সেনা অভ্যুত্থানের পর সুদানে জরুরি অবস্থা জারি
আফ্রিকার দেশ সুদানে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যকে আটকের পর সামরিক নেতা জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান সার্বভৌম কাউন্সিল এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভেঙে দিয়ে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদুক অভ্যুত্থানের সমর্থনে বিবৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় তাঁকে বন্দি করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়।
এই মন্ত্রণালয়টি এখনো দৃশ্যত হামদুকের সমর্থকদের নিয়ন্ত্রণাধীনে আছে। অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক দেওয়া হয়েছে মন্ত্রণালয় থেকে।
সামরিক অভ্যুত্থানের বিরোধীরা এরই মধ্যে প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এসেছে। রাজধানী খার্তুমে সামরিক সদর দপ্তরের কাছে তারা গুলির মুখে পড়েছে এবং কয়েকজন আহতও হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
চিকিৎসকদের একটি কমিটি ফেসবুকে অন্তত ১২ জন আহত হওয়ার খবর জানিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আর কিছু জানানো হয়নি।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান সুদানের সার্বভৌম কাউন্সিলের প্রধান। সামরিক ও বেসামরিক নেতাদের মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগির যৌথ কাউন্সিল এটি।
বিবিসি জানায়, বুরহান দেশের ক্ষমতা দখলের জন্য রাজনৈতিক কোন্দলকে দায়ী করেছেন। টিভিতে এক ভাষণে তিনি বলেন, রাজনীতিবিদদের মধ্যে কোন্দল, উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং সহিংসতায় উসকানির কারণে তাঁকে বাধ্য হয়ে দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে হয়েছে।
এদিকে রাস্তায় রাস্তায় এরই মধ্যে ‘সামরিক শাসন চাই না’ আওয়াজ উঠেছে। এক বিক্ষোভকারী বলেছেন, ‘বেসামরিক সরকার ফিরে না আসা পর্যন্ত আমরা রাস্তা ছাড়ব না।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, খার্তুমজুড়ে ইন্টারনেট বিঘ্নিত হচ্ছে এবং সেনা ও আধাসামরিক সেনারা শহরজুড়ে মোতায়েন রয়েছে। খার্তুম বিমানবন্দরও বন্ধ রয়েছে এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত রয়েছে।
সুদানে সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। সুদান এবং দক্ষিণ সুদানে যুক্তরাজ্যের বিশেষ দূত অভ্যুত্থানের নিন্দা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ইইউ এবং আরব লিগও অভ্যুত্থান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।