উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খেতে ভীতি?
উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ দীর্ঘদিন খেতে হয় বলে, এটি নিয়ে অনেকের মধ্যে ভীতি দেখা যায়। এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮৫৮তম পর্বে কথা বলেছেন ডা.উম্মে সালমা খান। বর্তমানে তিনি এমএইচ শমরিতা হাসপাতাল অ্যান্ড মেডিকেল কলেজে কার্ডিওলজি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : উচ্চ রক্তচাপ কমাতে প্রথম পরামর্শ কী থাকে রোগীর প্রতি?
উত্তর : প্রথম যখন একজন রোগী এসে বলে, ‘খারাপ লাগছে’ বা আমরা যদি এটি পেয়ে যাই,আমরা সাধারণত প্রথম দেখাতেই ওষুধ দেওয়া অপছন্দ করি বা দিতে চাই না। কারণ, অনেক সময় দেখা যায় চিকিৎসকের কাছে এলেও রোগী একটু অস্থির থাকে বা দুশ্চিন্তা বোধ করে।
অনেক বেশি না হওয়া পর্যন্ত আমরা সাধারণত চেষ্টা করি রোগীর কোনো সমস্যা আছে কি না সেটি দেখার জন্য। যেমন : উদ্বেগ রয়েছে কি না বা রোগী আগে উচ্চ রক্তচাপে ভুগত কি না- এসব। অনেকে ওষুধ খেয়ে মাঝখানে আবার ওষুধ ছেড়ে দেয়- সেই রকম কোনো ইতিহাস আছে কি না- সেটি দেখি। এ রকম কোনো ইতিহাস না থাকলে আমরা সাধারণত রোগীকে এনজিওলাইটিক দিয়ে দেই অথবা পরে আমাদের কাছে ভিজিটের জন্য একটি তারিখ ঠিক করে দেই। তখন যদি আমরা দেখি তার প্রেশারটা বেশি, তখন আমরা তাকে ওষুধ শুরু করার জন্য একটি চিন্তা করি।
প্রশ্ন : আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখি রোগীদের মধ্যে ওষুধ খাওয়ার প্রবণতা কম থাকে। কারণ, তাদের ধারণা থাকে এটি সারা জীবন খেতে হয়। আসলেই তাই। এ কারণে তারা ওষুটা আর শুরু করতে চান না। এ ক্ষেত্রে আপনারা কী পরামর্শ দেন?
উত্তর : আমাদের কাছে সত্যিই এ রকম রোগী আসে, অনেক রোগী আসে। দেখা যায় অনেকে বলে, ‘ম্যাডাম উচ্চ রক্তচাপ ছিল, আমি মাঝে মাঝে ওষুধ খেয়ে ছেড়ে দেই। একবার খেলে আমাকে খেয়েই যেতে হবে।’ তখন দেখা যায় তাকে কিছু পরামর্শ বা কিছু কথা আমরা বলি। তাকে বলি, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধটা না খেলে রক্তচাপ যদি অনেকদিন থাকে, তাহলে কী কী সমস্যা হতে পারে। সাধারণত অনেক ধরনের সমস্যা হয়। হার্ট অ্যাটাক হতে পারে, স্ট্রোক হয়ে প্যারালাইসিস হয়ে বিছানায় পড়ে থাকতে পারে, তার কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, হাতে বা পায়ে কোনো জায়গায় বা শিরায় ব্লক হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে রোগী হয়তো পায়ের ব্যথা নিয়েও আসতে পারে।
এমনকি এটাও হয়, অনেকে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে আসছে, তারা হয়তো ওষুধ খেয়ে ছেড়ে দিয়েছে। যখন সে ওষুধ ছেড়ে দেয়, আমরা যখন আরেকবার সেই ওষুধ ধরতে চাই, তখন সেই ওষুধটি সাধারণত একই ডোজে কাজ করতে চায় না। তখন দেখা যায় ওষুধের ডোজ আরো বাড়িয়ে দিতে হয় বা অন্য কোনো ডাবল ডোজে চলে যেতে হয় বা অন্য কোনো ওষুধ যোগ করতে হয়। এগুলো বুঝিয়ে বললে কিন্তু রোগীরা শোনে। সুস্বাস্থ্যের জন্য ভীতি কাটিয়ে এই ওষুধগুলো নিয়মিত খাওয়া উচিত।