শীর্ষ পদে নারী বেশি, প্যারিসের সিটি হলকে জরিমানা
বিরল বিপত্তি। বিশ্বের অনেক দেশে অভিযোগ পাওয়া যায়, নারীরা পুরুষের তুলনায় চাকরির সুযোগ কম পান, তাঁদের সচরাচর উচ্চ পদে নেওয়া হয় না। কিন্তু, কোনো প্রতিষ্ঠানে পুরুষের তুলনায় বেশি সংখ্যক নারীকে চাকরি দেওয়ায় জরিমানা করার খবর বোধ হয় বিরল। এবার তেমনই ঘটনা ঘটেছে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে। সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে এ খবর জানিয়েছে।
ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে প্যারিস সিটি হলে ১৫টি শীর্ষ পদের মধ্যে ১১টিই পেয়েছিলেন নারীরা। ফলে লিঙ্গ সমতা বিষয়ক আইনের লঙ্ঘন হয়েছে বলে সিটি হলকে প্রায় এক লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা করা হয়েছে। ফ্রান্সের পাবলিক সার্ভিস মন্ত্রণালয় এই জরিমানা করেছে।
ফরাসি আইন অনুসারে চাকরির ক্ষেত্রে ‘লিঙ্গ ভারসাম্য’ বজায় রাখতে হয়। অর্থাৎ, কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানে নারী ও পুরুষের সংখ্যার মধ্যে খুব বেশি হেরফের হতে পারবে না। কিন্তু, প্যারিসের সিটি হলের সর্বোচ্চ স্তরে নারীর সংখ্যা অনেকটা বেশি হয়ে যাওয়ায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে পাবলিক সার্ভিস মন্ত্রণালয়। সিটি হলে ২০১৮ সালে ৩০ শতাংশের কিছু বেশি পদে পুরুষদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
তবে জরিমানার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কও কম হচ্ছে না। প্যারিসের মেয়র অ্যান হিডালগো সিটি কাউন্সিলে এক বৈঠকে বলেছেন, ‘এই জরিমানা অবাস্তব, অন্যায্য, ভয়ঙ্কর এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত।’ তাঁর সাফ কথা, প্রতিটি ক্ষেত্রে মেয়েদের এগিয়ে আসার জন্য উৎসাহ দিতে হবে। কারণ, ফ্রান্সে এখনো নারীরা পিছিয়ে রয়েছে।
২০১৩ সালের আইন অনুযায়ী, চাকরিতে জ্যেষ্ঠ পদে ৬০ শতাংশের বেশি পুরুষ বা নারী কেউই থাকতে পারবেন না। নারীরা যাতে সরকারি চাকরিতে বেশি করে সুযোগ পান, তার জন্যই এমন আইন করা হয়েছিল। বর্তমানে সিটি হলের সিনিয়র প্রশাসনিক পদের প্রায় ৪৭ শতাংশে নারীরা রয়েছেন।
ফ্রান্সের পাবলিক সার্ভিস মন্ত্রী স্বীকার করেছেন, ২০১৮ সালের আইন অনুসারে জরিমানা করা হয়েছিল। আইনটি ‘অবাস্তব’ বলে পরে তা বাতিল করা হয়েছে। প্যারিসের মেয়রকে তিনি বলেছেন, ‘আমি চাই, জরিমানার অর্থ যাতে পাবলিক সার্ভিসের নারীদের জন্য খরচ করা হয়।’ তিনি আলোচনার জন্য মেয়রকে মন্ত্রণালয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।