অফিসে ব্যক্তিগত আলোচনা করবেন না
অফিসে কাজের ফাঁকে ফাঁকে সহকর্মীদের সঙ্গে একটু হাসিঠাট্টা চলবে না, তা কি হয়? বরং এর ফলে কাজের মধ্যে একঘেয়ামি বা ক্লান্তিবোধ দূর হয়। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে কাজ জমা দেওয়া, মিটিং, বসের তাড়া সবকিছু মিলিয়ে অফিসে থাকে চূড়ান্ত ব্যস্ততা। এত সবের মাঝে কিছুটা স্বস্তি এনে দেয় সহকর্মীদের সঙ্গে সামান্য আড্ডা। আর এ আড্ডার মেজাজে সবসময় কি আর অফিস বা কাজ সংক্রান্ত কথাবার্তা বলতে ভালো লাগে! তাই সময় এসে পড়ে ব্যক্তিগত জীবনের টুকিটাকি বিষয়। কিন্তু অফিসের ফর্মাল আবহে সাংসারিক বা ব্যক্তিগত জীবনের কথা কতটা শেয়ার করা যেতে পারে, তা অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না। দ্য ব্যালেন্স ক্যারিয়ার দিচ্ছে তেমন কিছু পরামর্শ।
১। পারিবারিক সমস্যা, স্ত্রী বা স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া, শ্বশুর বা শাশুড়ির সঙ্গে মনোমালিন্য এসব বিষয় কখনোই সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় আনবেন না। এতে আপনার ওপর সহকর্মীদের বিরূপ মনোভাব তৈরি হতে পারে।
২। অফিসে বসে কখনোই জোরে জোরে ফোনে কথা বলবেন না। কিংবা রাগের মাথায় উত্তেজিত হয়ে ফোনে চিৎকার করে ঝগড়া করবেন না। তাতে অন্যের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবেন আপনি।
৩। মনে রাখবেন, আপনার ব্যক্তিগত বিষয় অনেকের কাছে জানাজানি হলে তারা আপনার সম্বন্ধে নেতিবাচক ধারণা করতে পারে। তাই সবার কাছে নিজেকে মেলে ধরা থেকে বিরত থাকুন।
৪। ব্যক্তিগত আলোচনা এমনই তা শুধু কথা বাড়াতেই থাকে। তাই এমন আলোচনা দিনের পর দিন চলতে থাকলে তা অফিসের কাজের পরিবেশে ব্যাঘাত ঘটায়। কাজের পরিবেশ নষ্ট হলে তা আপনার ক্যারিয়ারে খারাপ প্রভাব ফেলতে বাধ্য।
৫। আপনার পরচর্চামূলক স্বভাবের কারণে সহকর্মীরা আড়ালে আপনাকে নিয়ে সমালোচনা করতে পারে। তাই ব্যক্তিগত বিষয়গুলো ব্যক্তিগতই রাখুন।
যাই হোক, সেসব ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে অফিস কলিগদের সঙ্গে মোটেও আলোচনা করবেন না, তার কয়েকটি পয়েন্ট করা যেতে পারে। যেমন : নিজের বা অন্যের ধর্ম নিয়ে সমালোচনা বা কটূক্তি করা, নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে তর্ক করা, যৌন-জীবন নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করা, সবসময় ক্যারিয়ার-আকাঙ্ক্ষার কথা প্রকাশ করা, নিজের গোপনীয় স্বাস্থ্যগত সমস্যা নিয়ে আলাপ করা ইত্যাদি।
দিনের অনেকটা সময় আমরা সহকর্মীদের সঙ্গে অফিসেই কাটাই। দীর্ঘসময় একসঙ্গে কাজ করতে করতে ফর্মাল সম্পর্কের মোড়ক ভেঙে বন্ধুত্ব হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবে এমন বন্ধুত্ব হতে পারে দু-একজনের সঙ্গেই। সব সহকর্মীর সঙ্গে এমন বন্ধুত্ব হয় না, হওয়া সম্ভব নয়। আপনি যাদের আপনার সহকর্মী ছাড়াও বন্ধু মনে করবেন তাদের সঙ্গেই কেজো কথার বাইরে অল্প-স্বল্প ব্যক্তিগত আলোচনা করতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন, অফিসের সবার সঙ্গে এমন আলোচনা সমীচীন হবে না।