মা কেন স্পেশাল?

কবি বলেছেন, মা কথাটি ছোট্ট অতি/ কিন্তু জেনো ভাই/ ইহার চেয়ে নামটি মধুর/ ত্রিভুবনে নাই... সন্তানের জন্য মা সর্বত্র বিরাজমান। সন্তানের জন্য হেন কোনো কাজ নেই, মা করতে পারেন না। তাই মা শব্দটি এত মধুর, এত বিশেষ।
আপনার জন্মের পূর্ব থেকে আপনার নেওয়া শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত মায়ের কাছে আপনি একজন ছোট্ট শিশু, যাকে তিনি আগলে রাখতে চান। সন্তানের সুখ ও নিরাপত্তার জন্য একজনের পক্ষে যা কিছু সম্ভব, তার সবকিছু একজন মা করে থাকেন। সন্তান যখন বাইরে যান, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মা তখন প্রতিনিয়ত খবর নিয়ে নিশ্চিত হতে চান তাঁর সন্তান ঠিক আছে এবং তাঁর আদরের সন্তানের কোনো প্রকার ক্ষতি হয়নি।
প্রতি বছর মাতৃত্বকে স্যালুট ও মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মে-র দ্বিতীয় রোববার আমরা মা দিবস পালন করে থাকি। সে অনুযায়ী আজ ১১ মে মা দিবস। সারা বিশ্বে দিবসটি উদযাপন হচ্ছে আর মায়ের জন্য যথাসাধ্য ভালোবাসা প্রকাশ করছেন সন্তানেরা।
বিশেষ এ দিনে আমরা বলতে পারি, মা সত্যিই বিশেষ আর খুবই মূল্যবান। আর এ বিশেষ হওয়ার পেছনে হাজারও কারণ রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক তেমনই কিছু কারণ সম্পর্কে—
মা সব জানেন
সন্তানের সবকিছুই মা জানেন। আপনার মুখ দেখেই তিনি বলে দিতে পারেন আপনার বর্তমান আবেগিক ও মানসিক অবস্থার কথা। মা এমন অনেক কিছু জানেন, যা অন্য কেউ কখনও জানতে পারেন না। সন্তানের পছন্দ-অপছন্দ, আনন্দ-বেদনা—সবই তাঁর জানা। সন্তানকে তাঁর চেয়ে ভালো আর কেউ বোঝেন না। আর এ কারণেই মা বিশেষ।
মায়ের ভালোবাসা নিঃস্বার্থ
মা এমন একজন, যাঁর ভালোবাসায় কখনো কোনো স্বার্থ থাকে না। সন্তানের জীবনের অপূর্ণতা মায়ের আশীর্বাদে পূর্ণতা পায়। জীবনের প্রতিটি ধাপে মায়ের চেয়ে বড় রক্ষাকর্তা আর কেউ নেই। তাঁর ভালোবাসা অসীম। আপনি যদি কোনো ভুল করেও ফেলেন, মা প্রায় সব সময়ই ক্ষমা করে দেন।
মা আমাদের প্রথম শিক্ষক
আমরা জীবনের প্রথম শব্দ থেকে শুরু করে প্রায় সব শিক্ষাই মায়ের কাছ থেকেই পাই। মা আমাদের প্রথম ও সেরা শিক্ষাগুরু। তিনি যখন অন্তঃসত্ত্বা থাকেন, তখন ভালো বই পড়েন, ধর্মীয় অনুষঙ্গ আওড়ান এবং ভালো কিছু লেখার চেষ্টা করেন—সবই সন্তানের মঙ্গল কামনায়। তিনি চান তাঁর সন্তান সুশিক্ষিত ও পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠুক। তিনিই আমাদের অন্তর্নিহিত সত্তাকে জাগিয়ে তোলেন।
আমাদের প্রেরণাদাত্রী
এ কথা বললে অতিরঞ্জিত হবে না, মা ছাড়া পৃথিবী সহায়হীন হয়ে পড়ত। বাস্তবতার কঠিনতম সময়েও মা আমাদের সাহস দেন, উৎসাহ দেন, শক্তি জোগান। তিনি শুধু তাঁর অভিজ্ঞতা ভাগ করেন না, আমাদের আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়ে তোলেন। মা কখনও আমাদের ভেঙে পড়তে দেন না।
মা সর্বদা আমাদের বিশ্বাস করেন
যদি গোটা পৃথিবী আপনার বিপক্ষে দাঁড়ায়, তবু মা আপনার পাশে থাকবেন। তিনি আপনার মেধা ও যোগ্যতার ওপর আস্থা রাখবেন। সন্তানের প্রতি তাঁর বিশ্বাস অটুট। পৃথিবী যতই সমালোচনা করুক না কেন, মা করবেন না—কারণ সন্তানের চোখে তিনি সব সময়ই সেরা।
সব সমস্যার সমাধান মা
মা যেন সব সমস্যার সহজ সমাধান। পরীক্ষার প্রস্তুতি থেকে শুরু করে কী পরবেন—মায়ের কাছে সব প্রশ্নের জবাব আছে। শুধু দৈনন্দিন ব্যাপারেই নয়, জীবনসংগ্রামেও মা আমাদের পরামর্শদাতা ও পথপ্রদর্শক।
আপনার ভেতরের সেরাটা বের করে আনবেন মা
জীবনের কিছু মুহূর্তে আমরা হতাশ হই, আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলি। ঠিক তখনই মা ত্রাতার ভূমিকায় আবির্ভূত হন। তিনি আমাদের ভেতরের সেরাটা বের করে আনেন, যেন আমরা নতুন করে পথ চলতে পারি। তাঁর উৎসাহেই আমরা ভয় কাটিয়ে দায়িত্ব পালন করতে পারি। তাই তো মায়ের কোনো তুলনা নেই—মায়ের বিকল্প শুধুই মা।