মস্তিষ্কের টিউমারের চিকিৎসা কী
মস্তিষ্কের টিউমার হলে দ্রুত চিকিৎসা করা প্রয়োজন। মস্তিষ্কের টিউমারের বেশ আধুনিক চিকিৎসা এখন এ দেশে করা হচ্ছে। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৪৭৩তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. আর এন ভট্টাচার্য। বর্তমানে তিনি এএমআরআই হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : রোগীরা আপনাদের কাছে এলে নিশ্চিত হওয়ার জন্য কোন কোন পরীক্ষা করেন?
উত্তর : প্রাথমিক পর্যায় হলো সিটি স্ক্যান। মস্তিষ্কের সিটি স্ক্যান করে প্রায় ক্ষেত্রে ধরা পড়বে বিষয়টি কী। এরপর আরো বিশদ জানার জন্য আমরা আজকাল এমআরআই স্ক্যান করি। এরপর এর ওপর ভিত্তি করে আমরা চিকিৎসা করি।
প্রশ্ন : কোন ধরনের চিকিৎসা দেবেন এটি কি নির্ভর করছে মস্তিষ্কের কোন অংশে টিউমার হচ্ছে তার ওপর?
উত্তর : বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সাধারণত পেছনের অংশে টিউমার বেশি হয়। আর বড়দের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের উপরিভাগে টিউমার বেশি হয়।
প্রশ্ন : সে ক্ষেত্রে আপনারা কী ধরনের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন?
উত্তর : বড়দের ক্ষেত্রে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ ভাগ টিউমার ক্যানসার হয়। এখন এম আর আই স্ক্যান যেটা হয়, সেটি অনেক উন্নত ধরনের। প্রায় সব ক্ষেত্রে বলে দিতে পারি অস্ত্রোপচারের আগে এটা ক্যানসার কি না। সেভাবে আমরা পরামর্শ দিয়ে থাকি।
মস্তিষ্কের ক্যানসার যদি দেখি, এই ক্যানসারকে আমরা দুই ভাগে ভাগ করি। একটা হলো প্রাইমারি টিউমার, যার উৎসটা মস্তিষ্ক। আর সেকেন্ডারি যেটা শরীরের কোথাও আছে সেখান থেকে এসেছে। আজকাল উন্নত ধরনের পরীক্ষা এসেছে, পেট স্ক্যান। এটি পুরো শরীরের করলে আমরা বুঝতে পারব কোথা থেকে টিউমারের উৎপত্তি। আগে এটি ছিল না। অনেক ক্ষেত্রে আমরা বুঝতে পারতাম না কোথা থেকে এসেছে। যদি ক্যানসার হয়, এরও প্রাইমারি ক্যানসার চারটি দলে ভাগ করি। চার মানে সর্বোচ্চ। সেখানে সার্জারি, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি দিয়েও রোগী বেশি দিন বাঁচে না।
তখন লোকে বলে তাহলে কেন অস্ত্রোপচার করব? আসলে এই পর্যায়ে রোগীর এত বেশি কষ্ট হয়, তখন আমি বলি দেখুন দুটো জিনিস। একটি হলো কোয়ান্টিটি (পরিমাণ) অব লাইফ, আরেকটি হলো কোয়ালিটি (গুণগত) অব লাইফ। কোয়ানটিটি আমাদের হাতে নেই। তবে আমরা কোয়ালিটি দিতে পারি। আমরা কী চাই। আমাদের নিকটাত্মীয় যতদিন বেঁচে আছে, ভালোভাবে বেঁচে থাকুক। এর জন্য অস্ত্রোপচার করতে পারি। হয়তো বলে রোগী তো বাঁচবেই না। তাহলে অস্ত্রোপচারের কী দরকার। তখন আমি বলি আপনার আত্মীয় যত দিন বেঁচে আছেন, একটু শান্তিতে ভালোভাবে বেঁচে থাকুক। আর বিনাইন টিউমার অস্ত্রোপচার করে ঠিক করা যায়। আর লো গ্রেট টিউমার, গ্রেট ওয়ান, গ্রেট টু। সেখানেও অস্ত্রোপচার করে প্রায় স্বাভাবিক জীবন দিতে পারি। যদি উচ্চপর্যায়ের হয়, তখন কেমো, রেডিওথেরাপি দেওয়া হয়। আর শরীরের অন্য কোনো জায়গা থেকে উৎপত্তি হয়, তাহলে সেখানকার চিকিৎসার পাশাপাশি মস্তিষ্কের চিকিৎসা করা হয়।