যুদ্ধ থেকে বাঁচলেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, এরপর কী?
ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ থেকে বাঁচতে প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে প্রবাসী বাংলাদেশি। তবে, পোল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে ফিরতে চান না প্রায় কেউই। এমন তথ্য জানিয়েছেন ইউক্রেনে পড়তে যাওয়া বাংলাদেশি শেখ খালেদ বিন সেলিম। খবর বিবিসির।
ইউক্রেন থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পোল্যান্ডে গেছেন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শেখ খালেদ বিন সেলিম। বিবিসি লাইভে এক ভিডিওতে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন তিনি।
শেখ খালেদ বিন সেলিম বলেন, ‘দুঃখের মধ্যেও হাসি পায় আর কী, যে... যুদ্ধ পিছু ছাড়ছে না। আমি ২০১৪ সালে লুহানস্কে ছিলাম, সেখানে যুদ্ধ; গত বছর ওডেসায় এসেছি, এখন সেখানেও যুদ্ধ। এখন এমন অবস্থা (যে), দেশ (ইউক্রেন) ছাড়তে হয়েছে।’
যুদ্ধ থেকে বেঁচে গেলেন, এরপর কী?
শেখ খালেদ বিন সেলিম বলেন, ‘এ যুদ্ধাবস্থায় আপনি জানেন না—আপনার কী হবে। ওই মুহূর্তে আপনি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে যখন নিরাপদ জায়গায় চলে যান, তখন আপনার মধ্যে এক ধরনের স্বস্তি কাজ করে। এবং যখন স্বস্তিটা শেষ হয়ে যায়, তারপর শুরু হয় দুশ্চিন্তা যে, আমি কী করব।’
‘যেদিন সকালে ওডেসা শহরে বম্বিং হয়, সেদিন আমরা বাসের টিকেট পাচ্ছিলাম না কোথাও। বাস-ট্রেন কোনো কিছুই নয়। বর্ডার খুলে দেওয়ার তিন দিন পরে আমরা সীমান্তে যাই। তখন মেডিকা সীমান্তে ছিল ৪৫ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ যানজট। সুতরাং গাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে না; ৪৫ কিলোমিটার হেঁটে যেতে হবে’, বলেন শেখ খালেদ বিন সেলিম।
‘সীমান্ত খুলে দেওয়ার তিন দিন পরে গিয়েও আমরা বিদেশিদের লম্বা লাইন দেখতে পেয়েছি। আমি সকাল সাড়ে ৬টায় সীমান্তে দাঁড়িয়ে থেকে পোল্যান্ডে প্রবেশ করতে পেরেছি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা-পৌনে ৭টায়। প্রায় ১২-১৩ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেছি’, যোগ করেন শেখ খালেদ বিন সেলিম।
শেখ খালেদ বিন সেলিম জানান, পোল্যান্ডপ্রবাসী বাংলাদেশিরা থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন ইউক্রেন থেকে আসা বাংলাদেশিদের। তবে, এসব বাংলাদেশির বেশির ভাগই দেশে ফিরতে চান না।
শেখ খালেদ বিন সেলিম বলেন, ‘অনেকেই ইউরোপে স্থায়ী হওয়ার বা ওয়ার্ক পারমিট নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে। তবে, এখানে বেশির ভাগই থাকবে না। যারা দেশে যাওয়ার যাবে, বাকিরা পোল্যান্ডে থাকবে না। তবে, বাংলাদেশে যাওয়ার লোকের সংখ্যা পরিমাণে কম।’
‘আমিও এখানে (পোল্যান্ডে) অ্যাডমিশন নেব, ভর্তি হয়ে যাব, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। পোল্যান্ডে যেসব বিদেশি শিক্ষার্থী ইউক্রেন থেকে এসেছে, তাদের এখানে ভর্তি নিয়ে নিচ্ছে। এবং যাদের সঙ্গে কথা বলেছি, বিশেষ করে মেডিকেল শিক্ষার্থী, তারা এখানে ভর্তি হতে চাচ্ছে’, বলেন শেখ খালেদ বিন সেলিম।