উড়োজাহাজে চড়ার ১০ আদব-কায়দা
যদি না আপনি বিমানের প্রথম শ্রেণিতে চড়ার মতো সৌভাগ্যবান না হোন, তবে বিমান ভ্রমণ আপনার জন্য বিরক্তিকর এবং পীড়াদায়ক অভিজ্ঞতা হতে পারে। ইকোনমি ক্লাসের যাত্রী হলে কিছু আদবকেতা মেনে চললে আপনার যাত্রা ঝামেলামুক্ত ও আনন্দদায়ক হয়ে উঠতে পারে।
চলুন, স্টোরি সিটি হেরাল্ডের সৌজন্যে জেনে নিই বিমানে চড়ার ১০টি আদবকায়দা। যেগুলো অনুসরণ করলে আপনার ভ্রমণ হবে ঝঞ্ঝাটমুক্ত।
১. বিমানের শৌচাগারের ব্যবহার
বিমানের শৌচাগারে বেশি সময় না নেওয়াই ভালো। এ ছাড়া বাসার শৌচাগারের মতো নোংরা অবস্থায় রেখে আসা উচিত নয়। আপনার স্বাস্থ্যের কথা ভেবে বিমানের ময়লা শৌচাগারে যেকোনো ধরনের যৌনাচার থেকে বিরত থাকা উচিত।
২. তীব্র গন্ধযুক্ত কিছু নিয়ে বিমানে না ওঠা
মনে রাখবেন, তীব্র গন্ধযুক্ত কোনো আতর বা পারফিউম মেখে বিমান ভ্রমণ না করাই ভালো। এতে আপনার অন্য যাত্রীরা অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারে। এ ছাড়া বিমানে এমন খাবার নিয়ে ওঠা উচিত না, যা তীব্র গন্ধ ছড়ায়।
৩. নিজের সন্তানদের দেখে রাখুন
বিমানে ওঠার আগে নানা ধরনের নিয়মকানুন মানতে গিয়ে হয়তো আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। কিন্তু সন্তানকে দেখে রাখা আপনার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তেমনি অন্য বাচ্চারা দুষ্টুমি করলে আপনার উচিত তাদের বাবা-মাকে বিষয়টা জানানো। বিমানে অন্য কারো বাচ্চাকে ধমক দেওয়ার সঠিক জায়গা নয়।
৪. ভেবে রাখুন বিমানে কীভাবে ঘুমাবেন
বিমানে উঠে ঘুমানোর জন্য আপনি একটা নেক পিলো (ঘুমানোর জন্য বিশেষ এক বালিশ, যা ঘাড়ে জড়িয়ে নেওয়া যায়) চাইতেই পারেন। নেক পিলোর বিশেষ সুবিধা হলো ঘুমের মধ্যে আপনার মাথা অন্য কারো ঘাড়ে চলে যাবে না। মনে রাখবেন যদি আপনি বিমানের মাঝখানের আসন পান তাহলে ট্রে টেবিলে মাথা রেখে ঘুমানো উচিত নয়। এতে করে আপনার দুপাশের যাত্রীর চলাচলে বিঘ্ন ঘটতে পারে।
৫. মাঝখানের আসনের যাত্রীর আর্মরেস্টের অধিকার বেশি
বিমানের আসনের সঙ্গে লাগানো হাত রাখার জায়গাকে আর্মরেস্ট বলা হয়। বিমানের জানালার পাশের আসন বা করিডোরের পাশের আসনের মতো হাত-পা ছড়ানোর সুযোগ মাঝখানের আসনের যাত্রীর কম। তাই তাকে আর্মরেস্টের জায়গা ছেড়ে দেওয়ার পাশাপাশি তার সঙ্গে বেশি কথা না বলে তাঁকে মানসিক জায়গাও দেওয়া উচিত।
৬. সঠিক সময়ে আসন থেকে উঠুন
আপনি বাথরুমে যাওয়ার জন্য আসন ছাড়ার আগে আরেকবার ভেবে দেখুন, যদি দেখেন বিমানের আসনের মধ্যবর্তী পথে বিমানবালার হাতে খাবারের ট্রে, তাহলে আপনার আসনে বসে থাকা উচিত। বিমানবালার হাত থেকে খাবার সংগ্রহ না করে আসন ছাড়া ঠিক নয়।
৭. মালপত্র ঠিক জায়গায় রাখুন
বিমানে মাথার ওপর মালপত্র রাখাকে ‘বিন’ বলা হয়। আর বিমানের প্রতিটি ব্যাগের জন্যই মূল্য দিতে হয়। তাই প্রতিটি ‘বিন’ই মূল্যবান। আনুভূমিকভাবে নিজের ব্যাগ বিনে রেখে অন্যের জায়গা দখল করা উচিত নয়। ব্যাগগুলো উল্লম্বভাবে রাখুন। যদি আপনার কাছে দুটি ব্যাগ থাকে, তাহলে একটি ব্যাগ আপনার পায়ের কাছে রাখুন।
৮. বিমানে হেলান দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন
বিমানে আপনি চাইলে আধশোয়া হয়ে ঘুমাতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে আসনটিকে আধশোয়া করে শোয়ার উপযুক্ত করে নিতে হবে। আর সেটি করার সময় আপনার পেছনের যাত্রীর দিকে খেয়ার রাখুন। আপনার আসনটি আধশোয়ার উপযুক্ত করতে গিয়ে সেটি যেন আবার তার পানীয়, ল্যাপটপ বা পায়ের সঙ্গে না লেগে যায়। তাই আসনটি বাঁকা করার আগে আপনার পেছনের যাত্রীটিকেও একবার সতর্ক করুন।
৯. বিমানে মদ্যপানের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন
বিমানে সময় কাটানোর জন্য অনেক যাত্রীই মদ্যপান করে থাকেন। তবে মদ্যপানের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে নিয়ন্ত্রণ হারানো থেকে বিরত থাকুন।
১০. বিমানবালাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করুন
বিমানবালাদের অন্যতম কাজ হচ্ছে বিমানের সব নিয়মকানুন আপনাকে বুঝিয়ে দেওয়া। সিট বেল্ট বাঁধা, খাবার দেওয়া, বিমান অবতরণের আগে আরেকবার সিট বেল্ট বেঁধে নেওয়ার পরামর্শ ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিমানবালা যাত্রীদের সহযোগিতা করেন। কাজেই তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণের ফলে তারা বিরক্ত হতে পারেন এবং এতে করে বিমান উড্ডয়নের ক্ষেত্রে দেরি হয়ে যেতে পারে।