তরুণীর কবরে দুই হাজার বছরের পুরোনো ‘স্মার্টফোন’!
স্মার্টফোনের ইতিহাস খুব বেশি দিনের না। স্মার্টফোন তো দূরে থাক মুঠোফোনে একে অপরের সঙ্গে কথা বলতে পারবে আমাদের আগের প্রজন্মও বোধ হওয়ার পর ভাবেনি। কিন্তু রাশিয়ায় দুই হাজার বছরের পুরোনো কবর থেকে একটি ‘স্মার্টফোন’ উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সান এক প্রতিবেদনে জানায়, প্রায় দুই হাজার ১৩৭ বছর পুরোনো কবর থেকে একটি ‘স্মার্টফোন’ পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন দেশটির প্রত্নতত্ত্ববিদরা। বিশেষজ্ঞদের দাবি, কবরটি দুই হাজার ১৩৭ বছর আগে জিওনগু শাসন আমলের এক ধনী ও সম্ভ্রান্ত হুন তরুণীর। ওই তরুণী দক্ষিণ রাশিয়ার গ্রামীণ অঞ্চলে থাকতেন। কবরগুলো খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকের।
রাশিয়ার সায়ানো-শুশেনস্কায়া বাঁধের কাছের আলা জলাধার থেকে পানি সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পানি সরতেই সন্ধান মেলে কয়েকটি প্রাচীন কবরের। তবে এত পুরোনো কবরে কীভাবে একটি স্মার্টফোন পাওয়া গেল, তার উত্তর মেলেনি।
প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা, কবরটি নাতাশা নামের কোনো এক ধনী পরিবারের সন্তানের। আইফোনের মতো দেখতে বস্তুটি আদতে তার পোশাকে সেটে রাখা হয়েছিল। ‘স্মার্টফোন’টি রত্ন-পাথরের খচিত। দামি পাথরগুলো সারিবদ্ধভাবে বসানো হয়েছিল।
সেন্ট পিটার্সবার্গ ইনস্টিটিউট অব ম্যাটেরিয়াল হিসটোরি কালচারের গবেষক ড. ম্যারিনা কিলুনোভস্কায়া ওই এলাকাটিকে ‘বৈজ্ঞানিক আশ্চর্য’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, তাঁর প্রত্নতাত্ত্বিক অভিযান পরিচালনাকারী দল ‘অবিশ্বাস্যভাবে সৌভাগ্যবান’ যে তাঁরা প্রাচীন কবরস্থান আবিষ্কার করেছে।
প্রত্নতাত্ত্বিক ড. পাভেল লিওস বলেন, ‘নাতাশার কবরটি হুনু-যুগের (জিওনগু)। সেখানে ‘আইফোন’ পাওয়ায় ব্যাপারটি এখন সবচেয়ে আকর্ষণীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওই কবরের হাড়গোড়ের সঙ্গে বেল্ট ছিল। বেল্টটি চীনের উজহু মুদ্রায় সজ্জিত ছিল। আর সে কারণে এটি কোন সময়ের, তা জানতে সুবিধা হয়েছে।’
স্মার্টফোনের মতো যে ধাতব বস্তুটি পাওয়া গেছে সেটি দৈর্ঘ্য ১৮ সেন্টিমিটার এবং প্রস্থ ৯ সেন্টিমিটার। তার বেল্টটি বিলাসবহুল রত্নপাথর দিয়ে মোড়ানো। যে মুক্তা দিয়ে সেটি সজ্জিত ছিল তাকে বলা হয় সকল মুক্তার মা। আর নাতাশার বেল্টটি চীনের উইঝু কয়েন দিয়ে খচিত।