যেভাবে একজন ফুড ব্লগার বা ভ্লগার হয়ে উঠবেন
ব্যক্তির পারদর্শিতার জায়গাগুলোকে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর স্তরে নিয়ে গেছে হাল ফ্যাশনের স্বাধীন কন্টেন্ট নির্মাণ। ছোট ছোট বিষয়ে দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই নানা কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন একদম কৈশোর থেকেই। এগুলোর মধ্যে সব থেকে জনপ্রিয়গুলোর একটি হচ্ছে খাবারের মূল্যায়ন করা। এর শুরুটা মূলত ফুড ক্রিটিক থেকে, যেটি অনেক আগে থেকেই একটি স্বতন্ত্র মর্যাদা সম্পন্ন শিল্প।
প্রযুক্তির ক্রমবিকাশে অনলাইন কন্টেন্টের সান্নিধ্যে এরই অবারিত অবতারণা ফুড ব্লগার এবং ফুড ভ্লগার। সদ্যপ্রাপ্ত কোনো স্বাদের অভিজ্ঞতা কেউ শব্দে প্রকাশ কছেন, কেউ বা ক্যামেরা হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন রেস্তোরাঁ থেকে রেস্তোরাঁয়।
এই ধরনের কন্টেন্ট নির্মাণও হতে পারে ক্যারিয়ারের হাতিয়ার। আর ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির এই সম্ভাবনাময় পেশার নানা দিক নিয়েই আজকের নিবন্ধ। চলুন, একজন ফুড ব্লগার বা ভ্লগার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার উপায়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
যেভাবে একজন ফুড ব্লগার বা ভ্লগার হয়ে উঠবেন
ফুড ব্লগিং বা ভ্লগিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা
হোক সে কলম হাতে ব্লগ লেখা অথবা ক্যামেরার সামনে কথা বলা; এ সময়ের একজন স্বাধীন ফুড ক্রিটিকের প্রথমেই কিছু দক্ষতা অর্জন আবশ্যক। চলুন দেখে নিই, এ ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা জরুরি।
খাবার ও রান্নার ব্যাপারে সঠিক জ্ঞান
উদ্দেশ্য যখন খাদ্যের বিচার করা, স্বভাবতই তখন প্রথমেই এই বিচারের যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। এখানে রন্ধনশিল্প বা খাদ্যের উপর একাডেমিক কোনো ডিগ্রী নেওয়া জরুরি নয়। এমনকি পাকা রাঁধুনি হওয়ারও প্রয়োজন নেই। দরকার শুধুমাত্র বিষয়টির প্রতিটি প্রচণ্ড ভালো লাগা। আর এর উপর ভিত্তি করে বই ও ইন্টারনেটের তথ্য ভান্ডার থেকে জ্ঞানার্জনটা হবে স্বতঃস্ফূর্ত।
শুধু তাই নয়; এই তাড়না তাদেরকে প্রাসঙ্গিক অন্যান্য ব্যবহারিক জ্ঞানার্জনের দিকেও ধাবিত করবে। যেমন- নতুন নতুন রেসিপি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, খাদ্যের ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক প্রভাব ইত্যাদি। এই প্রস্তুতি তাদের খাদ্যের খুটিনাটি বিশ্লেষণ করে তথ্যপূর্ণ সমালোচনা করার ক্ষমতা বিকাশে সহায়তা করবে।
