মাথাব্যথা : কারণ ও করণীয়
এটি খুব সাধারণ একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। প্রত্যেক মানুষ এ সমস্যায় কোনো একটি কারণে অথবা বিভিন্ন কারণে ভুগে থাকেন।
মাথাব্যথার সাধারণ কারণগুলো হলো, অবসাদ, ক্লান্তি কিংবা দুশ্চিন্তা। আবার মারাত্মক সমস্যার মধ্যে রয়েছে মেনিনজাইটিস অথবা ব্রেইন টিউমার।
সাধারণ কথা
- মাথাব্যথা এমন একটি অবস্থা, যেখানে ব্যথা মাথাতেই হয়।
- অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগী ব্যথার কথাই বলেন।
- বেশিরভাগ মাথাব্যথা ক্ষতিকর নয়, চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না।
- কিছু মাথাব্যথা নির্দিষ্ট কিছু কারণে হয়ে থাকে।
মাথাব্যথার কারণ
- দুশ্চিন্তা
- মানসিক চাপ
- অবসাদ
- নিদ্রাহীনতা
- কোষ্ঠকাঠিন্য
- চোখে চাপ
- ত্রুটিপূর্ণ দৃষ্টি
- দাঁতের সমস্যা
- সাইনাসের ইনফেকশন
- জ্বর
- রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া কিংবা কমে যাওয়া
- ঠান্ডা লাগা
- চোখে দেখতে সমস্যা
- পানিস্বল্পতা
- আইসক্রিম
- যৌনতা
- বর্জ ধ্বনি
- ক্যাফিন/ ড্রাগ প্রত্যাহার
- মস্তিষ্ক সম্পর্কিত সমস্যা বা জটিলতা, যেমন—মাথায় আঘাত, টিউমার, অ্যানুরিজম, মেনিনজাইটিস, এনকেফালাইটিস ইত্যাদি।
মাথাব্যথার প্রকারভেদ
১. ভাসুকলার হেডেক (সচরাচর নারীদের বেশি হয়) : মাইগ্রেন, জ্বরজনিত মাথাব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি।
* পেটে সমস্যা
* মাথার একপাশে কিংবা দুপাশে ব্যথা
* দেখতে সমস্যা
২. মাসকুলার হেডেক : চাপজনিত মাথাব্যথা
* মুখ কিংবা ঘাড়ের মাংসপেশি শুষ্ক হয়ে যাওয়া।
* ব্যথা কপালের দিকে আসা।
৩. সার্ভাহকোজেনিক হেডেক : স্পনডিলাইটিস
৪. প্রদাহের কারণে মাথাব্যথা : সাইনুসাইটিস
চিকিৎসা
- অতিরিক্ত কাজের কারণে কিংবা চাপের কারণে মাথাব্যথা হলে সচরাচর ব্যবহৃত ব্যথানাশক ওষুধ নিতে পারেন। যেমন : এসপিরিন বা প্যারাসিটামল গ্রহণ করলে ব্যথা কমবে। এসপিরিন/ ডিসপিরিন—একটি বা দুটি ট্যাবলেট দুধ বা খাবারের সঙ্গে গ্রহণ করতে পারেন। কখনই শিশুদের এসপিরিন দেবেন না। শিশুদের ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল সিরাপ দেবেন। টিনএজারদেরও এসপিরিন দেবেন না, যদি সে ফ্লু ধরনের উপসর্গ, ভাইরাসজনিত ইনফেকশন কিংবা চিকেন পক্সে ভুগে থাকে। পরবর্তী নির্দেশনার জন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করবেন।
- যদি আপনার মাথাব্যথা স্থায়ীভাবে থেকে যায়, তাহলে মাথাব্যথার কারণ খুঁজে বের করুন। এ থেকে কিছু পরীক্ষা করতে হবে।
- যত্রতত্র ব্যথানাশক ওষুধ খেলে আপনার কিডনি ও পাকস্থলী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
- শিশুদের ক্ষেত্রে অন্ধকার, শান্ত কক্ষে শোয়াবেন। তাকে প্রয়োজনে প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রফেন দেওয়া যেতে পারে। তার কপালে বা চোখের ওপর ঠান্ডা, ভেজা কাপড় রাখবেন।
কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন
মাথাব্যথার সঙ্গে নিচের কোনো উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাবেন।
- কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ তীব্র মাথাব্যথা
- ফুসফুসে বা গলার ইনফেকশন হলে
- ঘাড় শক্ত হলে
- জ্বর ও র্যাশ থাকলে
- মানসিক দ্বিধাগ্রস্ততা
- খিঁচুনি হলে
- চোখে দেখতে সমস্যা
- প্যারালাইসিস
- দুর্বলতা
- ভারসাম্যহীনতা
- শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া কিংবা কথা বলতে কষ্ট হলে
- চোখ লাল হলে
- অসাড়তা কিংবা ঝিনঝিন অনুভূতি
- মাথায় আঘাতের পর মাথাব্যথা
- আপনার বয়স পঞ্চাশের বেশি হলে কিংবা অস্বাভাবিক ধরনের মাথাব্যথায় ভুগলে।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, অর্থোপেডিকস ও ট্রমাটোলজি বিভাগ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ঢাকা।