সংবেদনশীল ত্বকের যত্নে করণীয়
সংবেদনশীল ত্বকে একটু বেশি সমস্যা হয়। এই ত্বকের যত্নে করণীয় বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮৯০তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. তাওহীদা রহমান ইরিন। বর্তমানে তিনি শিওর সেল মেডিকেল বিডির ডারমাটোলজি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : যাদের জিনগতভাবে ত্বক সংবেদনশীল তারা একটু আশাহত থাকেন। ভাবেন যে ত্বক আর কখনো ভালো হবে না। তাদের প্রতি আপনারা কী ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন?
উত্তর : যদি কোনো শিশুও আসে পরিবারে, মা বা যদি জানে তার সংবেদনশীল ত্বক, তার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। মানে শিশু অবস্থাতেও উপসর্গ আসতে পারে। কারণ, ডাটাতে রয়েছে যে শিশুর সংবেদনশীল ত্বক, তার চার বছর বয়সে অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস হয়। এই শিশুরই ১১ বছর বয়সে ব্রণের আশঙ্কা দেখা দেয়। এটি ৩০ বছর পর্যন্ত চলতে থাকে।
প্রশ্ন : এ ধরনের সমস্যা নিয়ে এলে কীভাবে পরামর্শ দেন?
উত্তর : খাদ্যাভ্যাস। বুকের দুধ খেতে হবে। মায়েরা যে খাবার খাবে সেটি থেকে কিন্তু বাচ্চার খাবার অনেকাংশে নির্ভর করছে। তাই মায়েদের খাবারের বিষয়ে অনেক যত্ন নিতে হবে। আর যেসব অংশে ভাঁজ থাকে, সেসব অংশগুলোতে অনেক যত্নবান হতে হয়। ডায়াপার বা যে কাপড় পরানো হচ্ছে এর ক্ষেত্রেও বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।
প্রশ্ন : পরিবেশগত কারণে ত্বক সংবেদনশীল হলে সেই ক্ষেত্রে পরামর্শ কী?
উত্তর : এখানে আসলে পরামর্শটাই আমাদের চিকিৎসার প্রথম ধাপ। সংবেদনশীল ত্বকের সহনশীলতার মাত্রা কমে যায়। ত্বকে ব্যবহার করার পণ্য, পোশাক, জুতো সবকিছুতেই বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। আমি সব কিছু পরতে পারব না। যেমন আমি পণ্যের ক্ষেত্রে মিসব্যান্ড বা মিস ল্যাভের কোনো পণ্য ব্যবহার করব না। মিনিমাল ইনগ্রিডিয়েন্ট ও ম্যাক্সিমাম টলারেন্সযুক্ত পণ্য আমি ব্যবহার করব। সে পণ্যকে অবশ্যই পিএইচড ব্যালেন্সড হতে হবে।
প্রশ্ন : বিশেষজ্ঞদের পরামর্শমতো পণ্য কি তাদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা উচিত?
উত্তর : অব্শ্যই। আর আমি দর্শকদের জন্য বলতে চাই, আমাদের পরিষ্কার করার বিষয় থেকেই কিন্তু যত্নের ধাপটি শুরু হয়। ক্লিনজার ফ্র্যাগেন্স ফ্রি হতে হবে। কোনো রকম পারফিউম বা ডিওড্রেন থাকা যাবে না। অ্যালকোহল ফ্রি হতে হবে।
প্রশ্ন : স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য চিকিৎসা প্রয়োজন হলে কি অগ্রবর্তী কোনো পদ্ধতি রয়েছে?
উত্তর : আমরা যেহেতু রিজেনারেটিভ মেডিসিন নিয়ে কাজ করছি, সংবেদনশীল ত্বককে একটি স্বাভাবিক ত্বক দেওয়াই আমাদের চাওয়া। এটা সম্ভব হচ্ছে। সেক্ষেত্রে আমি ময়েশ্চারাইজারের কথা বলতে চাচ্ছি, ময়েশ্চারাইজারের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। এটি ত্বককে প্রশমিত করে। আর শরীরের ত্বকে যে লিপিড নামক পদার্থ থাকে এটি হারানোর জন্য ত্বক সংবেদনশীল হয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবে আমরা অ্যান্টি এজিংয়ের একটি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে বলি। একটি রেটিনয়েড ও এইচএযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে বলি। তবে স্পর্শকাতর ত্বক যদি স্থায়ী হয়, তাহলে আমি রেটিনয়েড বা এএইচযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করব না। সে জায়গায় আমরা সিরামাইড বা লিনোলেইকযুক্ত কোনো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করব।
প্রশ্ন : সাধারণত কতদিন এটি ব্যবহারের মাধ্যমে স্বাভাবিক ত্বকের অধিকারী হওয়া যায়?
উত্তর : ত্বকের রিজেনারেশন পদ্ধতিতে সাধারণত দেড় মাস সময় লাগে। সংবেদনশীল ত্বককে সাধারণ ত্বকে নিয়ে আসতে তিন মাসের কোনো পদ্ধতি মানতে হবে।