প্রকাশিত হলো ড. হাসনা বেগমের দার্শনিকদের গল্প দ্বিতীয় খণ্ড
সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ড. হাসনা বেগমের দার্শনিকদের গল্প বইটির দ্বিতীয় খণ্ড।
আর এই বইটিতে কঠিন বিষয়গুলোকে সহজ করে উপস্থাপন করবার কাজটি করা হয়েছে। এ বইটিতে আধুনিক দর্শনের সূচনালগ্নের দার্শনিক বেকন, আধুনিক দর্শনের জনক হিসেবে খ্যাত দেকার্ত, বুদ্ধিবাদী দার্শনিক লাইবনিজ এবং স্পিনোজা, অভিজ্ঞতাবাদী দার্শনিক লক এবং বার্কলে, সংশয়বাদী হিউম, বিচারবাদী কান্ট, পরম ভাববাদী দার্শনিক হেগেলের জীবন এবং দর্শন আলোচিত হয়েছে অত্যন্ত সরল ভাষায়। প্রশ্ন জাগতে পারে, প্রথম খণ্ডে প্রাচীন যুগের দার্শনিকদের আলোচনা হওয়ার পর দ্বিতীয় খণ্ডে মধ্যযুগের আলোচনা অন্তর্ভুক্ত না হয়ে আধুনিক যুগের আলোচনা কেন এলো? বইটির ভূমিকাতে দর্শনের ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় মধ্যযুগের আলোচনা কেন অন্তর্ভুক্ত হয়নি তাঁর স্পষ্ট ব্যাখ্যা রয়েছে। এই ব্যাখ্যাটিও পাঠককে দর্শন আলোচনার উদ্দেশ্য ও পদ্ধতি বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পেতে সাহায্য করবে।
আধুনিক যুগের দার্শনিকদের আলোচনার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানমনস্কতা যেমন প্রাধান্য পেয়েছে তেমনি আত্মচেতনার বিষয়টিও গুরুত্ব পেয়েছে। যথার্থ যৌক্তিক পদ্ধতি এবং জ্ঞানের প্রকৃত উৎস অনুসন্ধানে আধুনিক দর্শন বিশেষ মনোযোগী। সম্ভবত বিজ্ঞান এবং প্রচলিত ধর্মবিশ্বাসের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান বিবাদের কারণেই যথাযথ চিন্তা পদ্ধতি আর যথার্থ জ্ঞান লাভের উপায় খুঁজে বের করবার জন্য আধুনিক যুগের দার্শনিকগণ মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। এ সময়ের দার্শনিকদের জীবন এবং কর্মের মধ্যকার সংযোগ দক্ষ শিল্পীর মতো ফুটিয়ে তুলেছেন ড. হাসনা বেগম। আলোচনার ক্ষেত্রে তিনি একজন দার্শনিকের মতোই থেকেছেন সাবধানী এবং সত্যানুসন্ধানী। জ্ঞানবিদ্যক, অধিবিদ্যক এবং যুক্তিবিদ্যক আলোচনার জটিল দিকগুলোও লেখক উপস্থাপন করেছেন বেশ সরলরূপে। আর তাই দার্শনিকদের গল্প (দ্বিতীয় খণ্ড) নামকরণের দিক থেকে হয়ে উঠেছে সার্থক। দর্শনের কঠিন পাঠগুলো বুঝবার ক্ষেত্রে দর্শনের ছাত্রছাত্রী এবং আগ্রহী সবার জন্য এই বইটি সহায়ক হবে। বইটি প্রকাশ করেছে জাতীয় সাহিত্য প্রকাশ।