গাউট রোগের চিকিৎসায় করণীয়
গাউট রোগে গাঁট আক্রান্ত হয়। সাধারণত এ রোগে রোগীরা বৃদ্ধাঙ্গুলের গাঁটে তীব্র ব্যথা নিয়ে আসে। গাউটের চিকিৎসায় কিছু বিষয় মেনে চলতে হয়।
এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৫৬৫তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. শামীম আহম্মেদ। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিউমাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : গাউট রোগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসার কী কী সুযোগ আছে?
উত্তর : গাউট হলেই যে চিকিৎসা দিতে হবে, বিষয়টি সে রকম নয়। রোগীর ব্যথা হয়েছে, আমরা অনেক সময় ব্যথানাশক ওষুধ, অনেক সময় প্রতিরোধমূলক কিছু বিষয় আছে, কোলকেসিন জাতীয় ওষুধ আছে, হয়তো ব্যথার ওষুধ বা কোলকেসিন জাতীয় ওষুধ দিলে রোগীর ব্যথা কমতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় একবার আক্রান্ত হওয়ার পর রোগী আর কখনো আক্রান্ত হন না। সে ক্ষেত্রে আমরা সুনির্দিষ্ট চিকিৎসাও দিই না। রোগীকে বলি, আপনার যখন ব্যথা হবে, আবার যদি ব্যথা হয়, বছরে যদি দুবারের বেশি আক্রান্ত হয়, সে ক্ষেত্রে অন্য চিকিৎসার দরকার হয়। নয়তো চিকিৎসার দরকার হয় না।
প্রশ্ন : কোন পর্যায়ে গেলে গাউটে সুনির্দিষ্ট চিকিৎসার প্রয়োজন আছে? বা কত দিন পর ফলোআপের প্রয়োজন আছে?
উত্তর : যাদের বছরে দুটোর বেশি অ্যাটাক হয়েছে অথবা গাউট আর্থ্রাইটিস হয়েছে, পাশাপাশি কিডনির সমস্যা আছে। অথবা রোগীর গাউট আছে, হতে পারে চামড়ার নিচে রোগীর ক্রিস্টাল জমছে। এসব ক্ষেত্রেই রোগীকে ওষুধ দিতে হবে। কারণ দেখা যেতে পারে, একবার অ্যাটাক হয়ে আর অ্যাটাক নাও হতে পারে, সে ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা দেওয়ার দরকার নেই।
প্রশ্ন : গাউট থেকে দূরে থাকার জন্য একজন রোগী কী কী করতে পারে?
উত্তর : আসলে এটি তো একটি মেটাবলিক ডিজঅর্ডার। সে ইচ্ছা করলেই দূরে থাকতে পারে না। যদি তার কোনো বদঅভ্যাস থাকে—মদ্যপান, বেশি সি-ফুড খাওয়া ইত্যাদি থেকে দূরে থাকবে। আর অনেক সময় দেখা যায়, রোগীর হাইপার ইউরেসেমিয়া হয়েছে, সে ক্ষেত্রে আমরা তাকে চিকিৎসা দেবো। নয়তো হবে না। তবে যাদের ডায়াবেটিস বেশি থাকে, উচ্চ রক্তচাপ বেশি থাকে, ওজন বেশি থাকে, সে ক্ষেত্রে তাকে ওজন কমাতে হবে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাহলে গাউট থেকে দূরে থাকা সম্ভব।
প্রশ্ন : গাউটের পরীক্ষা-নিরীক্ষা সব কি দেশেই সম্ভব? এগুলো কি সবই সাধ্যের মধ্যে?
উত্তর : গাউট রোগটি নির্ণয়ের জন্য খুব বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা লাগে না। রোগীর ইতিহাস নেই। এর পর যেখানে ব্যথা হচ্ছে, সেখান থেকে নির্দিষ্ট রস নিয়ে মাইক্রোস্কোপে পরীক্ষা করি। এতে খরচ খুব বেশি নয়। তবে অযথা যাতে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করা হয়, সে ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে।