কোলবালিশে ঘুমানোর অভ্যাস কী ভাল?
সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে রাতে একটু আরামে বিশ্রাম নিতে চায় সবাই। তবে ঘুমের সময় শরীরকে স্বস্তি দেওয়ার জন্য আরামদায়ক সেটাপ প্রয়োজন। আর রাতে আরামে ঘুমানোর জন্য অনেকেই কোলবালিশ রাখেন। গবেষণা বলছে, এই অভ্যাসটি একেবারে খারাপ নয়। বরং কোলবালিশ আরাম দেওয়ার পাশাপাশি তাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমানো মানুষটির অজান্তে কিছু বাড়তি উপকারও করছে। যদিও সেই উপকার সত্যিই হচ্ছে কি না, তা নির্ভর করবে কীভাবে কোলবালিশকে জড়িয়ে ধরা হচ্ছে তার উপর!
গবেষণালব্ধ তথ্য বলছে, শিরদাঁড়ার স্বাস্থ্য নির্ভর করে আপনি কিভাবে ঘুমিয়েছেন। ঘুমনোর সময় দীর্ঘক্ষণ শিরদাঁড়া বিশ্রামে থাকে। সেই বিশ্রাম কীভাবে হচ্ছে, তা গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণাকারীরা বলছেন, পাশ ফিরে ঘুমনোর সময় যে পা’টি উপরের দিকে থাকছে, সেটি যদি নীচের পায়ের থেকে কিছুটা উঁচু করে রাখা যায়, তবে তাতে শিরদাঁড়া ভাল থাকে। গবেষণা সংক্রান্ত ওই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে ‘দ্য স্পাইন জার্নাল’ এবং ‘দ্য জার্নাল অব ভাস্কুলার সার্জারি’তে।
ভারতের ইন্টারনাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ আর আর দত্ত আনন্দবাজার অনলাইনকে বলছেন, ‘‘বেশির ভাগ মানুষই ঘুমানোর সময় কোনো এক পাশে ফিরে ঘুমান। কিন্তু ঘুমানোর সময় যদি দু’টি পা এবং পায়ের হাঁটু পরষ্পরের সঙ্গে ঠেকে থাকে তবে, দীর্ঘদিনের ওই অভ্যাসে শিরদাঁড়ার নীচের অংশ বা কোমরের নীচের হাড় বেঁকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু দু’টি পায়ের মাঝখানে যদি কোলবালিশ থাকে তবে হাঁটু দু’টি পরষ্পরের সঙ্গে ঠেকে থাকে না। শিরদাঁড়া বা কোমরের নীচের হাড় অথবা পেশির উপর অনাবশ্যক চাপও পড়ে না।’’
দেশটির চিকিৎসক দীপক কুমার মহারাণাও বলেছেন, পাশ ফিরে ঘুমানোর সময় হাঁটুতে হাঁটু ঠেকে গেলে পেশির উপর যে চাপ পড়ে তা না পরলে, সায়াটিকা, আর্থ্রারাইটিসের মতো সমস্যাও দূরে থাকে।
তিনি বলছেন, ‘‘ওইভাবে পায়ের মাঝখানে বালিশ দিয়ে শোয়ার উপকার মিলবে পরবর্তীকালে। একগুঁয়ে ব্যথার রোগ এবং পেশি দুর্বলতার ঝুঁকিও কমবে।’’
অর্থাৎ কোলবালিশ নিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস খারাপ নয় মোটেই। বরং দেখা যাচ্ছে তা উপকারীই। তবে কোলবালিশ কেবল পাশে নিয়ে ঘুমালে লাভ হবে না। কোল বালিশে পা রেখে ঘুমালে তবেই উপকার পাওয়া যাবে।