এছাড়া একটি পূর্ণাঙ্গ আর্টিকেল লেখার আগে তার প্রয়োজনীয় রসদ খোঁজার জন্যও মস্তিষ্কে সঠিক তথ্যের যোগান দরকার। এটি ক্যামেরার সামনে অনর্গল কথা বলে যাওয়ার জন্যও প্রযোজ্য।
গল্প বলার ও পরিবেশনের দক্ষতা
প্রতিটি রাঁধুনিই মানেন, শুধু রাধলেই হয় না, খাবারটিকে সুন্দর করে পরিবেশনও করতে হয়। রান্নার বাইরে যারা খাদ্য নিয়ে কন্টেন্ট বানাচ্ছেন, বিষয়টি তাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। গবেষণা লব্ধ তথ্যগুলোর প্রকাশ হওয়া উচিত জটিলতা বিবর্জিত এবং সাবলীল। পাঠক পড়ার সময় যেন এই অনুভূতি পান, লেখক সরাসরি তাকে উদ্দেশ্য করেই কথা বলছেন।
এটি ব্লগারদের ক্ষেত্রে কঠিন হলেও ভ্লগারদের জন্য অনেকখানি সহজ। বলাই বাহুল্য- শব্দবহুল লেখা থেকে ছোট্ট ভিডিও উন্নত অভিজ্ঞতার সঞ্চার করতে পারে। এরপরেও একটি ভিডিও স্ক্রিপ্ট প্রস্তুত রাখা আবশ্যক। পরিকল্পিত চিত্রনাট্য অনুসরণ করা হলে শ্যুটের সময় ভুল-ভ্রান্তি কম হয়। এতে ভিডিওর পোস্ট-প্রোডাকশনে সময় বাঁচায়।
অনেক ব্লগার লেখার মাঝে প্রাসঙ্গিক ও মান সম্পন্ন ছবি যুক্ত করেন। এতে করে লেখার প্রতি পাঠকদের আকর্ষণ বাড়ে। এমনকি অনেকে ভিডিও সংযুক্ত করে দেন। ব্লগিং ও ভ্লগিংয়ের এই সংমিশ্রণটি অনেক বেশি পরিমাণে পাঠক ও দর্শক আকৃষ্ট করার একটি মোক্ষম উপায়।
নেটওয়ার্কিং দক্ষতা
জনপ্রিয় ফুড ক্রিটিক বা কন্টেন্ট নির্মাতা, রেস্টুরেন্ট মালিক, নামকড়া রাঁধুনি এবং মিডিয়া জগতের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখা নিজের ব্র্যান্ড তৈরির নামান্তর। এই কাজটি অনলাইনেও করা যায় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমগুলোর গ্রুপগুলোতে সক্রিয় থেকে। এই সক্ষমতাটি উপরোক্ত ক্ষমতা দু’টি অর্জন ও চর্চার জন্য বেশ কাজে দেবে।
এছাড়াও আরও দু’টি ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারে এই যোগাযোগের দক্ষতা। এক, ফুড ব্লগ বা ভ্লগটি যখন একটু একটু করে বড় হতে থাকবে, তখন তা পরিচালনার জন্য প্রয়োজন পড়বে জনশক্তির। এই সাপোর্টটা পাওয়া যাবে নেটওয়ার্কিং থেকে।
দুই, প্রচার-প্রসারের ফলে খাবার পণ্যবিষয়ক নানা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক কন্টেন্ট নির্মাণের বা স্পন্সর যোগাড়ের সুযোগ তৈরি হবে। এই সম্ভাবনা ফুড রিভিউকে সমৃদ্ধশালী ব্যবসাতে পরিণত করতে যথেষ্ট।
কিছু কারিগরি জ্ঞান
যারা সবেমাত্র মনস্থির করেছেন যে ফুড ক্রিটিক হবেন, কারিগরি জ্ঞান তাদের ক্যারিয়ারের এই শুরুতে অনেক সুবিধা দেবে। বিশেষ করে আর্থিক দিক থেকে অনেক লাভবান হবেন তারা।
