সিওপিডি কী, কেন হয়?

সিওপিডি বা ক্রনিক অবসট্রিকটিভ পালমোনারি ডিজিজ শ্বাসতন্ত্রের একটি জটিল রোগ। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৫৮০তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. খান মোহাম্মদ সাইদুজ্জামান। বর্তমানে তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালের রেসপেরেটরি মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : সিওপিডি বা ক্রনিক অবসট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ খুব কঠিন একটি নাম। একটু জানতে চাইব যে সিওপিডিটা কী?
উত্তর : ক্রনিক মানে হলো দীর্ঘস্থায়ী। অবসট্রাক্ট মানে বাধাগ্রস্ত। দীর্ঘস্থায়ী বাধার সঙ্গে যে আমরা শ্বাস-প্রশ্বাস নিই, সেখানে শ্বাস-প্রশ্বাস বাধাগ্রস্ত হয়। একে আমরা বলছি ক্রনিক অবসট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ। এখানে ব্রঙ্কাইটিস হয়, প্রদাহ হয় দীর্ঘমেয়াদি। এটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ।
প্রশ্ন : সিওপিডি সম্পর্কে সচেতনতা কীভাবে বাড়াচ্ছেন?
উত্তর : শ্বাস-প্রশ্বাসই শক্তি। শরীরে যদি শক্তি পেতে হয়, চলাফেরা করতে হয়, তাহলে শ্বাস নিতে হবে। সিওপিডির প্রধান কারণ ধূমপান বা বায়ুদূষণ। সুতরাং আমরা যদি এই ধূমপান থেকে বিরত থাকি অথবা যদি পরিবেশ ভালো রাখতে পারি, আমাদের চলাফেরা কাজকর্মে, ঘরে-বাইরে, তাহলে এর মধ্যে সিওপিডি হবে না। আমরা একে প্রতিরোধ করতে পারব। এ জন্য আমাদের নিজস্ব সচেতনতা গড়তে হবে।
প্রশ্ন : ধূমপান যে করছে, সে তো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেই। তবে যে আশপাশে থাকছে, সেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে?
উত্তর : আমাদের দেশসহ সারা বিশ্বেই এটি কিন্তু মরণঘাতী ব্যাধি। এর মধ্যে এটা কিন্তু এখন চতুর্থ স্থানে আছে। হার্টের রোগ এগুলো কিন্তু কমে আসছে। কিন্তু সিওপিডির ঝুঁকি ২০৩০ সালের মধ্যে তৃতীয় স্থানে চলে যাবে। ১০০ জনের মৃত্যুর মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হচ্ছে সিওপিডিতে। সুতরাং আমরা যদি এখনই সচেতন না হই, তাহলে সামনে এটা একটা খারাপ দিকে চলে যাবে। এটিও ক্যানসারের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।
প্রশ্ন : সিওপিডির কোনো লক্ষণ আছে কি না?
উত্তর : এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা। আস্তে আস্তে শ্বাসনালির প্রদাহ হচ্ছে। শ্বাসনালি সরু হয়ে যাচ্ছে। শ্বাসতন্ত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। যারা দীর্ঘমেয়াদি ধূমপান করে, নিয়মিত ২০টির বেশি করে, তারা এ সমস্যায় ভোগে। তবে এটি এত আস্তে আস্তে হয়, যে বুঝতেই পারে না। যখন একটি খারাপ পর্যায়ে চলে যায়, তখন চিকিৎসকের কাছে আসে। অনেক দেরি হয়ে যায়। যদি আগে থেকে সতর্ক থাকে বা জানা থাকে, ধূমপান থেকে যদি বিরত থাকে, তাহলে হবে না। এ জন্য যখন চিকিৎসকের কাছে আসে, তখন কিন্তু তেমন কিছু করার থাকে না। ভবিষ্যতে যেন খারাপের দিকে না যায়, সেটি আমরা ঠেকাতে পারি।
প্রশ্ন : আপনাদের কাছে যখন আসে, কোন দলের লোকজন বেশি আসে? শুধু যারা ধূমপান করছে তারা, নাকি অন্যরাও?
উত্তর : আমাদের দেশে যেসব নারী লাকড়ির চুলা ব্যবহার করেন, তাঁরা এতে ভোগেন। আমাদের কাছে আসে না, আমরা বুঝতে পারি না। তাঁরা শেষ পর্যন্ত যখন আসেন, তখন আর করার কিছু থাকে না। নারীদেরও এ সমস্যা হয়, আমরা প্রচুর পাচ্ছি।
এর পর ইটের ভাটা বা বিভিন্ন কলকারখানার যে দূষিত বায়ু রয়েছে, সেটা একটি বড় বিষয়।