‘কিডনি দানের পরও সব কাজ করা যায়’
কিডনি বিকল হয়ে গেলে প্রতিস্থাপন করা যায়। আর এই ক্ষেত্রে একজন দাতার প্রয়োজন হয়। অনেকে ভাবেন, কিডনি দানে ক্ষতি হয়। আসলে কি কিডনি দানে সমস্যা হয়?
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩০০৯তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. মো. কামরুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি সিকেডি অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : চাইলেই কি একজন আরেকজনকে কিডনি দিতে পারেন?
উত্তর : এখন আমাদের দেশে যেটি রয়েছে লিভিং ডোনার। বিদেশেও লিভিং ডোনার রয়েছে।
কারণ, আমাদের শরীরে দুটো অঙ্গ দেওয়া রয়েছে। দুটো অঙ্গ যদি ভালো থাকে, একটি অঙ্গ কিন্তু নির্ভিঘ্নে , নিশ্চিন্তে দিতে পারে। আমরা প্রায় পাঁচশর কাছাকাছি ট্রান্সপ্লান্ট ( প্রতিস্থাপন) করেছি। একটি দাতাও কিন্তু খারাপ নেই।
অনেকের ধারণা কিডনি দিয়ে দিলে আমি আর কাজকর্ম করতে পারব না। এটা ভুল। সে সবকিছু করতে পারবে। সে চাকরি করতে পারবে, ঘরের কাজ, সামাজিক কাজ-সবকিছু করতে পারবে। কাজেই এই ভুল ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
আর দ্বিতীয় বিষয় হলো একটি আইন রয়েছে, কাছের আত্মীয় ছাড়া কেউ দিতে পারবে না। নতুন আইনে পরিধি আরো বাড়ানো হয়েছে। নতুন আইনে যেটি রয়েছে, সেটি এখন পর্যন্ত গ্যাজেট আকারে আমরা পাইনি। গ্যাজেট আকারে পেলেই পরিধি অনেক বাড়িয়ে ট্রান্সপ্লান্ট করা সম্ভব হবে। আমাদের দেশে প্রতি বছর চার হাজার রোগী কিডনি বিকল হয়ে মারা যাচ্ছে। আর যারা পুরোনো, যাদের ডায়ালাইসিস চলছে, তারা তো আছেনই। আমাদের দেশে মাত্র আড়াইশ বা তিনশ ট্রান্সপ্লান্ট হচ্ছে বছরে। আমাদের সেন্টারও খুব বেশি নেই। ১০০ ট্রান্সপ্লান্ট করা সেন্টার রয়েছে মাত্র চারটি।
বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০০ ট্রান্সপ্লান্ট হয়েছে। আমি যেখানে কাজ করি সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজ সেখানে ৪৭৮টা ট্রান্সপ্লান্ট হয়েছে। কিডনি ফাউন্ডেশনে ৪৩০ থেকে ৪৪০ এ রকম হয়েছে। বারডেমে হয়েছে ১৫০ এর কাছাকাছি। আর যেগুলো সেন্টার রয়েছে সেগুলো একশর নিচে। আরো বাড়ানো দরকার।
অনেকের আরেকটি ধারণা রয়েছে যে আমাদের দেশের ফলাফল কেমন। আমাদের দেশে বর্তমানে ট্রান্সপ্লান্টের ফলাফল খুবই ভালো। নব্বইয়ের বেশি। প্রথম বছর যদি ট্রান্সপ্লান্ট করে, এক বছর কিডনিটা ৯৫ ভাগ ক্ষেত্রে ভালো থাকবে। এখানে ভয় পাওয়ার কিছু নেই যে বাংলাদেশে ট্রান্সপ্লান্ট করব, কি করব না।
আরেকটি জিনিস বলতে চাই, বাংলাদেশে এখন পরীক্ষা নিরীক্ষার দক্ষতা, চিকিৎসকদের দক্ষতা অনেক বেড়েছে। বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করার কোনো প্রয়োজন নেই।