‘হাসপাতালের আইসিইউতে থাকার জন্য নীতিমালা দরকার’
আইসিইউ বা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রোগীকে অযথাই রাখা হয়—এমন একটি ধারণা অনেকের মধ্যেই প্রচলিত রয়েছে। এই ধারণার ভিত্তি কতখানি?
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৯৩৮তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. মো. খলিলুর রহমান। বর্তমানে তিনি বারডেমের অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত ।
প্রশ্ন : একটি ধারণা রয়েছে, আইসিইউতে অযথাই রাখা হচ্ছে। এই ধারণার ভিত্তি কতখানি?
উত্তর : কাগজপত্রে যা দেখি তাতে মনে হয়, ধারণাটা অমূলক নয়। অনেক ক্ষেত্রে আসল রোগীরা, যাদের সত্যি সত্যি আইসিইউতে দিলে ভালো হবে, তাদের ছাড়াও রোগী ভর্তি হয়। একটি হলো, ভর্তি হয় রোগীর আত্মীয়স্বজনের চাপের কারণে। আরেকটি হলো, কোনো আশা নেই, তবুও আমি আইসিইউতে নিয়ে গেলাম। এটি কমার্শিয়াল (ব্যবসায়িক) কারণ।
আসলে প্রতিটি হাসপাতালে আইসিইউতে থাকার জন্য একটি নীতিমালা থাকা দরকার। এই এই জিনিস হলে আমি আইসিইউতে নিতে পারব। ৮০ বছর বয়সের যেকোনো রোগীর ক্ষেত্রেই আইসিইউতে নিলে লাভ হবে না। একজন ক্যানসারের রোগীকে আইসিউতে নিয়ে কোনো লাভ হবে না। একজন লিভার ফেইলিউরের রোগীকে আইসিইউতে নিয়ে কোনো লাভ হবে না। তবুও আমরা নিই। হতে পারে কোনো কোনো জায়গায় কমার্শিয়াল কারণ, কোনো কোনো জায়গায় রোগীর আত্মীয়স্বজনের চাপে। তাও শেষ চেষ্টা করেন।
প্রশ্ন : একটি সংবেদনশীল প্রশ্ন করতে চাই। যখন দেখা যায়, দীর্ঘমেয়াদি রোগীকে আইসিইউতে সাপোর্টে রাখতে হচ্ছে, তখন চিকিৎসক ও রোগীপক্ষ উভয়ই দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে যায়। রোগী মৃত্যুবরণও করেনি, আবার তার ভালো হওয়ার সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। তখন তার ভেন্টিলেশন খুলে দেওয়া হবে কি না বা তাকে মৃত ঘোষণা করা হবে কি না, এগুলো নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এই বিষয়গুলোতে আপনার পরামর্শ কী?
উত্তর : সরকার সম্প্রতি একটি ডেড ডিকলারেশনের নীতিমালা দিয়েছে। বেশ কিছু বিষয় রয়েছে। এটা সত্যি খুব একটা নাজুক জায়গা। এখানে সত্যি সত্যি মেশিন থেকে রোগীকে মুক্ত করতে হবে। কারণ, মেশিনটাকে তুলে নিলে কিছু সময়ের মধ্যে তার হার্টও বন্ধ হয়ে যাবে। হার্ট যতক্ষণ চলে, আমরা মনে করি ততক্ষণ বেঁচে রয়েছে। সুতরাং ভেন্টিলেশন বন্ধ হয়ে গেলে হার্ট বন্ধ হয়ে যাবে। সুতরাং সেটি আমরা করব কি না বা কখন করব, তার নিয়ম রয়েছে। নিউরোলোজিক্যাল পরীক্ষা রয়েছে, গ্যাস পরীক্ষা রয়েছে। এগুলো দেখে দেখে করা হয়।