ওজন কমাতে কী খাবেন?

Looks like you've blocked notifications!
ওজন নিয়ন্ত্রণে প্রচুর সবজি ও ফল খেতে হবে। ছবি : সংগৃহীত

ওবেসিটি বা স্থূলতা বর্তমানে একটি প্রচলিত সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাম্য ওজনের তুলনায় উচ্চতা অনুযায়ী ১০ ভাগ ওজন বেশি থাকলে তাকে স্থূলতা বলে।

আমাদের দেশে বর্তমানে এ সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর এ কারণে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যেমন : কিডনি ডিজিস, লিভার ডিজিস, ডায়াবেটিস ও কার্ডিয়াক সমস্যা।

ওজন নিয়ন্ত্রণে করণীয় বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানে কথা বলেছেন পুষ্টিবিদ নুসরাত জাহান। তিনি বলেন, ওজন নিয়ন্ত্রণের মূল মন্ত্র হলো খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করা। ওজন নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে ভারসাম্যপূর্ণ ডায়েট মেনে চলা খুব জরুরি। যদি ভারসাম্যপূর্ণ ডায়েট আমরা মেনে না চলি, তাহলে পুষ্টির ঘাটতি হয়। অনেকে ভাবেন, ওজন কমানো মানে না খেয়ে থাকা। আমাদের ওজন কমাতে হবে খেয়ে, না খেয়ে নয়। আমরা সারা দিনে যে খাদ্যতালিকা তৈরি করব, সেখানে অবশ্যই পরিমাণমতো কার্বোহাইড্রেট থাকতে হবে, ফল থাকতে হবে, সবজি থাকতে হবে। আর এ বিষয়গুলো যদি আমরা মেনে না চলি বা ভারসাম্যপূর্ণ ডায়েট মেনে না চলি, তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, মাথার চুল পড়ে যাচ্ছে, ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে যাচ্ছে, নখ ভেঙে যাচ্ছে। তাই ওজন কমানোর জন্য ভারসাম্যপূর্ণ ডায়েট মেনে চলা খুব জরুরি।

ওজন কমানোর জন্য প্রথমেই চিন্তা করতে হয়, কোন খাবার কতটুকু পরিমাণে খেতে হবে জানিয়ে পুষ্টিবিদ নুসরাত বলেন, এ ক্ষেত্রে ওজন ও উচ্চতা অনুযায়ী একটি ক্যালরি মেনে খাদ্যতালিকা তৈরি করতে হবে। এই খাদ্যতালিকায় প্রোটিন, ফল, সবজি, মিনারেল ইত্যাদি থাকবে।

ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে খাদ্যতালিকাকে আমরা পাঁচ থেকে ছয় বেলায় ভাগ করে নেব জানিয়ে পুষ্টিবিদ নুসরাত আরো বলেন, সকালে যে খাবারটি খাব, সেটি অবশ্যই ক্যালরির একটি বড় অংশ হতে হবে। ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে পরোটা বা ভাতের পরিবর্তে লাল আটার রুটি খেতে হবে। ওমলেট বা পোচের পরিবর্তে সিদ্ধ ডিম খেতে হবে। সকালে আমরা হয়তো একটি মুরগির স্যুপ বা দই রাখতে পারি।

দুপুর ও রাতে খাবারে আমরা যে মাছটি খাবো, সেটি অবশ্যই না ভেজে খেতে হবে। কারণ, আমরা এক চা চামচ তেল থেকে প্রায় ৪৫ কিলোক্যালরি পেয়ে থাকি। তাই আমাদের ওজন কমানোর জন্য তেলের পরিমাণটা বাদ দিতে হবে। আর বিকেলের নাশতায় চর্বিযুক্ত কোনো খাবার না খেয়ে ছোলা, ফলের সালাদ, ফলের জুস আমরা চাইলে নিতে পারি।

পুষ্টিবিদ নুসরাত জাহান বলেন, সকালের তুলনায় আমাদের অবশ্যই রাতে কম খেতে হবে। কারণ, সকালের নাশতা খাওয়ার পর আমাদের সারা দিন প্রচুর কাজ করতে হয়। এতে আমরা ক্যালরি ঝরিয়ে থাকি। রাতে খাবারের পর শারীরিক কোনো কাজ আমরা করি না এবং ক্যালরি ঝরানোর পর কোনো বিষয় থাকে না। তাই সকালের তুলনায় বা অন্যান্য মিলের তুলনায় আমাদের অবশ্যই রাতের বেলা পরিমাণে কম খেতে হবে। আমরা যদি প্রতিবেলার খাবারের পর এক কাপ করে টক দই খাই, এটি আমাদের শরীরের চর্বিকে ঝরাতে কাজ করবে। ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্তত দুই থেকে পাঁচ পিস পর্যন্ত আমরা বাদাম খাব। বাদাম শরীরের চর্বিকে ঝরিয়ে থাকে। এ ছাড়া আমরা ওটস নিতে পারি, সালাদ নেব প্রচুর।

মোটকথা হলো, ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য আমাদের অবশ্যই শর্করা জাতীয় খাবার কম খেতে হবে। প্রোটিন জাতীয় খাবার, ফল ও সবজি প্রচুর থাকতে হবে। এ ছাড়া ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আমাদের প্রতিদিন বায়াম করতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে বলে পরামর্শ তাঁর।