শিশুর মুঠোফোনে আসক্তি থেকে পরিত্রাণের উপায়
মুঠোফোন এখন আমাদের জীবনযাপনের অবধারিত অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর সুফল ও কুফল দুই-ই আছে। অনেক শিশুর মুঠোফোন ছাড়া যেন অন্য কিছুতে মনোযোগই নেই। মুঠোফোন হাতে না দিলে খেতেও চায় না। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে জানব, মুঠোফোনে আসক্তি শিশুর মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে কি না।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে শিশুদের মুঠোফোনে আসক্তি নিয়ে কথা বলেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে (শিশু বহির্বিভাগ) শিশু বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. তোশিবা রহমান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন ডা. মুনা তাহসিন।
ডিভাইস আসক্তি থেকে অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যা তৈরি হয়। সেইসাথে মানসিক বিকাশে কোনও ঘাটতি আপনারা দেখছেন কি না বা কী ধরনের কোনও অটিজমের সাথে এর রিলেশন আছে কি না, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. তোশিবা রহমান বলেন, ডিভাইসের ইফেক্টের শুরুতেই কমিউনিকেশন চলে আসে। অটিজম জিনিসটা কী। অটিজম জিনিসটা হচ্ছে টোটালি একটা সোশ্যালাইজেশন, কমিউনিকেশন এবং বিহেভিয়ার ইমপেয়ারমেন্ট। এই তিনটি যদি থাকে, তবে তাদের আমরা অটিজম বলে থাকি তাদের অ্যাসেসমেন্ট করার পরে। তাহলে ডিভাইস ইনডিরেক্টলি চলেই আসছে।
ডা. তোশিবা রহমান বলেন, আমাদের মধ্যে কিছু কিছু ধারণা আছে যে অনেক বেশি মোবাইল দেখেছে, সে জন্য আমার শিশু অটিজম হয়ে গিয়েছে। আসলে মোবাইল দেখেছে বলে সে অটিজম হয়নি, ওর মধ্যে অটিজমের সাইন-সিম্পটম ছিল, কোর সিম্পটম কিছু ছিল, ওগুলো আসলে দেখা গিয়েছে যে আমি হয়তো স্টিমুলেশন দিচ্ছি বা আমি হয়তো শিশুটির সঙ্গে যেভাবে থেরাপিটি নেওয়ার, সেভাবে নিচ্ছিলাম, তার ট্রিটমেন্ট চলছিল, কিন্তু সাথে সাথে এক্সেসিভ ডিভাইস ইউস করার ফলে শিশুটি সেভাবে ইমপ্রুভমেন্ট করছে না বা তার ওই সিম্পটমগুলো অনেক বেশি ত্বরান্বিত করছে অতিরিক্ত মোবাইল দেখার ফলে। কারণ, আমরা বলেছি অটিজম একটি কমিউনিকেশন প্রবলেম। আর ডিভাইস কী করছি, একজন সাধারণ শিশু, অটিজম না, একজন স্বাভাবিক মানুষকেও কমিউনিকেশনের দিক থেকে পিছিয়ে দিচ্ছে। সে ক্ষেত্রে যেটা বলব, এটা কো-ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে যদি অতিরিক্ত ডিভাইস ইউস করে।
এটি থেকে কীভাবে তাদের বিরত রাখা যায়, কীভাবে আরও বেশি সৃজনশীল কাজে ইনভলভ করা যায়, কী কী করণীয় আছে, কোন বয়সে বাচ্চাদের আমরা কী করতে পারি, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. তোশিবা রহমান বলেন, আমরা যেটা বলে থাকি, যদি দেখা যায় যে একটি শিশুর কোনও কারণে মাইল্ড স্পিচ ডিলে বা মাইল্ড কমিউনিকেশন প্রবলেমও দেখা যায়, সে ক্ষেত্রে ১৮ মাস বয়স বা দুই বছর বয়স থেকে শিশুটিকে বিভিন্ন ডে কেয়ার, প্রি-স্কুল বা চাইল্ড স্পেশালিস্টের কাছ থেকে লিখিত নিয়ে যে ট্রিটমেন্টের পার্ট হিসেবে সে স্কুলে যাবে, এ রকম করে যদি স্কুলে দিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে ৮০ শতাংশ শিশু ইমপ্রুভ করে যায়, যদি না সিভিয়ার ফর্মে না থাকে, অতি তীব্র মাত্রার যদি কোনও সাইন-সিম্পটম না থাকে। আরেকটা যেটা করতে হয়, অভিভাবককে একটু সচেতন হতে হয়, হোম এনভায়রনমেন্ট চেঞ্জ করতে হয় এবং শিশুকে খুব সময় দিতে হয়। প্লে থেরাপির মাধ্যমে শিশুকে শেখাতে হবে, কোনটা ভালো, কোনটা খারাপ, কোনটার শেপ কী, কোনটার কালার কী। তার যে ডেইলি লিভিং অ্যাকটিভিটিস, যেমন তার ড্রেসিং, ব্রাশিং, ফিডিং; সবকিছু কিন্তু শেখানো যায় প্লে থেরাপির মাধ্যমে এবং কালার কিন্তু ব্রেইনকে খুব সুন্দরভাবে স্টিমুলেট করে। আমরা তাদের বলি এক্সট্রা কারিকুলামে তাদের ইনভলভ করে দিতে।
শিশুদের মুঠোফোনে আসক্তি থেকে পরিত্রাণের উপায় সম্পর্কে আরও জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ।