ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি হলে করণীয়
ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি ডায়াবেটিস রোগীদের চোখের একটি রোগ। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৫১৫তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান। বর্তমানে তিনি ভিশন আই হাসপাতালের রেটিনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : যদি এমন হয় যে একজন ডায়াবেটিক রোগীর এই সমস্যা হয়ে গেছে, তখন করণীয় কী?
উত্তর : তখন অবশ্যই তাঁকে একজন রেটিনা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। রোগী যখন আমাদের কাছে আসেন, তখন প্রাথমিক পর্যায়ে খালি চোখে দেখি। যদি আমরা প্রয়োজন মনে করি, সে ক্ষেত্রে পরে আরো কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা রয়েছে এর জন্য। যেমন কালারস ফান্ডাস ফটো। তার মানে এর মাধ্যমে আমরা চোখের ভেতর রেটিনার একটি ছবি তুলি। কখনো কখনো আমরা যেটা করি, হার্টের যেমন এনজিওগ্রাম করা হয়, এ রকম হলে, ঠিক এ রকম চোখের এনজিওগ্রাম করি। এনজিওগ্রাম করে বোঝার চেষ্টা করি ঠিক কোন কোন রক্তনালি বা রেটিনার কোন কোন অংশে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। কখনো কখনো আমরা ওসিটি করি। এটা হচ্ছে চোখের একটি স্ক্যানিং। সিটি স্ক্যান বা এমআরআইর মতো একটি স্ক্যানিং। চোখের ভেতর রেটিনার ১০টি লেয়ার থাকে। আমরা জানি যে রেটিনার পুরুত্ব খুবই কম। এটি এত পাতলা যে এটির পুরুত্ব হচ্ছে ২৭০ থেকে ৩০০ মাইক্রন। এই ২৭০ থেকে ৩০০ মাইক্রনের মধ্যে আবার ১০টি স্তর থাকে। এই ১০টি স্তরের কোনো না কোনো স্তর যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে আমাদের দৃষ্টি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা ওসিটির মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করি। এগুলো নির্ণয় করার পর তখন আমরা তাঁর জন্য চিকিৎসার পরিকল্পনা দাঁড় করাই। আমরা কীভাবে শুরু করব এবং কোথায় শেষ করব, সেটা চিন্তা করি।
প্রশ্ন : চিকিৎসা কী কী রয়েছে?
উত্তর : চিকিৎসার মধ্যে একটি রয়েছে লেজার করা। দ্বিতীয়ত হলো, চোখের মধ্যে আমরা ইনজেকশন দিই। আমরা বলি যে অ্যান্টিভিএফ ইনজেকশন দেওয়া। কখনো কখনো অস্ত্রোপচার করার দরকার পড়ে।
প্রশ্ন : লেজারের কি কোনো ভূমিকা আছে রেটিনার ক্ষেত্রে?
উত্তর : সারা বিশ্বে এটি একটি ভালো চিকিৎসা। একজন রোগী যখন রেটিনার সমস্যা নিয়ে আসেন, আমরা চেষ্টা করি যতটুকু সমস্যা হয়েছে একে ভালো করা। সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিই আর যেন এটি না বাড়ে। কারণ, আমরা জানি যে ক্যাটারেক্টের কারণে চোখে ছানি পড়ার কারণে যে অন্ধত্ব আমাদের হয়, সেই অন্ধত্ব পূরণ হয়। এটা অস্ত্রোপচার করলে ভালো হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গেই রোগী শতভাগ ভালো দেখে। তবে রেটিনার কারণে যদি মানুষ অন্ধ হয়ে যায়, তাহলে সেই অন্ধত্ব হলো স্থায়ী অন্ধ। এই অন্ধত্ব আর দূর করা সম্ভব হয় না। দূর করা গেলেও হয়তো ১০ ভাগ, ২০ ভাগ করা যায়। তাই আগেভাগেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।