নতুন বছরে শরীর ঠিক রাখতে কোন কোন অভ্যাস রপ্ত করবেন?
আজ বড়দিন। আর ক’টা দিন পরেই নতুন বছর। বিগত সময়ের যা কিছু প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, হতাশা, জীবনের টানাপড়েনের হিসেব চুকিয়ে নতুন বছরে নতুন করে পথ চলার শুরু হবে। ২০২৫ সালে জীবনেও আসুক নতুনত্বের ছোঁয়া। নববর্ষের উদযাপন হবে অবশ্যই, সেই সঙ্গে নিজেকেও ফিট রাখার চ্যালেঞ্জ নিন। অসুখ-বিসুখ দূরে রেখে শরীর ও মন সুস্থ রাখতেই হবে। কেবল বছরের প্রথম দিন নয়, সারা বছর নিজেকে ভাল রাখতে সবাইকে কিছু অভ্যাস রপ্ত করতেই হবে।
শরীরচর্চা
রোগবালাই থেকে দূরে থাকতে হলে শরীরচর্চা করতেই হবে। নতুন বছর থেকেই অভ্যাস শুরু করুন। শরীরচর্চা মানেই যে জিমে গিয়ে ঘাম ঝরাতে হবে তা নয়। যদি সময় থাকে তো ভাল, না হলে বাড়িতেই প্রতিদিন অন্তত ২০ মিনিট সময় রাখুন শরীর চর্চার জন্য। সকালে উঠে হাঁটা, দৌড়নো অথবা সাইকেল চালানো খুবই ভাল। স্ট্রেচিং, কিছু ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম নিয়মিত করুন। ফুসফুসের জোর বাড়াতে নিয়মিত প্রাণায়াম, ডিপ ব্রিদিং, কপালভাতি অভ্যাস করতে পারেন। কার্ডিয়ো বা ওজন তুলে ব্যায়াম করতে হলে প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিতে হবে।
মেপে খান
পরিমিত পুষ্টিকর খাবার খান। ওজন বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো সময় মতো না খাওয়া এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া। তাই স্লিম হওয়ার ডায়েটে শুধু ক্যালোরিহীন খাবার রাখলেই হবে না, সময় ভাগ করেও খেতে হবে। খাবারে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ফাইবার ও খনিজ উপাদান সম পরিমাণে থাকতে হবে। সকালে বিপাকপ্রক্রিয়া সবচেয়ে ভাল হয়। যত বেলা গড়ায়, ততই এর হার কমতে থাকে। তাই সব সময়েই সকালের নাশতা ভারী করতে হবে। দুপুরের খাওয়া পরিমিত ও রাতের খাওয়া একদমই হালকা করা দরকার। বাইরের দেশে অনেকেই সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নেন। আর রাত ১০টার পরেও ভারী খাবার খাওয়া হয় আমাদের। আর তাতেই যেমন ওজন বাড়ে, তেমনই গ্যাস-অ্যাসিডিটির সমস্যাও বৃদ্ধি পায়।
পানি কম খেলেই বিপদ
শরীর আর্দ্র রাখত পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে। পানি কম খেলে একদিকে যেমন হজম ঠিকমতো হবে না, তেমনই পেশির ক্লান্তি বাড়বে। অল্প হেঁটেই ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। দিনে অন্তত তিন লিটার পানি খেতেই হবে। সম্ভব হলে প্রতিদিন ডিটক্স পানীয় খান। এতে শরীরের টক্সিন বা দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যাবে। সকালে খালি পেটে মৌরি-মেথি ভেজানো পানি অথবা বিভিন্ন রকম ফল টুকরো করে তা সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি খেতে পারেন। এই পানীয় প্রতিদিন খেলে ত্বকের জেল্লাও বাড়বে।
টানা ঘুম
রাতে অন্ততপক্ষে টানা ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো জরুরি। সারাদিন কাজের পর ঘুম না আসতেই পারে। তবে কাজ থেকে ফেরার পর বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে আনার অভ্যাস করতে হবে। শোয়ার আগে নিয়মিত মেডিটেশন বা ধ্যান করলে ঘুম ভাল হবে।
দুশ্চিন্তা একেবারে নয়
মনের চাপ কমাতেই হবে। দুশ্চিন্তা মন, মস্তিষ্ক কুরে কুরে খায়। তখন মনের চাপও বাড়তে থাকে। মনোবিদরা বলছেন, চিন্তা করুন। কিন্তু দুশ্চিন্তা নয়। দুশ্চিন্তার সময় এমন কিছু হরমোনের নিঃসরণ হয়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ও কোলেস্টেরলের মতো অসুখ মাথাচাড়া দিতে পারে।
লক্ষ্য স্থির করুন
নতুন বছরে কী কী করতে চান, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, সঞ্চয়ের ভাবনা কেমন— সবটাই লিখে রাখুন। ছোট ছোট ভাবনাও যদি লিখে রাখার অভ্যাস করতে পারেন, তাহলে পরে গিয়ে সমস্যা হবে না। নতুন বছরে আরও বেশি করে সঞ্চয়ের পরিকল্পনা করুন। কোন খাতে কত খরচ করবেন আর কতটা সঞ্চয় করবেন, তার তালিকা আগে থেকেই করে রাখতে হবে।