পাইলস কী ও কেন এটি হয়?

পাইলস একটি জটিল সমস্যা। এর চিকিৎসায় অনেক সময় অস্ত্রোপচার করতে হয়। এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৫৩৯তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. আহম্মেদ উজ জামান। বর্তমানে তিনি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন।
প্রশ্ন : পাইলস কী?
উত্তর : পাইলস মূলত মলদ্বারের পাশের রক্তনালিগুলো যেগুলো থাকে, তার স্ফীতি। প্রত্যেক মানুষের রক্তনালিগুলো মলদ্বারের কাছে এসে শেষ হয়। এখান থেকে ভেইনগুলোর উৎপত্তি হয়। রক্তটা পুনরায় মানুষের শরীরের দিকে, অর্থাৎ হার্টের দিকে ফেরত আসে। তবে এ জায়গায় যেহেতু কিছুক্ষণ সময়ের জন্য রক্তটা থেমে থাকে, সেই অবস্থায় দেখা যায় মলদ্বারে রক্তনালিগুলোর স্ফীতি, পাশাপাশি দেখা যায়, পাতলা যে আবরণ থাকে মিউকোসা, সেটারও স্ফীতি দেখা যায়। এটাই মূলত আমরা জানি।
প্রশ্ন : কারা সাধারণত এই পাইলসে ভুগে থাকেন?
উত্তর : কোনো ব্যক্তি বিশেষ আলাদা করে নয়, সবারই মলদ্বারের ভেতরে এই রক্তনালি থাকার কারণে পাইলস অল্প হলেও থাকে। জীবনের কোনো না কোনো সময়ে এগুলোর স্ফীতি ঘটে। কারো ক্ষেত্রে হয়তো সাময়িক স্ফীতি ঘটে, কারো ক্ষেত্রে স্ফীতি এত বেশি হয় যে সেটি দীর্ঘস্থায়ী হয়ে যায়। এগুলোর আকার অনেক বড় হয়ে যায়।
প্রশ্ন : কোন কারণে সমস্যাটি হয়?
উত্তর : নির্দিষ্ট করে কোনো কারণ বলা সম্ভব নয় বা এখন পর্যন্ত সেটি পাওয়া যায়নি। তবে দেখা যায় যে, পরিবারের অনেকেই এই রোগে ভোগেন। সেই ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে, একই বংশের অনেকের এ সমস্যা হয়। পাশাপাশি দেখা যায় যে যারা দীর্ঘক্ষণ বসে আছে, যাদের কাজটা বসে থাকা, তাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় এই সমস্যা বেশি হয়। পাশাপাশি যাদের স্বাস্থ্য ভালো, তাদের ক্ষেত্রে এমন হয়। এর পাশাপাশি যাদের নিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্য হয়, পায়খানাটা নরম হয় না, তাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা হয়। কিছু কিছু রোগের ক্ষেত্রেও এটা দেখা দেয়। যেমন—লিভার সিরোসিস বা অন্য জায়গায় ক্যানসার থাকলে তখন দেখা দেয়। এর বাইরে মানুষের কিছু কিছু শারীরিক পরিবর্তন, অর্থাৎ যখন গর্ভবতী হয়, তখন এ ধরনের পাইলস দেখা দেয়। এবং দীর্ঘস্থায়ীভাবে মানুষ যখন শুয়ে থাকে, তার পায়খানা যথাযথভাবে বের হয় না বা শক্ত হয়ে যায়, তখন চাপ দেওয়ার কারণে পাইলসগুলো বড় হয়ে যায়।