দুগ্ধজাতীয় খাবার খেলে কি কোলেস্টেরল বাড়ে? যা বলছে গবেষণা
কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বি। এটি বেড়ে গেলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়। হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকের আশঙ্কাও বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। কোলেস্টেরল থাকলে অনেক কিছুই খাওয়া যায় না। কোলেস্টেরলে আক্রান্ত হলে অনেকেই দুধ ও দগ্ধজাত খাবার এড়িয়ে চলেন। কিন্তু সেটা কি ঠিক? যা বলছেন পুষ্টিবিদরা।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেকেই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেন দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, দুধ বা দুগ্ধজাতীয় খাবার খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ধারণা একেবারেই ভ্রান্ত। কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধিতে দুধের কোনো ভূমিকা নেই বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম নিউজ ১৮।
কোলেস্টেরল কেবল চর্বি নয়। এটি এক ধরনের লিপিড স্তর। যেখান ফ্যাট এবং প্রোটিন দুই-ই থাকে। আমাদের শরীরে সাধারণত দু’ধরনের কোলেস্টেরল থাকে। একটি হলো লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন বা এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল। আরেকটি হল হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন বা এইচডিএল বা ভাল কোলেস্টেরল। এটি খারাপ কোলেস্টেরল শোষণ করে এবং শরীর সুস্থ রাখে, স্ট্রোক, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। তাই সবসময় মাথায় রাখতে হবে, শরীরে যেন এইচডিএল-এর সঠিক মাত্রা বজায় থাকে।
কোলেস্টেরলে আক্রান্ত হলে, মানুষ খাবার বিষয়ে নানা ভুল সিদ্ধান্ত করে ফেলেন। যেমন প্রথমেই বাদ দিয়ে ফেলেন দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার ও মাংস। এখানেই বড় ভুল। ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ওবেসিটি’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, দুধ পান করলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে না বরং দুধ শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। কাজেই কোলেস্টেরলের রোগীরা নির্ভয়ে দুধ খান।
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা নিয়মিত দুধ খান, তাঁদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ১৪ শতাংশ কম। পরিমিত পরিমাণে দুধ খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে না, ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকে। কাজেই, কোলেস্টেরলের রোগীদের দুধ ও দুগ্ধজাত কোনো-ও খাবার বাদ দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
কোলেস্টেরলে আক্রান্ত হলে দুধের পাশাপাশি মাংস, ডিম খাওয়াও ছেড়ে দেন অনেকে। কিন্তু এই খাবারগুলোতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ক্যালশিয়াম, প্রোটিনের মতো বহু উপকারী উপাদান।
চিকিৎসকদের মতে, পরিমিত পরিমাণে সব-ই খান। সপ্তাহে ৪-৬টি ডিম, দুইবার মুরগির মাংস, এক গ্লাস দুধ শরীরের উপকারই করে।