মঙ্গলের দক্ষিণ মেরুর নিচে লবণের পুকুর, আশা ইতালির বিজ্ঞানীদের
মঙ্গল গ্রহের দক্ষিণ মেরুর নিচে বিশাল এক ভূগর্ভস্থ হৃদের পাশাপাশি হয়তো লবণাক্ত পুকুরের নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে রয়েছে। যা মঙ্গলে ক্ষুদ্র প্রাণ থাকার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলেছে।
ইতালির বিজ্ঞানীরা নিজেদের ধারণা অনুযায়ী মাটির নিচে বিশাল এক হৃদ শনাক্তের দুই বছর পর সোমবার তাঁদের নতুন আবিষ্কারের কথা জানিয়েছেন। তাঁরা ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির মার্স এক্সপ্রেস মহাকাশযানের রাডার থেকে প্রাপ্ত আরো উপাত্ত ব্যবহার করে তাদের গবেষণা বিস্তৃত করেন।
ন্যাচার অ্যাস্ট্রোনমি সাময়িকীতে প্রকাশিত সর্বশেষ গবেষণায় বিজ্ঞানীরা ভূগর্ভস্থ লবণাক্ত হৃদটির বিষয়ে আরো প্রমাণ হাজির করেন। এটি আনুমানিক ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে এবং আছে বরফের ভূপৃষ্ঠের দেড় কিলোমিটার নিচে।
আশার বিষয় হলো, বিজ্ঞানীরা হৃদটি ঘিরে থাকা পানির তিনটি ছোট আধার চিহ্নিত করেছেন। এসব পুকুরের আকার বিভিন্ন ধরনের এবং এগুলো মূল হৃদ থেকে বিচ্ছিন্ন।
মঙ্গল মোটামুটি ৪০০ কোটি বছর আগে পৃথিবীর মতো উষ্ণ ও আর্দ্র ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লাল এ গ্রহটি বিরান ও শুষ্ক হয়ে আজকের অবস্থা ধারণ করে।
নতুন গবেষণাটির জন্য রোমা ট্রে ইউনিভার্সিটির সেবাস্তিয়ান ইমানুয়েল লউরোর নেতৃত্বে গবেষকেরা পৃথিবীতে অ্যান্টার্কটিকা ও কানাডিয়ান আর্কটিকে মাটির নিচের হৃদ শনাক্তের মতো পদ্ধতি ব্যবহার করেন। এ জন্য তারা ২০০৩ সালে উৎক্ষেপণ করা মার্স এক্সপ্রেস মহাকাশযান থেকে ২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সময়ের শতাধিক রাডার পর্যবেক্ষণের উপাত্ত নিয়ে কাজ করেন।
মঙ্গলে পানি থাকার এসব সম্ভাবনা গ্রহটির ওপরে বা ভেতরে জীবাণুর মতো প্রাণ থাকার সম্ভাব্যতা বাড়িয়ে দিয়েছে। সেখানকার হিমশীতল জায়গায় লবণের অধিক ঘনত্ব পানিকে জমাট বেঁধে যাওয়া থেকে রক্ষা করে বলে জানান বিজ্ঞানীরা। মঙ্গলের দক্ষিণ মেরুতে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা মাইনাস ১১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং যত গভীরে যাওয়া যায়, তা ততই উষ্ণ।
গবেষকেরা জানান, পানির এ আধারগুলো জৈবিকভাবে আকর্ষণীয় এবং ভবিষ্যতে মঙ্গলে অভিযান চালানোর ক্ষেত্রে ওই অঞ্চলটিকে লক্ষ্যবস্তুতে রাখা উচিত।