দুটি কবিতা
শেষকৃত্যানুষ্ঠান
তোমার বন্ধু বেঁচে নেই
পথের সাথি আমার
যোদ্ধা, চলো তার জন্য কিছুটা হলেও মরে যাই।
সে জীবন উৎসর্গ করেছে
সংগ্রামে-অধিকারে : আট ঘণ্টা শ্রমদিবস, মজুরি বৃদ্ধি
আর কাজের উন্নততর পরিবেশের দাবিতে।
হারানো সে সাথি আমার
তার জন্য ক ফোঁটা চোখের জল ফেলি, ঠোঁটে সমুদ্র-লবণ
শোকের কালেও চুমুর ফসল ফিরে পাক বীজের যন্ত্রণা।
সে আমাদের বিশ্বাসের ভিত এঁকে দিয়ে গেছে
সব শেষ হলে এটুকুই তো থাকে,
তখন আমরা হৃদয়াকৃতির পাকা নিখুঁত কমলা খুঁজে নেই।
ওর মধ্যে আমরা সান্ত্বনা খুঁজি
আত্মাকে কাঠগড়ায় তুলে কিছুটা মরতে গিয়ে দেখি
আমরা প্রকৃতই মরে গিয়ে বেঁচে আছি।
সুশীলসমাজবৃন্দ
কাঠমিস্ত্রি
কাঠের শরীরে মসৃণসুন্দর অনুভূতি বসাচ্ছে,
চেরাইকলের ইতিহাস তার জানা, তবু সে হাঁপাচ্ছে...
একটাই জীবনে তার অনিঃশেষ কাঠঠোকরার গান
ক্রমশ তাড়াচ্ছে তাকে, দিচ্ছে কিছু তার প্রতিদান!
মহান ঈশ্বর
নক্ষত্রপুঞ্জের দেখভাল করতে করতে
বুড়ো হতে হতে, যার-পর-নাই ব্যস্ত-ত্রস্ত, গেলে বলতে
পৃথিবীর কথা তার কাছে শুধু রাজনীতি-সংলাপেই মতোই
কৃশ ও জৌলুশহীন, তা নীরবতা সুগভীর হোক যতই!
মাননীয় সরকার
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে নদীমুক্ত বনবাদাড়ের
তার চারপাশে ফেনার বিশাল আস্তর, আবেগ নিটোল জলের
সুন্দরবন গুগল ম্যাপ থেকে হারিয়ে গেলেও, বঙ্গোপসাগর আছে তার কাছে
আর, খাল-বিলের নামওয়ারি ইতিহাসের নদীমাতৃক কৃষিকাজ ও মৌসুম আছে!
প্রিয় দেশবাসী, কবিতা বিপ্লব করে দেবে
আপনার কানজোড়া আশাবাদী করুন ক্রমশ ভেবে!