ক্যামেরা চালানো, ছবি ও ভিডিও ইডিট, কন্টেন্টের এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন, বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মগুলোতে অফিসিয়াল পেজ ও গ্রুপ পরিচালনা ইত্যাদি অনেক বাজেটের কাজ। ব্লগিংয়ের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ডোমেইন, হোস্টিং কিনে ওয়ার্ডপ্রেসে লেখালেখি শুরু করতেও প্রাথমিক কিছু প্রযুক্তিগত জ্ঞান প্রয়োজন।
এখানেও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে ফুড নিয়ে কাজ করার অদম্য আগ্রহ। অনলাইনের বিশাল তথ্যভান্ডার যে কোনো সময় বিনামূল্যেই ব্যবহার করা যাচ্ছে। তাই ধৈর্য্য ধরে এই বিষয়গুলোর নিদেনপক্ষে প্রাথমিক জ্ঞানটুকুতে দখল নিলে তা এক বিরাট বিনিয়োগ হিসেবে কাজ করবে।
সময়ানুবর্তিতা ও সাংগঠনিক ক্ষমতা
কন্টেন্ট তৈরি থেকে শুরু করে সেগুলোর মার্কেটিং পর্যন্ত যাবতীয় কাজগুলো একটি নিরবচ্ছিন্ন কর্মপ্রবাহের দাবি রাখে। শুধু ক্যারিয়ারের শুরুতে নয়, এই প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তিতে অভ্যস্ত হতে হবে পুরো যাত্রাতে। ব্লগিং বা ভ্লগিং যত বড় হতে থাকবে, কর্মপ্রবাহ বজায় রাখতে দরকার হবে জনশক্তির। সেই জনশক্তিকে সংগ্রহ, পরিচালনা এবং তদারক করার জন্য প্রয়োজন হবে একটি নিরবচ্ছিন্ন কর্মপ্রবাহের। পাশাপাশি নেটওয়ার্কিংয়ের জন্যও এই সময় হিসেব করে চলার কোনো বিকল্প নেই।
সর্বপ্রথম এখানে খেয়াল রাখা উচিৎ, এটি আসলে পুরোদস্তুর একটি ব্যবসায়িক কার্যক্রম। লেখালেখি বা ভিডিও তৈরি যাই হোক না কেন; প্রতিটির ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময়ের জন্য ধারাবাহিকতা বজায় রাখা আবশ্যক। নতুবা কাঙ্ক্ষিত পাঠক বা দর্শক মহল তৈরি সম্ভব নয়। আর এই ধারাবাহিকতার জন্য দরকার একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা, যেটি আঞ্জাম দিতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে এই দক্ষতা।
বিভিন্ন ফুড রিভিউ করে কিছু কন্টেন্ট প্রস্তুত করা
এই ধাপে কন্টেন্ট তৈরির মাধ্যমে উপরোক্ত দক্ষতাগুলোর চর্চা অব্যাহত থাকবে। প্রতিটি কন্টেন্ট তার আগের কন্টেন্ট থেকে অধিক মান সম্পন্ন হবে। কেননা সরাসরি কাজে নামার পরেই ধীরে ধীরে ধরা পড়তে থাকবে জটিলতাগুলো। আর্টিকেল বা ভিডিও তৈরির সময় কোথায় কোথায় ঘাটতি আছে সেগুলোর সঙ্গে সঙ্গে দৃশ্যমান হবে পারদর্শিতাগুলোও। আর এই পারদর্শিতাগুলোই হবে ভ্লগার বা ব্লগারের শক্তি, যা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করবে।
অনলাইন প্ল্যাটফর্মে কন্টেন্টগুলো প্রকাশ
কমপক্ষে ৮ থেকে ১০টি কন্টেন্ট প্রস্তুত হলে সেগুলো নিয়ে অডিয়েন্সের সম্মুখে হাজির হওয়া যায়। প্ল্যাটফর্মগুলোতে শুধুমাত্র অ্যাকাউন্ট খুলে একটা-দুইটা পোস্ট দিয়ে রাখলে তা পণ্যবিহীন দোকানের মতো হবে।
