আন্তর্জাতিক কফি দিবস আজ

অনেকের সকালের প্রথম পানীয় হচ্ছে কফি। কফি কেবল শুধু এক কাপ পানীয় নয়, বরং এটি এক নিঃশব্দ আলাপ, আত্মার সঙ্গে আত্মার বোঝাপড়া। আর যখন তার সঙ্গী হয় এক বৃষ্টিস্নাত সকাল, তখন বৃষ্টির শব্দ সঙ্গীতের মতো—একঘেয়ে, অথচ বিস্ময়কর শান্তিপূর্ণ। কফির তীব্র ঘ্রাণ যেন স্মৃতি জাগায়, যেমন পুরোনো চিঠি খুলে পড়লে বুকের মধ্যে নরম কিছু ঢেউ ওঠে। কফি মানুষের ভেতরের সৃজনশীলতাকে জাগিয়ে তুলে।
আজ কফি নিয়ে এত কথা কেন? কারণ যারা কফি খেতে ভালোবাসেন তাদের জন্য আজকের দিনটি বিশেষ। আজ বুধবার (১ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক কফি দিবস। প্রতি বছর এই দিনে আন্তর্জাতিক কফি দিবস পালন করা হয়। আন্তর্জাতিক কফি সংস্থা (আইসিও) ২০১৪ সাল থেকে ১ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক কফি দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এবারের দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় হলো—‘সামগ্রিক পদক্ষেপের জন্য সহযোগিতা গ্রহণ করুন।’
কফি দিবসের ইতিহাস
বলা হয়, কফির জন্ম ইথিওপিয়ায়। প্রচলিত আছে, নবম শতকে এক রাখাল লক্ষ্য করেছিল, তার ছাগল কফির বীজ খেয়ে বেশ চনমনে হয়ে যায়। ১৫শ শতকে কফি আরবে জনপ্রিয় হয়। তারপর ছড়িয়ে পড়ে এশিয়া, ইউরোপ হয়ে আমেরিকা পর্যন্ত। আধুনিক কফি সংস্কৃতির সূচনা হয় মাত্র পঞ্চাশ বছর আগে, যখন থার্ড ওয়েভ কফি শপ আসতে শুরু করে। আন্তর্জাতিক কফি দিবস প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে পালিত হয় ২০১৫ সালে ইতালির মিলানে। মূলত কফি চাষিদের দুর্দশা তুলে ধরতে এবং ন্যায্য বাণিজ্যের প্রচারে দিবসটির প্রচলন হয়।
বিশ্বে কফি উৎপাদনে শীর্ষ দেশ হলো ব্রাজিল, যা বিশ্ব সরবরাহের একটি বড় অংশ সরবরাহ করে। ব্রাজিল ছাড়াও, ভিয়েতনাম কফি উৎপাদনে দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে কলাম্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং ইথিওপিয়া। বাংলাদেশেও কফি চাষ হয়। পাহাড়ি জেলা যেমন বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি এবং সমতল ভূমির জেলা টাঙ্গাইল, রংপুর, নীলফামারীতে কফি চাষ প্রচলিত।
কফির উপকারিতা
পানীয় হিসেবে বিশ্বে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে কফি। উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বেশ কিছু উপকারী উপাদানের জন্য কফি অনেক রোগের ঝুঁকি কমাতেও সক্ষম। এ ছাড়াও কফি পানে রয়েছে আরও কিছু উপকারিতা। কফি যেকোনো জায়গায় মানানসই পানীয়। কর্মস্থলে রুক্ষ দিন থেকে শুরু করে সন্ধ্যার ক্লান্তি অবধি রয়েছে কফির চাহিদা। তাই দৈনন্দিন জীবনে নিয়মিত যুক্ত করা যেতেই পারে এক কাপ কফি।
বিপাকের হার বাড়ায়
ওজন কমানোর মূল চাবিকাঠি হচ্ছে শরীরের বিপাকক্রিয়া। কফিতে থাকা ক্যাফিন ও ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড বিপাক হার বাড়াতে সাহায্য করে। এ কারণেই অনেক ওজন কমানোর ওষুধেও এ উপাদানগুলো থাকে। ক্যাফিন বিপাক হার বাড়ায়, আর ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড খাবার থেকে শর্করার শোষণ কমিয়ে দেয়।
মেদ ভাঙতে সাহায্য করে
শরীরের ফ্যাট সেল জমা চর্বি ভাঙতে সাহায্য করে কফি। ক্যাফিন ফ্যাট টিস্যু থেকে ফ্যাটি অ্যাসিড মুক্ত করতে পারে, যা শরীরচর্চার সময় শক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।