিয়েছে কয়েকটি অভ্যাসের কথা, যা কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। দেখুন আপনার মধ্যে এর কোনো অভ্যাস রয়েছে কি না!
অভ্যাস এক : পানি কম খাওয়া বা শরীরকে আর্দ্র না রাখা
শরীরের বিষাক্ত পদার্থকে ভালোভাবে ছেঁকে বের করে দেওয়ার জন্য কিডনির পানির প্রয়োজন হয়। যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা না হয় তবে কিডনি তার কাজ ঠিক মতো করতে পারে না এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অভ্যাস দুই : বেশি চিনি খাওয়া
বেশি পরিমাণ চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া কিডনির জন্য ক্ষতিকর। কয়েক বছর পর এই অভ্যাস কিডনিকে দুর্বল করে ফেলে এবং এর কার্যক্ষমতাকে ব্যাহত করে।
অভ্যাস তিন : বেশি লবণ খাওয়া
খাবারে অতিরিক্ত লবণের ব্যবহার উচ্চ রক্তচাপ তৈরি করে এবং কিডনির ওপর চাপ তৈরি করে। তাই খাবারে কম লবণ ব্যবহার করা ভালো।
অভ্যাস চার : প্রস্রাব চেপে রাখা
অনেকে বিভিন্ন কারণে প্রস্রাব চেপে রাখে। বিশেষ করে আমাদের দেশে রাস্তাঘাটে টয়লেটের সুব্যবস্থা না থাকায় মেয়েদের বেলায় এটি বেশি হতে দেখা যায়। এই অভ্যাস কিডনির ওপর চাপ তৈরি করে। নিয়মিত এ রকম করতে থাকলে কিডনি ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রস্রাবের মাধ্যমে নিয়মিত শরীরের বর্জ্য পদার্থগুলো বেরিয়ে যাওয়া কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
অভ্যাস পাঁচ : অতিরিক্ত কফি পান
অতিরিক্ত কফি পান কিডনির কাজকর্ম করাকে কঠিন করে দেয়। দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত কফি পান কিডনি কাজকে ব্যাহত করে। তাই অতিরিক্ত কফি পান এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন গবেষকরা।
অভ্যাস ছয় : ব্যথানাশক ওষুধ
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যথা নাশক ওষুধ বেশি সেবনে কিডনির ক্ষতি হতে পারে। এসব ওষুধ এমন উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয় যার দীর্ঘদিন ব্যবহার করা হলে কিডনি ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই কিডনির স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে বেশি ব্যথা নাশক ওষুধ না খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
অভ্যাস সাত : মদ্যপান
মদ্যপান কিডনির জন্য খুবই খারাপ। কেবল তাই নয় এটি লিভারের জন্যও বাড়তি চাপ তৈরি করে। এটি কিডনির কার্যক্রমকে ভীষণভাবে বাধাগ্রস্ত করে।
অভ্যাস আট : বেশি মাংস খাওয়া
অনেকের খাদ্যতালিকায় প্রাণীজ প্রোটিন বা মাংস বেশি থাকে। এই প্রোটিনের উৎস থেকে যে টক্সিন আসে তা সহজে ভাঙতে পারে না কিডনি এবং কিডনির জন্য তা ছাকতেও কঠিন হয়ে পড়ে। তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, কিডনি ভালো রাখতে মাংস খাওয়া কমিয়ে সবজি খান।
অভ্যাস নয় : পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হওয়া
স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ঘুম খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে অনেকেই ভালো করে ঘুমান না। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিডনির কার্যক্রম ভালো রাখতে প্রতিদিন অন্তত আট ঘণ্টা ঘুম খুব জরুরি।