পিত্তথলির পাথরের লক্ষণ কী

পিত্তথলির সমস্যার মধ্যে অন্যতম হলো এর পাথর। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৪৭৫তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. সরদার এন নাঈম। বর্তমানে তিনি জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : সাধারণত কোন কোন সমস্যা নিয়ে আপনাদের কাছে রোগীরা আসছেন?
উত্তর : আসলে পিত্তথলির সবচেয়ে বেশি সমস্যা আমরা যেটা পাই সেটি হলো পাথরজনিত সমস্যা। পিত্তথলিতে পাথর খুব প্রচলিত একটি সমস্যা। পাথরের সঙ্গে সঙ্গে পাথর ছাড়াও সংক্রমণ হতে পারে। পাথরসহ যেমন হয়। পিত্তথলির টিউমারজনিত সমস্যা হতে পারে। পলিপ হতে পারে, যেটা ম্যালিগনেন্ট নয়। বেশ বড় টিউমার হয়। কখনো কখনো সংক্রমণ হয়। সবচেয়ে খারাপ যেটি আমরা দেখি সেটি হলো পিত্তথলির ক্যানসার। এর কারণ লিভারের খুব কাছে পিত্তথলি। পিত্তথলির ক্যানসার হলেই লিভারে ধরে যায়। এতে ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি থাকে। এ জন্য পিত্তথলির পাথরজনিত সমস্যা বা টিউমারজনিত সমস্যা আমরা দেখি। এ ছাড়া আর পিত্তথলিতে তেমন সমস্যা আমরা দেখি না। এ ধরনের সমস্যা দেখলে চিকিৎসা করে ফেলা খুব প্রয়োজন মনে করি।
প্রশ্ন : পিত্তথলির পাথর হলে বা সংক্রমণ হলে লক্ষণ কীভাবে প্রকাশ পায়?
উত্তর : পাথর থাকার কারণে কিছু সমস্যা হয়। অনেক সময় পাথর চুপচাপ বসে থাকতে পারে। লক্ষণহীন হয়। তবে কখনো কখনো পাথর পিত্তথলির সিস্টিট ডাক্টের মুখে আটকে গিয়ে সংক্রমণ করতে পারে। এ সংক্রমণ খুব জটিল হয়। তখন আমরা একে একিউর পলিসিস্টাইটিস বলি। লক্ষণ বলতে প্রথমেই পেটে প্রচণ্ড ব্যথা হবে। ডান দিকে ওপরের দিকে, ঠিক লিভারের নিচে যেখানে পিত্তথলি থাকে। তার পর রোগীর বমি হবে। সংক্রমণের কারণে জ্বর হবে। কখনো কখনো পাথর পিত্তনালির মধ্যে চলে আসে।
তখন প্রস্রাব হলুদ হয়ে যেতে পারে। পায়খানার রং সাদা হয়ে যেতে পারে। অনেক সময় যেটি হয়, পিত্তনালির পুরোটাই ব্লক হয়ে যায়। হঠাৎ করে অনেক উচ্চমাত্রায় জন্ডিস হয়ে যায়। তখন কিন্তু কাঁপুনি দিয়ে জ্বরও আসে। পিত্তথলির পাথর থেকে আমরা এ ধরনের সমস্যা দেখি।
প্রশ্ন : আপনাদের কাছে যখন রোগীরা আসছে তাদের অভিযোগটা কী থাকে?
উত্তর : বদহজম হয়। একে ডিসপ্যাপসিয়া বলি অনেক সময়। পেটে গ্যাস হয় প্রচুর। আর আপনি জানেন পিত্তথলির মধ্যে যে পিত্তরস জমা হয়, সেটি তেলজাতীয় খাবারকে পরিপাকে সাহায্য করে। সুতরাং যখনই পিত্তথলির পাথর হয়, এটি পরিপূর্ণভাবে কাজ করে না। তখন কিন্তু চর্বিজাতীয় খাবারগুলোর হজম ব্যাহত হয়। তখনই পেটে গ্যাস হয়। এ ছাড়া প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে রোগী আসে।