আর কন্টেন্ট প্রকাশের জন্য একসঙ্গে একাধিক প্ল্যাটফর্ম বাছাই করাটা উত্তম। দুই বা ততোধিক জনবল থাকলে সেদিকে এগোনো যেতে পারে। তবে একা হলে একটি শুধু ফেসবুক বা শুধু ইউটিউবকে কেন্দ্র করে অগ্রসর হতে হবে।
এখানে মনে রাখতে হবে যে, শুরুর দিকে অনলাইনে নিজের উপস্থিতি যত বাড়ানো যাবে তত দ্রুত সাড়া পাওয়া যাবে। তাই যারা দলভুক্ত হয়ে কাজ করছে তাদের সঙ্গে এককভাবে চেষ্টারতদের এক অসম প্রতিযোগিতার ব্যাপার থেকে যায়। বিধায় নিদেনপক্ষে টিকে থাকার জন্য হাল ফ্যাশনের প্ল্যাটফর্মগুলোর সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে।
যেমন বর্তমানে শর্ট ভিডিওর গ্রহণযোগ্যতা সর্বাধিক। ফলে টিকটক ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রামের রিল এবং ইউটিউব শর্টসের সঙ্গে টেক্কা দিয়ে চলছে।
ব্লগিংয়ের ক্ষেত্রে নিজের নামে একটি ওয়েবসাইট থাকাটা জরুরি না হলেও, শুরুর দিকে এটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
প্ল্যাটফর্মগুলো মনিটাইজেশনের আবেদন
এই কাজটি করে রাখতে হবে প্রথম অ্যাকাউন্ট খুলে কন্টেন্ট প্রকাশের পরপরই। ব্লগিং বা সামাজিক মাধ্যম; প্রতিটি প্ল্যাটফর্মেরই আছে নিজস্ব মনিটাইজেশন পদ্ধতি। মনিটাইজেশন প্রকাশিত কন্টেন্টগুলো থেকে নির্মাতাদের স্বয়ংক্রিয় আয়ের মাধ্যম নিশ্চিত করে। এর জন্য প্রতিটি প্ল্যাটফর্মেরই রয়েছে নিজস্ব কিছু শর্ত। এগুলো পূরণ হয় দর্শক বা পাঠকদের কাছে প্রকাশিত কন্টেন্টগুলোর গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তিতে।
যেমন ফেসবুকে মনিটাইজেশনের জন্য ৫ হাজার ফলোয়ার এবং বিগত ৬০ দিনে ৬০ হাজার মিনিট ভিউ থাকতে হয়। ব্লগিং প্ল্যাটফর্মগুলোর মনিটাইজেশন নিয়ন্ত্রকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় গুগলের বিজ্ঞাপন প্রকাশনা অ্যাডসেন্স। ব্লগিংয়ের জন্য ধরাবাধা কোনো পোস্ট সংখ্যা তারা না বললেও ইউটিউবের জন্য কিছু সংখ্যা তারা বেধে দিয়েছে। সেটি হলো, বিগত এক বছরে একটি ইউটিউব চ্যানেলে সাব্স্ক্রাইবার থাকতে হবে ১ হাজার এবং ভিউ থাকতে হবে ৪ হাজার ঘণ্টা।
আনন্দের ব্যাপার হচ্ছে, ফুড ভ্লগাররা এই শর্তগুলোতে খুব দ্রুত উতরে যেতে পারেন।
নেটিজেনদের মাঝে ফুড রিভিউগুলো প্রচার
ফুড ব্লগিং বা ভ্লগিংয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ এটি। যিনি রিভিউ করছেন তার কাজের কাঙ্ক্ষিত প্রতিক্রিয়া থেকে দীর্ঘ সময়ে ব্র্যান্ডের সফলতা সবকিছু নির্ভর করে এই প্রচারণার উপর।
