ভুলের প্রায়শ্চিত্তে বাসন মাজলেন কেজরিওয়াল
মাথায় সাদা রুমাল বাঁধা। স্বর্ণমন্দিরের লঙ্গরখানায় স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে বসে বাসন মাজছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আজ সোমবার সকালে এমন দৃশ্য দেখে অবাক হয়েছেন শিখদের পবিত্র এই তীর্থস্থানে উপস্থিত অনেকেই।
স্বর্ণমন্দিরে আশীর্বাদ চাইতে অনেক নেতা-নেত্রীই উপস্থিত হন। কিন্তু কোনো নেতা বাসন মাজছেন এ দৃশ্য সম্ভবত এই প্রথম।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এ দৃশ্যে অবাক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রথম প্রশ্নই ছিল, হঠাৎ কেন এমন কাজ করতে গেলেন কেজরিওয়াল? তাঁর দলের সূত্রে জানা গেছে, আসলে একটা ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতেই তাঁর এই কাজ।
জানা গেছে,গত ২৮ জুন দলীয় ইশতেহার প্রকাশের সময় আপ মুখপাত্র আশীষ খেতন আম আদমি পার্টির দলীয় প্রতীক ঝাঁটার ছবি দেওয়া যুব ম্যানিফেস্টোর সঙ্গে শিখদের ধর্মগ্রন্থ গ্রন্থসাহেবের সঙ্গে তুলনা করেন। সেই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কেজরিওয়ালও।
জানা গেছে, দলের ইস্তেহার প্রকাশ করার সময় কেজরিওয়ালের উপস্থিতিতেই আপ মুখপাত্র বলেছিলেন, ‘এটাই আমাদের বাইবেল, গীতা ও আমাদের গুরু গ্রন্থসাহেব।’ পরে সমালোচনার মুখে এই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন আশীষ খেতন।
আশীষের এমন ব্যাখ্যায় ক্ষুণ্ণ হন বহু শিখ ধর্মাবলম্বী মানুষ। তাঁদের ধর্মীয় আবেগে আঘাত লেগেছে বলে খবর আসে আপপ্রধানের কাছে। আর এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই দুঃখপ্রকাশ স্বরূপ স্বর্ণমন্দিরে প্রার্থনার পর স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে লঙ্গরখানায় নিজের হাতে প্লেট ধুয়ে দেন তিনি।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, প্রায় মিনিট ৪৫ মন্দিরে ছিলেন কেজরিওয়াল। ওই সময়ে স্বর্ণমন্দিরের পরিচালনা কমিটির সঙ্গেও দেখা করেছেন তিনি। নিজের দলের সদস্যের মন্তব্যের জন্য বারবার ক্ষমা চেয়ে তিনি জানান, আসলে ধর্মীয় আবেগে আঘাত করে তাঁর দলের নেতা কিছু বলতে চাননি।
এনডিটিভি জানায়, কেউ কোনো কাজের প্রায়শ্চিত্ত করতে চাইলে স্বর্ণমন্দিরের এঁটো থালা বাসন ধোয়, কেউ আবার মন্দিরের রান্নাঘরে দরিদ্রদের জন্য রান্না করে, কেউ আবার ঝাঁট দেয় গোটা মন্দির । মন্দির চত্বর ঝাঁট দেওয়াকেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে ধরা হলেও বিতর্ক এড়াতে দলীয় প্রতীকের দিকে এদিন আর হাত বাড়াননি কেজরিওয়াল ।
তবে বিরোধীপক্ষের মতে, সামনেই পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচন। আর এই সময়ে গ্রন্থসাহেবের তুলনা করায় ক্ষুব্ধ শিখ সম্প্রদায়ের মন জিততে দেরি না করে তড়িঘড়ি দলের ইমেজ ঠিক করতে নেমেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল ।