পুড়ে গেলে প্রাথমিকভাবে করণীয়
অসাবধানতার কারণে পোড়ার মতো ঘটনা ঘটে। পুড়ে যাওয়ার পর দ্রুত ব্যবস্থা নিলে মারাত্মক ক্ষতি থেকে অনেকটা রক্ষা পাওয়া যায়।
পুড়ে গেলে প্রাথমিকভাবে করণীয় কী, এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩০১৪তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. তানভীর আহমেদ। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : আপনাদের কাছে এ জাতীয় সমস্যা নিয়ে এলে প্লাস্টিক সার্জন হিসেবে কীভাবে রোগীকে ব্যবস্থাপনা করেন?
উত্তর : পোড়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক একটি গাইডলাইন রয়েছে। আমরা দুটি জিনিস মেনে চলি। একটি হলো এটিএলএস। চিকিৎসার সঙ্গে যারা জড়িত, তারা বুঝবে। এটা ট্রমা ব্যবস্থাপনার জন্য। পোড়া হলো ট্রমা। আমরা একে সেভাবেই দেখি। সঙ্গে আমরা গাইডলাইন ব্যবহার করি। ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট অব সিভিয়ার বার্ন। পুড়ে যাওয়ার পর তার শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ ফ্লুইড বের হচ্ছে। তাকে অবশ্যই ফ্লুইড দিতে হবে। ছোট বার্ন, বড় বার্ন এভাবে ভাগ করে নিয়ে তার সঙ্গে হিসাব করে আমরা দেখি, কী পরিমাণ ফ্লুইড লাগবে। একে বলে রিসাসিটেশন। এটি যত ভালো হবে, একজন রোগীর বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা তত বেড়ে যাবে। প্রথম চিকিৎসাই কিন্তু এভাবে শুরু হয়। যদি কমিউনিটি লেভেলে হয়, তারা এটি দিতে পারবে না।
আমরা পরামর্শ দিই, পুড়ে গেলে, সেটা ছোট হোক বা বড় হোক, সেখানে কোনো কিছু দেওয়া যাবে না। তাকে সরাসরি নিয়ে যেতে হবে ট্যাপের পানিতে। স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিতে হবে। আমি ফ্রিজের পানি দেবো, বরফ দেবো—এতে কিন্তু হবে না। সেটা ফ্রোজ বাইট করবে। ৭ থেকে ১০ মিনিট তার গায়ে পানি ঢালতে হবে। সেখানে কখনো পেস্ট মাখা যাবে না। ডাল, ডিম—এসব কিছু দেওয়া যাবে না। এটা যতই আমি দেবো, রোগীর জন্য ক্ষতিকর। তার ইনফেকশন হবে। রিকভারি দেরি করে হবে। সুস্থ হতে দেরি হবে, সংক্রমণ হবে। প্রাথমিক চিকিৎসায় আমরা পানি ঢালতে পরামর্শ দিই।
যত দ্রুত সম্ভব, তাকে একজন চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে। অবশ্যই এমবিবিএস চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে। তিনি তখন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। ছোট পোড়া হলে সেই চিকিৎসা করতে পারেন। যদি তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে হয়, তাহলে তিনি সাধারণত আমাদের কাছে রেফার করে দেন। এটি হলো প্রাথমিকভাবে পুড়ে যাওয়া রোগীর ব্যবস্থাপনা।