বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস : তামাকের বিরুদ্ধে সচেতন হোন
আজ বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘Tobacco—a threat to development’, অর্থাৎ ‘তামাক—উন্নয়নের অন্তরায়’। তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারে স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে এই দিন বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতিবছর সারা বিশ্বে প্রায় ৬০ লাখ লোক তামাকের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে মারা যায়। এর মধ্যে প্রায় ছয় লাখ লোক পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয়।
এ ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (CDC) সেন্টারও তামাককে বিশ্বব্যাপী অকালমৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
‘ইউনাইটেড ফোরাম অ্যাগেইনস্ট টোবাকো’র এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ৪৩ শতাংশ মানুষ তামাক গ্রহণ করেন। এর মধ্যে ২৩ ভাগ মানুষ ধূমপানের মাধ্যমে তামাক ব্যবহার করেন এবং ২৭ দশমিক ২ ভাগ ধোঁয়াহীন তামাক (জর্দা, গুল) ব্যবহার করেন। ধোঁয়াহীন তামাক ব্যবহারের হার নারীদের মধ্যে অনেক বেশি।
তামাক গ্রহণে যেসব ক্ষতি হয়
তামাক নেশাজাতীয় পদার্থ। তামাকের প্রধান নেশাদায়ক উপাদান নিকোটিন এক ধরনের স্নায়ুবিষ (নিউরোটক্সিন)। তবে তামাকের ধোঁয়ায় নিকোটিন ছাড়াও থাকে বেঞ্জোপাইরিন বহুচক্রী আরোমাটিক যৌগ। এটি মানবদেহে নানা ধরনের ক্যানসার তৈরি করে।
তামাকের পলিসাইক্লিক অ্যারোমাটিক হাইড্রোকার্বন, অ্যাক্রোলি, নাইট্রোস্যামাইন উপাদানের ব্যবহারের কারণে ফুসফুস ও মুখের ক্যানসার বাড়ে। এটি রক্তচাপ বাড়িয়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি তৈরি করে। এ ছাড়া শ্বাসকষ্ট, কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া, মানসিক চাপ বাড়া ইত্যাদি তামাক গ্রহণের কারণে হতে পারে।
সিগারেটে নিকোটিনসহ অন্যান্য রাসায়নিক উপাদান ইস্ট্রোজেন হরমোন তৈরিতে বাধা দিয়ে বন্ধ্যত্ব ঘটাতে পারে। এটি গর্ভের শিশুর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
দুনিয়াব্যাপী মানুষের অকালমৃত্যুর বেশিরভাগ কারণই তামাক। মানুষের মৃত্যুর আটটি প্রধান কারণের মধ্যে ছয়টি মৃত্যুর সঙ্গেই তামাক, অর্থাৎ ধূমপান জড়িত।
তামাকের উৎপাদন ও ব্যবহার বন্ধ করতে সচেতনতা জরুরি। তাই নিজে ধূমপানমুক্ত থাকুন। আর তামাক ও মাদকের বিরুদ্ধে অন্যদের সচেতন করুন।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ, সাভার, ঢাকা।