মাঝবয়সীদের নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ : করণীয়
সাধারণত আঘাতজনিত কারণে মাঝবয়সীদের নাক দিয়ে রক্ত পড়ে। এ ক্ষেত্রে একটি ভেজা রুমালে বা নরম কাপড়ে কিছু বরফ কুচি নাকের ওপর চেপে রেখে দিলে রক্ত পড়া সাধারণত বন্ধ হয়ে যায়।
তবে মাঝেমধ্যে এতে রক্ত পড়া বন্ধ নাও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে নাকের ভেতর গজ ঠেসে চিকিৎসাসম্মতভাবে ঢুকিয়ে দিতে হতে পারে। একে বলা হয় নাকে প্যাক দেওয়া।
অনেক সময় নাকের ভেতরে ছোট শিরা ও ধমনি ফেটে বা ছিঁড়ে গিয়ে রক্তপাত হয়। এ কারণের জন্য শিশুদের নাক দিয়ে রক্ত পড়লে তা বড় হওয়ার পর আবার দেখা দিতে পারে। আবার এ কারণে যুবক বয়স থেকেই রক্ত পড়া শুরু হতে পারে।
এ ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক তাপ দিয়ে নাকের মধ্যে রক্তক্ষরণের জন্য দায়ী ছিঁড়ে যাওয়া ধমনি ও শিরাকে বন্ধ বা ‘সিলা’ করে দেওয়া হয়।
বেশি বয়সে নাক দিয়ে রক্ত পড়া
বয়স বেশি হলে শিরা ও ধমনির দেয়াল ভঙ্গুর হয়ে যায়। বিশেষ করে যাদের উচ্চ রক্তচাপ কিংবা বহুমূত্র রোগ থাকে। এই ভঙ্গুর অবস্থায় কোনো ধরনের শারীরিক চাপ ও উচ্চ রক্তচাপের কারণে নাকের রক্ত চলাচলের নালি ফেটে গিয়ে রক্ত পড়তে পারে।
করণীয়
এ ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়ে রোগীকে সোজা করে বসিয়ে নাক ভালো করে ঝেড়ে নিয়ে, একটু সামনে ঝুঁকে বসে নাকের ওপর আগের নিয়মে বরফ কুচি দিলে কিছুক্ষণের মধ্যে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায়। যদি এই প্রক্রিয়ায় রক্ত পড়া বন্ধ না হয়, তবে নাক গজ দিয়ে প্যাক করে দিতে হয়।
এ ছাড়া সব বয়সের ক্ষেত্রে আরো কিছু কারণ রয়েছে, যা থেকে নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে। সেসব কারণের মধ্যে রয়েছে কয়েক ধরনের রক্তের ক্যানসার, যেমন–লিউকোমিয়া, টাইফয়েড, জ্বর, হাম, জলবসন্ত ইত্যাদি। তবে এসব কারণে অভিজ্ঞ নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ ছাড়া সঠিকভাবে শনাক্ত করা কিছুটা কঠিন। তাই সব বয়সে নাক দিয়ে রক্ত পড়ার ব্যাপারে উপযুক্ত চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।