বিশ্ব শিশু দিবস আজ

আজ সোমবার (৬ অক্টোবর) বিশ্ব শিশু দিবস। শিশুদের অধিকার ও কল্যাণের প্রতি সচেতনতা বাড়াতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিত হচ্ছে শিশু দিবস। শিশুদের প্রতি ভালোবাসা, নিরাপত্তা ও শিক্ষার বার্তা তুলে ধরতে দিনটি নানা আয়োজনে উদযাপিত হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ন্যায় বাংলাদেশে এই দিবসটি পালন হবে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রতি বছর অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার বিশ্ব শিশু দিবস পালন করে থাকে।
এবারের বিশ্ব শিশু দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শিশুর কথা বলব আজ, শিশুর জন্য করব কাজ’। শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ শিশু একাডেমির আয়োজনে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ইউনিসেফের প্রতিনিধি ও শিশু প্রতিনিধিরা।
‘বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ-২০২৫’ উপলক্ষে রোববার দেওয়া এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশে ‘বিশ্ব শিশু দিবস-২০২৫’ উদযাপন উপলক্ষে আমি বাংলাদেশের শিশুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।’
তিনি বলেন, ‘শিশুদের হাসি-খুশি মুখই নতুন বাংলাদেশের আশার প্রতীক। তাদের স্বপ্ন ও সৃজনশীলতা দিয়েই গড়ে উঠবে আগামী দিনের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। আমাদের অঙ্গীকার হোক প্রতিটি শিশুর জন্য নিরাপদ শৈশব, মানসম্মত শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক বিকাশের পূর্ণ সুযোগ নিশ্চিত করা।’
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, শিশুদের সৎ, মমতাময় ও মুক্তচিন্তার পরিবেশে বড় হতে দিলে তারা আগামী দিনে হবে যোগ্য নাগরিক-যারা বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য, প্রযুক্তি, ক্রীড়া ও নেতৃত্বে বাংলাদেশকে বিশ্বে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।
তবে আজও দারিদ্র্য, শিশুশ্রম, সহিংসতা ও বৈষম্যের মতো চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজন সম্মিলিত প্রয়াস। আর এ প্রয়াসের মাধ্যমেই পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সমন্বিত উদ্যোগেই কেবল শিশুদের অধিকার রক্ষা ও সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা সম্ভব।’
ড. ইউনূস আরও বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি ‘বিশ্ব শিশু দিবস-২০২৫’ আমাদের নতুন প্রতিজ্ঞায় উজ্জীবিত করবে, যাতে প্রতিটি শিশু নিরাপদ ও সৃজনশীল পরিবেশে বেড়ে ওঠে। শিশুদের জন্য একটি আলোকিত আগামী গড়াই হবে নতুন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন।
১৯২৫ সালে জেনেভায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব শিশু কল্যাণ সম্মেলনে প্রথম আন্তর্জাতিক শিশু দিবস ঘোষিত হয়। পরে ১৯৫০ সাল থেকে বেশিরভাগ কমিউনিস্ট ও পোস্ট-কমিউনিস্ট দেশে ১ জুন দিনটি পালন শুরু হয়।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৯৫৯ সালের ২০ নভেম্বর শিশু অধিকার ঘোষণাপত্র গৃহীত হওয়ার স্মরণে ২০ নভেম্বরকে বিশ্ব শিশু দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।
শিশু দিবসের সূচনা হয় ১৮৫৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে, যেখানে ইউনিভার্সালিস্ট চার্চের যাজক রেভারেন্ড চার্লস লিওনার্ড প্রথম শিশুদের জন্য বিশেষ এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। পরে তুরস্ক ১৯২০ সালে ২৩ এপ্রিলকে জাতীয় শিশু দিবস ঘোষণা করে, যা বিশ্বের প্রথম রাষ্ট্রীয় স্বীকৃত শিশু দিবস।