জ্বর হলে কী করবেন

জ্বর হলে কী করণীয়- এ নিয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৪৮৭তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. প্রদীপ রঞ্জন সাহা। বর্তমানে তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : সামগ্রিকভাবে জ্বর হলে একজন রোগীর আসলে কী কী করণীয়?
উত্তর : রোগীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই বলছি, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ইতিহাস ভালো দিতে পারি না। এসে হয়তো বলল আমার জ্বর। থার্মোমিচটারে মাপলেই তো আমি জ্বর পাব। তবে থার্মোমিটারে তো কারণ উঠবে না। আমি কারণ জানি না, আপনি আমাকে বলবেন, আমার কাশি আছে। আমার প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হয়। আমার পাতলা পায়খানা হচ্ছে। আমার এই জায়গায় হয়তো আমি একটি গ্ল্যান্ড পাচ্ছি, অথবা আমার ওই জায়গায় হয়তো আমি গ্ল্যান্ড পাচ্ছি। যেহেতু আমরা একটি কনজারভেটিভ সোসাইটি, এ জন্যই অনেক সময় আমরা সব পরীক্ষা করতে পারি না। প্রতিটি রোগীর জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। এখন যদি কোনো রোগী দেখি প্রথমদিন জ্বরেই সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে, সে এক ঘণ্টাও অপেক্ষা করতে পারবে না।
জ্বরের সঙ্গে আরো উপসর্গ কী আছে। ‘আমার খিচুনি হয়েছে’—তাহলে তাড়াতাড়ি করতে হবে। ‘জ্বরেরসঙ্গে প্রচণ্ড কাশি হচ্ছে, কাশিতে প্রচুর রক্ত যাচ্ছে’—এই ক্ষেত্রে ভাবার কোনো সুযোগ নেই। তাই রোগীকে বুঝতে হবে, জ্বরের সঙ্গে আমার প্রাসঙ্গিক আর কী অভিযোগ আছে। এখানে ডাক্তারেরও ভূমিকা আছে। রোগী অভিযোগ করল। রোগীর কিছু পর্যবেক্ষণও ছিল কিন্তু আমি এড়িয়ে গেলাম। এতে হবে না। এখানে রোগীকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে, চিকিৎসককেও দেখতে হবে। জ্বরের কোনো ক্লু পাওয়া যায় কি না। সেই ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিক এখানে বড় বিষয়। ডেঙ্গু নিয়েও অনেকে অনেক সময় কথা বলে। অ্যান্টি মানে এগেইনস্ট, বায়ো মানে এগেইনস্ট টু লাইফ। অ্যান্টিবায়োটিক কেবল ব্যাকটেরিয়া মারে, ভাইরাস নয়। ডেঙ্গুকে মারবে না। তবে যদি তার ডেঙ্গুর সঙ্গে অন্য কোনো সমস্যা থাকে তাহলে করতে পারে। ইনফেকশন থাকতে হবে। মেডিসিনের সব কিছুতে আপনি দুই দুইয়ে চার মেলাতে পারবেন না। তবে এমনি এমনি অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াও ঠিক নয়, দেওয়াও ঠিক নয়।
প্রশ্ন : জ্বরের সঙ্গে খিঁচুনি হলে করণীয় কী হবে?
উত্তর : আমি যেহেতু প্রাপ্তবয়স্কদের চিকিৎসা করি, যদি সেখানে জ্বর এবং খিঁচুনি পাই তাহলে সেটি জটিল। এখানে মেনিনজাইটিস হওয়ার আশঙ্কা অনেক, যেটা খুব জটিল রোগ। এতে দেরি করা যাবে না।
এ ছাড়া ম্যালেরিয়া আরেকটি বিষয়। এটা কী ঋতু এবং রোগী কোন জায়গা থেকে এসেছে, যদি রোগী পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে আসে, তাহলে ম্যালেরিয়া ভাবব। সেখানে দ্রুত ওষুধ শুরু করব।