রোজায় অজ্ঞান হলে করণীয়
রোজা শরীরের জন্য উপকারী। রোজার সময় খাবারের সময়সূচির পরিবর্তন হয়, অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকতে হয়। এই পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে গিয়ে অনেক সময় কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে অজ্ঞান হওয়া অন্যতম একটি সমস্যা। তবে কিছু বিষয় মেনে চললে এ সমস্যা সহজেই প্রতিরোধ করা যায়।
ইফতার ও সেহরির মধ্যবর্তী সময়ে পর্যাপ্ত পানীয় জাতীয় খাবার না খেলে শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়ে। পানিশূন্যতা হওয়ার কারণে রক্তচাপ কমে গিয়ে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়। এ কারণে অজ্ঞান হওয়ার সমস্যা হতে পারে।
রোজা রেখে কেউ বেশি গরম পরিবেশে টানা কাজ করলে, রোজা রেখে ক্লান্ত শরীরে দীর্ঘক্ষণ ভিড়ের মধ্যে থাকলে, টানা কায়িক পরিশ্রম করলে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস অবস্থায় রোজা রাখলেও অজ্ঞান হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
লক্ষণ
চোখে ঝাপসা দেখা, গরম বোধ হওয়া, মাথা ঘোরা, মাথা পাতলা বোধ হওয়া, বমির ভাব, শরীর ঘেমে যাওয়া এবং অত্যন্ত ক্লান্ত অনুভব করা ইত্যাদি অজ্ঞান হওয়ার আগের লক্ষণ। এ ধরনের সমস্যা হতে হতে এক পর্যায়ে মানুষ অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
রোজায় অজ্ঞান হওয়া প্রতিরোধে
- রোজাদারকে সেহরি ও ইফতারে আদর্শ সুষম খাবার খেতে হবে। বেশি করে তরল খাবার, পানি, দুধ ও বাসায় বানানো ফলের শরবত খেতে হবে।
- ডায়াবেটিস, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণসহ অন্যান্য রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখে রোজা রাখতে হবে।
- রোজা রেখে বেশি গরম ও বেশি ভিড় এড়িয়ে চলুন। বিশ্রাম নিয়ে নিয়ে কাজ করুন।
অজ্ঞান হলে
- অজ্ঞান ব্যক্তিকে লম্বা করে সমতল স্থানে শুইয়ে দিন।
- মাথা পেছনের দিকে সামান্য হেলিয়ে দিন, যেন মুখ খোলা থাকে। এতে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সহজ হয়।
- বেশি গরম থাকলে বাতাসের ব্যবস্থা করুন। চোখে-মুখে পানির ঝাঁপটা দিন। পাশাপাশি রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনুন।
- শ্বাসনালি বন্ধ কি না দেখুন। শ্বাস বন্ধ থাকলে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দিতে হবে। পড়ে গিয়ে কোথাও কেটে রক্তক্ষরণ হলে তা চাপ দিয়ে বন্ধ করুন।
- সাধারণত অজ্ঞান হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই মানুষ আবার জ্ঞান ফিরে পায়। তবে বেশি সময় ধরে কেউ অজ্ঞান থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ, সাভার, ঢাকা।