পিত্তথলির পাথরের চিকিৎসা কী?
পিত্তথলির পাথর একটি প্রচলিত সমস্যা। এর উন্নত ও সহজ চিকিৎসা এখন বাংলাদেশেই সম্ভব। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৪৭৫তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. সরদার এন নাঈম। বর্তমানে তিনি জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : প্রাথমিক পর্যায়ে সেগুলো ব্যবস্থাপনা করেন কীভাবে?
উত্তর : মূলত পিত্তথলির একমাত্র চিকিৎসা হলো এটি কেটে ফেলে দেওয়া। তো, যাঁরা মাঝেমধ্যে হালকা সমস্যা নিয়ে আসেন, বদহজম, পেটে গ্যাস হওয়া ইত্যাদি। তখন পিত্তথলিতে পাথর পেলে আমরা ল্যাপারোস্কোপি করে ফেলি।
বর্তমানে সারা পৃথিবীতে যেটা হচ্ছে, আগে যেমন সংক্রমণ হলে কমানোর জন্য অপেক্ষা করার একটি পদ্ধতি ছিল, তবে এখন এটা করা হয় না। কারণ, এতে অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয় না। তাই যখনই কেউ পিত্তথলির সমস্যা নিয়ে আসে, আমরা তাদের তৈরি করি অস্ত্রোপচারের জন্য। অস্ত্রোপচার মানেই পিত্তথলিটিকে ফেলে দেওয়া। এই অস্ত্রোপচার আগে পেট কেটে করা হতো, তবে এখন ল্যাপারোস্কোপি করে করছি। আগে পেটকে কাটা হতো পিত্তথলিকে দেখার জন্য, এখন এই দেখাটাকেই যদি ক্যামেরার মাধ্যমে করতে পারি, তাহলে আর পেট খোলার প্রয়োজন পড়ে না। ল্যাপারোস্কোপির মাধ্যমে আমরা খুব সহজেই ক্যামের ঢুকিয়ে, ছোট ছোট তিনটি পাংচার করে, পিত্তথলিকে খুব সুন্দরভাবে নিয়ে আসি। মজার বিষয় হলো, খুলে আমরা এর যতটুকু আকার দেখি, ল্যাপারোস্কোপির মাধ্যমে অনেক বড় দেখি। এতে অনেক নিখুঁতভাবে দেখা যায়। অবশ্যই এর জন্য বিশেষ পদ্ধতি লাগে।
প্রশ্ন : তবে আমরা কিন্তু অনেক সময় দেখছি, ল্যাপারোস্কোপির বাইরেও পেট কেটে অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে। এর কোনো প্রয়োজন আছে কি?
উত্তর : হ্যাঁ, এটা অবশ্য ভালো একটি প্রশ্ন করেছেন। আসলে এটি নির্ভর করে কিছু জিনিসের ওপর। ল্যাপারোস্কোপির জন্য পুরো সেটআপ লাগবে। পেট কাটা তো যায় যেকোনো অপারেশন থিয়েটারেই। ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি করতে হলে পুরো সেটআপ না থাকলে হয় না।
আরেকটি বিষয় হলো সার্জনের দক্ষতা। সার্জন যদি খুব দক্ষ না হয়, তাহলে সমস্যা হতে পারে। ল্যাপারোস্কোপ দিয়ে করতে গিয়ে যদি কেউ দুর্ঘটনার শিকার হয়, তার চেয়ে বরং যিনি ভালো করে খুলে করতে পারেন, সেটাই করা ভালো।
আমার ক্ষেত্রে হয়তো খুব কমজনের মধ্যে দেখি পিত্তথলির অবস্থাটা খারাপ হয়ে গেছে, যেটাকে ল্যাপারোস্কোপ দিয়ে করা উচিত নয়। এটি করতে গেলে বরং ক্ষতি হতে পারে। এমনকি ২৫ বছর বা ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকার পরও কোনো কোনো ক্ষেত্রে মনে হয়, ল্যাপারোস্কোপ দিয়ে এটা করতে যাওয়া ঠিক হবে না। সেটা ২০০/৩০০ জনের মধ্যে একজনের তো হতেই পারে। তবে ল্যাপারোস্কোপ দিয়ে সব পিত্তথলি করে ফেলা সম্ভব বলেই আমরা মনে করি।