আইসিইউতে রোগীকে যেভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়
একজন রোগী জটিল অবস্থায় চলে গেলে তার সেবা আরো ভালোভাবে করার জন্য সাধারণত আইসিইউ বা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নেওয়া হয়।
আইসিইউতে রোগীকে বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ১৯৪৫তম পর্বে কথা বলেছেন অধ্যাপক ডা. শাহেরা খাতুন বেলা। বর্তমানে তিনি ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজের অ্যানেসথেসিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : আইসিইউতে আসলে প্রথমেই কী দেখেন?
উত্তর : জ্ঞান থেকে থাকলে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক জ্ঞান আছে কি না, শ্বাসটা ঠিকমতো নিচ্ছে কি না, আদৌ নিচ্ছে কি না, নিতে পারলেও ঠিকমতো নিচ্ছে কি না, ঠিকমতো নিয়ে থাকলেও ওই মুহূর্তে আমার শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণটা কতটুকু রয়েছে, সেটা আমরা দেখে নিই। এরপর তার প্রস্রাব হচ্ছিল কি না জানি। এরপর যদি তার ক্যাথেডার না করা থাকে, জিজ্ঞেস করে নিই যে শেষ কখন প্রস্রাব হয়েছে, আর ক্যাথেটার করা থাকলে প্রস্রাবের ব্যাগ দেখলেই আমরা বুঝতে পারি। এভাবে রোগীর মূল অবস্থানটা জেনে নিই। জেনে নিয়ে আমরা দেখব, তার হার্ট কাজ করছে কি না। না কাজ করলে বলব, ‘হার্টের জন্য ওষুধ দাও। ‘রক্তচাপ বাড়ছে না, বাড়ার জন্য ওষুধ দাও, কমছে না কমার জন্য ওষুধ দাও’।
অনেক সময় অ্যাজমার রোগী একিউট অ্যাজমা নিয়ে আসছে, তার কার্বন ডাই-অক্সাইড যতটুকু পরিমাণ বের করে দেওয়ার কথা বা যতটুকু পরিমাণ ঢোকার কথা, সেগুলো হচ্ছে না, সেগুলো না হলে তখন আমাকে এই ব্যবস্থাটা করতে হবে।
আবার যখন একটা মাথার আঘাতের রোগী আসল, মাথায় আঘাতের কারণে তার কোন কোন অঙ্গগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলো সেগুলো দেখি। মস্তিষ্কে সহযোগিতা করার পর সেই অঙ্গগুলো যেন ভালোভাবে কাজ করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এরপর রোগীকে সাহায্য করার জন্য আমরা তার বেড সোর আছে কি না, আনুষঙ্গিক আরো কিছু রয়েছে কি না, এগুলো দেখি। সবকিছু দেখে আমরা একটি মূল মানদণ্ড দাঁড় করিয়ে ফেলি।
এরপর দ্বিতীয় কথা হলো তার কী কী পরীক্ষা নিরীক্ষা করা দরকার, সেগুলো দেখি। কোনো কোনো পরীক্ষা আধাঘণ্টা পরপর করতে হয়, কোনোটা ছয় ঘণ্টা পর করতে হয়, কোনোটা দিনে একবার, কোনোটা দুদিনে একবার করতে হয়। এগুলো সম্পর্কে আমাদের একটি গাইডলাইন দেওয়া রয়েছে। সেভাবে রোগীকে পরীক্ষা করি বা রোগীর চাহিদা অনুযায়ী আমরা করি। দিনে অন্তত দুবার তার সর্বশেষ অবস্থা রোগীর লোকদের জানাই। তাদের বলি, আপনাদের আর কিছু জানার রয়েছে কি না। আর এটি অনেক ব্যয়বহুল তো, অনেকে খরচ বহন করতে পারে না। অন্য জায়গায় চলে যেতে চায়। এই ক্ষেত্রেও আমরা তাদের স্বাধীনতা দিই।