কান পাকা রোগের লক্ষণ কী?

কান পাকা রোগে অনেকেই ভুগে থাকেন। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এ রোগ থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৫৫০তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. মেজবাহ উদ্দিন আহম্মেদ। বর্তমানে তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : কান পাকা রোগ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : আমাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ কান। কানের তিনটি অংশ আছে। বহিঃকর্ণ, মধ্যকর্ণ ও অন্তঃকর্ণ। মধ্য কর্ণের যেই অংশ এতে যখন প্রদাহ হয়, সংক্রমণ হয়, সেখান থেকে সাধারণত পুঁজ আসে এবং পানি আসে। একে সাধারণ ভাষায় আমরা কান পাকা রোগ বলি।
প্রশ্ন : কান পাকা রোগে পুঁজ বা পানি আসা ছাড়া আর কী কী লক্ষণ থাকে?
উত্তর : পুঁজ ও পানি আসা একটি লক্ষণ। তা ছাড়া আরো উপসর্গ আছে। যেমন কান ব্যথা হতে পারে, কানে কম শুনবে। এটি একটি বড় সমস্যা। এখানে কান পাকার দুটো ভাগ রয়েছে। সেভ ভ্যারাইটি ও আনসেভ ভ্যারাইটি। আনসেভ ভ্যারাইটিতে ঘন ঘন কান দিয়ে পুঁজ আসবে, মাঝে মধ্যে ব্যথা হবে, কানে কম শুনবে। দেখা যায় বাচ্চা বয়সের যারা রোগী, তাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে এই কারণে যে, যেহেতু কানে কম শোনে তাদের শিক্ষার পদ্ধতিটা বাধাগ্রস্ত হয়।
সেভ ভ্যারাইটিতে কানের পর্দার সামান্য ছিদ্র থাকে, সেটা দিয়ে মাঝে মাঝে মধ্যকর্ণের যে মিউকাস মেমব্রেন থাকে সেখানে প্রদাহ হয়। প্রদাহের কারণে পুঁজ ও পানি আসতে পারে। সেটা সাধারণত চিকিৎসা করলে ভালো হয়ে যায়। তবে যেহেতু কানের পর্দায় একটি ছিদ্র থাকে, সে কারণে এটি বার বার হতে থাকে।
আর যেটি বললাম যে আনসেভ ভ্যারাইটি, সেটা একটু মারাত্মক। একে আমরা এটিকনট্রাল ভ্যারাইটি বলি। এই ক্ষেত্রে সবসময় দুর্গন্ধযুক্ত পানি আসতে পারে। এখান থেকে পরে জটিলতা দেখা দিতে পারে। মুখের একটি নার্ভ আছে, ফেসিয়াল নার্ভ—সেটি বাঁকা হয়ে যেতে পারে। এর কারণে মুখ বাঁকা হয়ে যেতে পারে। আরেকটি মারাত্মক বিষয় যেটা ইন্টারক্রেনিয়াল কমপ্লিকেশন। এর কারণে ম্যানিনজাইটিস হতে পারে। মস্তিষ্কের যে ঝিল্লি আছে, সেটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এগুলোকে বলা হয়, সার্জিক্যাল ইমার্জেন্সি। এর কারণে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। সেভ ও আনসেভের জন্য সময়মতো চিকিৎসা করতে হবে।