চোখ ওঠা রোগে অপচিকিৎসা নয়!
চোখ ওঠা রোগ সারাতে অনেকে হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে যান। এতে বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করে চোখ আরো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৪৩২তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেলের চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. বজলুল বারী ভূঁইয়া।
প্রশ্ন : গ্রামে কিছু বিষয় করে- এ রকম চোখ ওঠা হলে শামুকের পানি দেয়। বিভিন্ন পাতার রস বা পানি দেয়। এটি কি ক্ষতির কারণ হতে পারে?
উত্তর : এটা খুব মজার কথা বলেছেন। রোগ হয়েছে, চোখ উঠেছে, তার দিকে তাকালেই বুঝি আরেকজনের অসুখ হয়ে যাবে। কিন্তু তা হয় না। জিনিসটা ছড়ায় এভাবে যে চোখ উঠলে প্রদাহ হয়, তখন মানুষ বারবার চোখে হাত দেয়। হাত দিলে চোখের মধ্যে জীবাণু থেকে যে ময়লাটা লাগে, সেটা দিয়ে অন্য জায়গায় হাত দিল। অন্য জায়গায় লাগল। এখানে আরেকজন হাত রাখল, তার আঙুলে বা হাতে সেটি লাগল। সে আবার চোখে হাত দিল। এভাবে কিন্তু ছড়ায়। অথবা একটি তোয়ালে হয়তো সবাই ব্যব্হার করল, সেভাবে ছড়িয়ে গেল।
আর দ্বিতীয় যে কথাটা বলেছেন, সেটা আমরা খুব ভয়াবহ আকারে মাঝে মাঝে পাই, শুধু এটা না, এর মধ্যে তাবিজ-কবচ থাকে। এরপর শামুকের পানি চোখে দেওয়া হয়, গাছের ছালের রস দেওয়া হয়, বিভিন্ন পাতার রস দেওয়া হয়। এই জিনিসগুলো মাঝে মাঝে এত ভয়াবহ আকার ধারণ করে যে দেখা যায় একটা ভুলের কারণে সারা জীবন চোখে সমস্যা হয়। হয়তো চোখটাই নষ্ট হয়ে গেল। আমাদের কাছে যখন আসে, হয়তো আমরা চোখের দৃষ্টি আর ফেরাতে পারি না। কারো কারো চোখ পর্যন্ত তুলে ফেলতে হয়। কাজেই আমার অনুরোধ থাকবে আপনারা তাবিজ-কবচ লাগান সমস্যা নেই, পানি পড়া খান সমস্যা নেই। কিন্তু চোখের মধ্যে দয়া করে কোনো কিছু দেবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কবিরাজের কোনো কিছু দেবেন না।
দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, এটি কিন্তু ভয়াবহ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। দুটো অন্যায় হচ্ছে। একটি হলো চোখের মধ্যে কোনো খারাপ কিছু দিয়ে চোখ অন্ধ করলেন। অন্যটি হাতুড়ে ডাক্তাররা চোখের চিকিৎসা করার জন্য সরকারের অনুমোদিত ব্যক্তি নন। দুটি অপরাধে অন্তত ১০ থেকে ১২ বছরের সাজা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।