কোমর ব্যথা হলেই কি বেল্ট ব্যবহার করবেন?
কোমরের ব্যথা হলে অনেকে কোমরের বেল্ট ব্যবহার করেন। এটা কি ঠিক? এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৫৪৭তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. শামিম আহম্মেদ। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিউমাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : ট্রাকশন বিষয়টি এ ক্ষেত্রে কী?
উত্তর : প্রথম কথা হলো, ট্রাকশন বিষয়টি জটিল। আগে হয়তো বলত। এখন এগুলো কোথাও বলে না। আপনি দেখবেন, অনেক সময় রোগীর কোমর ব্যথা হলে বেল্ট ব্যবহার করে। এটাও ঠিক নয়। যেসব রোগী বেল্ট ব্যবহার করে, তাদের কোমর অথবা ঘাড়ে পেশি অ্যাট্রোপি হয়ে যায়। কারণ, বেল্ট দিয়ে চেপে রাখা হয়। আমরা বেল্ট পরতে বলি। ধরেন, নড়াচড়া করার সময় তার ব্যথা বেড়ে যায়। অথবা কড কমপ্রেশন হওয়ার আশঙ্কা থাকে, সে ক্ষেত্রে আসলে বেল্ট ব্যবহার করার কথা রয়েছে। নয়তো সাধারণ লো ব্যাকপেইন নিয়ে আসে, তাদের বেল্ট ব্যবহার করা বা ট্রাকশন দেওয়ার নির্দেশ নেই।
প্রশ্ন : কোমর ব্যথা থেকে সুরক্ষা পেতে জীবনযাত্রায় কী পরিবর্তন আনতে হবে?
উত্তর : আসলে যাঁদের কোমর ব্যথা হয়, তাদের সব সময় উচিত কোমর সোজা করে রাখা। কোমর সোজা করে বসা। কুঁজো বা বাঁকা হয়ে যাঁরাই এ কাজটি করবেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এটা কিন্তু ক্রনিক লো ব্যাকপেইনে যাবে। এটা থেকে বিরত থাকতে যতটুকু সম্ভব, কোমরকে সোজা করে, মেরুদণ্ডকে বাঁকা না করে বসতে হবে। অনেক সময় গ্রামে দেখবেন, নারীরা কুঁজো হয়ে রান্নাবান্না করেন, থালাবাসন ধোন, ঘর ঝাড়ু দেন। যদি এটা করতে হয়, তাহলে ধরেন ঝাড়ুর হাতল একটু লম্বা করে নেওয়া, থালাবাসন ধুতে গেলে একটু উঁচু জায়গায় করা। রান্নাবান্নার সময় দাঁড়িয়ে করা। এ কাজগুলোই করতে হবে।
প্রশ্ন : অনেক রোগীর ক্ষেত্রে দেখা যায়, ব্যথার ওষুধ খাওয়া বারণ। এ ধরনের রোগীদের ক্ষেত্রে আপনারা কী করে থাকেন?
উত্তর : যাঁদের কিডনিতে কোনো সমস্যা থাকে, তাঁদের সাধারণত এ ধরনের ওষুধ খাওয়া বারণ হয়। ওনাদের ক্ষেত্রে আমরা ব্যথার ওষুধ না খাওয়ার জন্য বলি। তবে বিকল্প কিছু ওষুধ আছে, সেগুলো ব্যবহার করতে পারি।
প্রশ্ন : কোমর ব্যথা প্রতিরোধে কী করবেন?
উত্তর : কোমর ব্যথা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ক্রনিক লো ব্যাকপেইন যাঁদের থাকে, তাঁদের ক্ষেত্রে জীবনযাপনের ধরন পরিবর্তন করতে হবে। পাশাপাশি মানসিক কোনো কারণ আছে কি না, এটা বের করতে হবে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে এ বিষয়টি অবশ্যই প্রাধান্য দিতে হবে। রোগীকে অন্ততপক্ষে সপ্তাহে তিন দিন ব্যায়াম করতে হবে। ক্রনিক লো ব্যাকপেইন থেকে আসলে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।