ঘুমানোর পর আপনার মাঝে যা হয়

আয় ঘুম আয় -কতই না ভালোবাসে মানুষ ঘুমকে। কিন্তু ঘুমানোর পর আপনার কী অবস্থা হয় বা হতে পারে সে ধারণা আছে? গভীর ঘুমে চলে যাচ্ছেন তারপর হচ্ছেটা কী? নিজের শরীরের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ থাকে না এটা শিশুও জানে। তাহলে শরীরের নিয়ন্ত্রণটা নেয় কে? ঘুমের দেশে চলে যাওয়ার পর শরীর নিজেই নিজের নির্ধারক হয়ে ওঠে কি? এরকম যদি হয় তবে ঘটে কী তখন?
বিষয়টি নিয়ে ভেবেছে শিক্ষা সংক্রান্ত অনলাইন মাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে ইন এডুকেশন। ঘুমের দেশে চলে যাওয়ার পর শরীরে ঘটা ১০ বিষয় তুলে ধরা হয়েছে এক প্রবন্ধে।
১. ঘুম যখন গভীর হতে থাকে, র্যাপিড আই মুভমেন্ট (র্যাম) স্তরে চলে যায় তখন শরীরের পেশিগুলো অবশ হয়ে যেতে থাকে। একে বলে স্লিপ প্যারালাইসিস। র্যাম অ্যাটোনিয়ার কারণে এ ব্যাপারটি শরীরে ঘটে। স্লিপ প্যারালাইসিসের কারণে কেবলই ঘুম আসতে পারে অর্থাৎ নিদ্রারোগ হত পারে আর র্যাম অ্যাটোনিয়ার কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
২. ঘুমিয়ে পড়ার পর আমাদের শরীর যথাযথভাবে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে না। হৃদকম্পন, হৃদযন্ত্রের চাপ, শ্বাস পরিচালনের হারটা ঠিক নিয়মিত থাকে না।
৩. ঘুমের দেশে চলে গেছেন। হঠাৎ করে মনে হয় না ধাক্কা খেয়েছেন কোথাও? বা আপনাকে ধরে কেউ হেঁচকা টান দিল। বিষয়টিকে বলে হিপনিক জার্ক। গভীর ঘুমে চলে যাওয়ার পর বিষয়টি অনুভূত হয়। বলা হয়, শোয়াটা ঠিকমতো না হলে এমন হয়।
৪. প্যারাসমনিয়া বলতে একটা ব্যাপার আছে। মানুষ অনেক সময় গভীর ঘুমের মধ্যে প্রচন্ড ভয় পায়। সে ভয়টা সে ঘুমের মধ্যেই চিৎকার দিয়ে প্রকাশ করে। এ ভয়ের কারণে মানুষের মাথাও ব্যথা করতে থাকে।
৫. ঘুমের সময় হিউম্যান গ্রোথ হরমোন (এইচজিএইচ)নামে হরমোন উৎপাদিত হয়। এ হরমোনই শরীরের গঠন ও রক্তের মাত্রা ঠিক রাখার কাজ করে।
৬. অনেকেই ঘুমে হাঁটে। হাঁটার সময়ে সে এমন কাজ করতে থাকে যা সে সজাগ অবস্থায় করে। কিন্তু ঘুমের সময় হেঁটে বেড়ানো মানুষ নিজে মনে করেন তিনি ঘুমেই আছেন। বিষয়টিকে অনেকে মানসিক অসুস্থতাও বলে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
৭. গভীর র্যাম স্তরের ঘুম মানুষের অবচেতন মনে প্রভাব ফেলে। মানুষ কোনো বিষয় বা চিন্তায় কীভাবে প্রতিক্রিয়া করবে তা গঠন করে। ভালো স্মৃতিশক্তি গড়ে তুলতেও এ পর্যায়ের ঘুম ভালো কাজ করে।
৮. ঘুমের সময় অনেক মানুষ কথা বলে। এ বিষয়টাও ভালো না। মনস্তত্ত্ববিদরা বলছেন, দুশ্চিন্তা, অবসাদ, ঘুমের ব্যাঘাত থেকে এ ঘটনা ঘটে।
৯. ঘুমের সময় অনেকেই শ্বাসকষ্টে ভুগেন। শ্বাসটা ঠিকমতো টেনে নিতে পারেন না। মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছে না। এ ধরনের মানুষ মনে করেন যে তিনি ভালোই ঘুমাচ্ছেন আসলে পাশের জনই বুঝতে পারেন যে শ্বাস নিতে ওই ব্যক্তি কষ্ট পাচ্ছেন। বিষয়টিকে বলা হয় স্লিপ অ্যাপনিয়া।
১০. ঘুমের আগেই যদি ভয় লাগা শুরু করে? এরকমও হয়। ঘুমানোর সময় মনে হয় এই কিছু হল। কেমন একটা আতঙ্কজনক পরিবেশ। এ ধরনের মানুষ ঘুমিয়ে পড়ার পরেও চিৎকার দিয়ে ওঠে।