একাধিক প্ল্যাটফর্মে অ্যাকাউন্ট থাকলে এই কর্মকান্ডের সুযোগ আরও বেড়ে যায়। প্রথম দিকে এই জানান দেয়াটা অব্যাহত থাকে বন্ধু-বান্ধবদেরকে শেয়ার এবং গ্রুপে সক্রিয় থাকার মাধ্যমে। পরবর্তীতে অনেকেই খরচ করে মার্কেটিং শুরু করেন। ফ্রিতে বা খরচ করে যেভাবেই হোক না কেন, এই প্রচারের পরিধি বাড়ানো যায় নানান ধরনের কৌশলের মাধ্যমে। ব্লগাররা বিভিন্ন উচ্চ প্রোফাইলের ফুড ম্যাগাজিন ও ব্লগগুলোতে গেস্ট পোস্ট করতে পারেন। অন্যদিকে ভ্লগাররা জনপ্রিয় ভ্লগারদের সঙ্গে খাবার নিয়ে আলোচনা, ইন্টারভিউ, খাবার টেস্ট করানোর মতো কন্টেন্ট তৈরি করা যেতে পারে। এখানে উপরোক্ত নেটওয়ার্কিং দক্ষতাও একটি বিরাট ভূমিকা রাখে।
ফুড রিভিউ থেকে কেমন আয় সম্ভব
উপরোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করা হলে ফুড রিভিউ যে কোনো গতানুগতিক ক্যারিয়ারের যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারে। কিন্তু এগুলোর সঙ্গে আরও কিছু ব্যবসায়িক কার্যক্রম অবলম্বন করা হলে যেকোনো তরুণের জন্য এটি একটি সেরা ক্যারিয়ার হতে পারে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরানো পদ্ধতি হলো স্পন্সর যোগাড়। এখানে বিভিন্ন কোম্পানি তাদের পণ্য বা সেবার প্রচারের স্বার্থে নির্দিষ্ট অর্থ প্রদানের চুক্তিতে ভ্লগার ও ব্লগারদের কন্টেন্ট তৈরির কাজ দেয়।
সবগুলো আয়ের মাধ্যম হিসেব করলে একজন ফুড ব্লগার বা ভ্লগারের লাখপতিদের কাতারে শামিল হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। বিশ্বব্যাপী যারা ফুড নিয়ে কাজ করেন তাদের প্রতি মাসে ন্যূনতম আয় থাকে ৪ হাজার থেকে ৯ হাজার মার্কিন ডলার। এটি বাংলাদেশি টাকায় সাড়ে ৪ থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকার (১ মার্কিন ডলার = ১১০.৬৯ বাংলাদেশি টাকা) কাছাকাছি। যারা তাদের ছোট্ট কার্যক্রমকে বড় ব্যবসায় নিয়ে যান তাদের আয় মাসে ৯০ হাজার মার্কিন ডলারও (সাড়ে ৯৯ লাখেরও অধিক) ছাড়িয়ে যায়।
বাংলাদেশে যারা এই শিল্পে কাজ করছেন, একদম প্রথম দিকে তাদের মাসিক আয় ১০ হাজারের আশেপাশে থাকে। তবে তা খুব কম সময়ের মধ্যেই এক লাখ টাকায় পৌছে যায়। এটা শুধুমাত্র যারা গুগল অ্যাডসেন্সের আয়ের উপর নির্ভর করেন তাদের বেলায় ঘটে। যারা একাধিক প্ল্যাটফর্মের মনিটাইজেশন ও স্পন্সর সংগ্রহে যুক্ত হন, তাদের ক্ষেত্রে এই অঙ্কটা লাখ টাকা ছাড়াতে পারে।
তাই নির্দ্বিধায় যে কোনো ফুড উৎসাহী একজন ফুড ব্লগার বা ভ্লগার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। এখানে আয়ের ব্যাপারটি বেশ আকর্ষণীয় মনে হতে পারে। তবে ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে বিষয়টি খুবই স্বাভাবিক দেখাবে। কেননা একটি ব্যবসা দাড় হতে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়। ফুড ব্লগিং বা ভ্লগিংও তার ব্যতিক্রম নয়। উপরোক্ত উপায়গুলো কীভাবে কত সময় নিয়ে অবলম্বন করা হচ্ছে তার ওপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হবে আকর্ষণীয় আয়ে পৌঁছানোর সময়টি।