বাড়ছে ‘মনবড়ি’র কার্যক্ষমতা
নতুন কোনো ওষুধ বাজারে আনার আগে দুই ধরনে এটি তৈরি করা হয়। এক ধরনের ওষুধে এর সব রকম উপাদান থাকে। অপর ধরনটি একই রকম দেখতে হলেও ওষুদের কোনো উপদানই এতে থাকে না, যা ‘প্লাসিবো’ নামে পরিচিত। পরে গবেষণা করে দেখা হয় ওষুধের কার্যকারিতা- ‘প্লাসিবো’ বা ‘মনবড়ি’র তুলনায় প্রকৃত ওষুধ কেমন কাজ করে।
গত ২৫ বছরের ‘প্লাসিবো’ ও প্রকৃত ওষুধের কার্যকারিতার তথ্য গবেষণা করে দেখা গেছে, ওষুধের দুই ধরনের মধ্যে রোগ সারানোর হারে পার্থক্য ধীরে ধীরে কমেছে। তবে সারাবিশ্বের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে এর হার বেশি। তবে কি যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের মধ্যে ‘মনবড়ি’র প্রভাব বেশি।
যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্লাসিবো বা মনবড়ির রোগ সারানোর ক্ষমতা নিয়ে এর আগেও অনেক গবেষণা হয়েছে। সব গবেষণায়ই দেখা গেছে ওষুধের কোনো গুণাগুণ না থাকলেও শুধু বিশ্বাসের কারণে রোগমুক্তি ঘটেছে বলে মনে করেন অনেকে। একেই বলা হয় ‘প্লাসিবো ইফেক্ট’। সাধারণত ব্যথা, ক্লান্তি, বিষণ্ণতা, বমি বমিভাব ইত্যাদি ক্ষেত্রে এমনটি বেশি দেখা যায়। গবেষকদের মতে, এসব ক্ষেত্রে মানুষের মস্তিষ্ক রোগ দূর করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিটি নতুন ওষুধ পরীক্ষামূলকভাবে চালুর ক্ষেত্রে এর ‘প্লাসিবো ইফেক্ট’ বের করতে বলে দেশটির খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (এফডিএ)। নির্দিষ্ট কিছু রোগীর ওপর গবেষণা করে এটি বের করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকদের মতে, ওষুদের ‘প্লাসিবো ইফেক্ট’-এর প্রভাব ধীরে ধীরে বাড়ছে। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের অনেক নামকরা ওষুধ প্রস্তুতকারকদের বিষণ্ণতা ও দুশ্চিন্তা দূর করার ওষুধের কয়েকবার ‘প্লাসিবো টেস্ট’ করতে হয়েছে।
প্লাসিবো ইফেক্টের কার্যকারিতা বেড়ে যাওয়ার পেছনের কারণ সম্পর্কে গবেষকরা এখনো নিশ্চিত নন। তবে অনেক বিষয় এখানে সম্পৃক্ত। একদল গবেষকের মতে, প্লাসিবোর ইফেক্ট যখন পরীক্ষার ক্ষেত্রে গবেষকরা রোগীদের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন। গবেষকদের এই গুরুত্ব দেওয়ার কারণেই অনেক রোগী নিজেকে সুস্থ মনে করেন। তবে সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে গবেষকরা মনের ওপর ওষুধের প্রভাবকেই দায়ী করেন।