বারানসির গ্রামে গ্রামে পানি ঘাটতি, দায়ী কোকা-কোলা!
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী এলাকা বারানসি। উত্তর প্রদেশের এ জেলার মেহেদিগঞ্জ এলাকার গ্রামে গ্রামে এখন পানির তীব্র সংকট। এর জন্য বিশ্বখ্যাত কোমল পানীয় প্রতিষ্ঠান কোকা-কোলার কারখানাকে দায়ী করছেন গ্রামবাসী।
এ রাজ্যের ১৮টি ‘গ্রাম পরিষদ’ কোকা-কোলার বোতলজাতকরণ কারখানাকে ভূগর্ভ থেকে পানি উত্তোলন বন্ধের দাবি জানিয়েছে। পরিবেশবাদী একটি সংগঠন এ তথ্য জানিয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের দাবি, ১৯৯৯ সালে কোকা-কোলার প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকে এলাকায় পানির ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক ইন্ডিয়া রিসোর্স সেন্টার গ্রাম পরিষদগুলোকে সমর্থন করছে। এর কর্মকর্তা অমিত শ্রীবাস্তব বলেন, গ্রামবাসীর পক্ষে গ্রাম পরিষদের নির্বাচিত প্রধানরা প্রকল্পটি বন্ধের দবি তুলেছেন। তাঁরা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, মেহেদিগঞ্জবাসী কোলা-কোলাকে চায় না।
অমিত বলেন, কোকা-কোলা বিশ্বের কাছে নিজেকে একটি দায়িত্বশীল পানি ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে উপস্থাপন করে। কিন্তু ভারতে বাস্তবতা হচ্ছে, কোকা-কোলা ভূগর্ভ থেকে পানি তোলার কারণে দরিদ্র মানুষ, নারী, শিশু, কৃষক ও গবাদি পশু পানির অভাবে ভুগছে।
মেহেদিগঞ্জ কৃষিপ্রধান এলাকা। এখানকার মানুষ খাবার পানি, ধোলাই, জমি চাষ ও গবাদি পশুকে খাওয়ানোসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে ভূগর্ভস্থ পানির ওপরই ভরসা করে থাকে। কোকা-কোলাও তার পণ্য উৎপাদনে একই উৎস থেকে পানি সংগ্রহ করছে।
অমিত বলেন, এ ব্যাপারে ১৮টি গ্রাম পরিষদ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে চিঠি দিয়েছে। এতে কোকা-কোলাকে এই এলাকায় ভূগর্ভের পানি ব্যবহারে নিষেোজ্ঞা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এই পর্ষদই কোকা-কোলার লাইসেন্স অনুমোদন দিয়েছে।
ভারত সরকারের কেন্দ্রীয় ভূগর্ভস্থ পানি কর্তৃপক্ষের সাম্প্রতিক কিছু তথ্য উল্লেখ করেন শ্রীবাস্তব। এতে বলা হয়েছে, আরাজিলাইন ব্লকে কোকা-কোলার এই প্রকল্প স্থাপিত, সেখানে ২০১১ সালে অতিরিক্ত পানি তোলা হয়েছে।
হিন্দুস্থান কোকা-কোলা বেভারেজ প্রাইভেট লিমিটেড (এইচসিসিবিপিএল) বলেছে, ২০১২ সালেও একটি গবেষণা হয়েছিল যেখানে গ্রামবাসী অভিযোগ করেছে, তাঁদের পুকুর, কুয়া শুকিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এর পেছনে কোম্পানি দায়ী তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।