ফুটবল ইতিহাসে ব্যয়বহুল যত ফ্লপ ট্রান্সফার
ফুটবল বিশ্বে টাকা ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু বড় খরচ সবসময় সাফল্যের নিশ্চয়তা দেয় না। সর্বকালের অন্যতম সেরা কিছু ট্রান্সফার হয়েছে, যাকে ব্যয়বহুল ফ্লপ বলা হয়ে থাকে। গোল ডটকমের এমনই কিছু বিশ্লেষণ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
এক নজরে দেখে নিন ব্যয়বহুল যত ফ্লপ ট্রান্সফার :
জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ
২০০৯ সালে ইন্টার মিলান থেকে বার্সেলোনায় যোগ দেন জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ। বার্সেলোনায় তাঁর ট্রান্সফার সর্বকালের সবচেয়ে ফ্লপ চুক্তিগুলোর মধ্যে একটি। শুধু ইব্রাহিমোভিচের জন্য ইন্টারকে ৬৯.৫ মিলিয়ন ইউরো দিয়েছিল বার্সেলোনা।
এক মৌসুম বার্সায় ছিলেন তিনি। সবমিলে ২৯ ম্যাচ খেলে ১৬ গোল করেন তিনি। পরে তিনি আবার ইন্টারে ফিরে যান।
রোমেলু লুকাকু
রোমেলু লুকাকু এভারটন থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যান ২০১৭ সালে। ২০১৯ সাল পর্যন্ত ছিলেন দলটিতে বড় কোনো সাফল্য পাননি। তিন মৌসুমে সব মিলিয়ে ৬৬ ম্যাচ খেলে ২৮ গোল করেন। পরে ইন্টার মিলান হয়ে আবার তিনি চেলসিতে গেছেন।
এভারটন থেকে লুকাকু ৭৫ মিলিয়ন ইউরোতে ম্যান ইউতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো সাফল্য পাননি এই বেলজিয়ান তারকা।
কেপা আরিসাবালাগা
কেপা আরিসাবালাগা অ্যাথলেটিকো বিলবাও থেকে চেলসিতে গিয়েছিলেন ২০১৮ সালে। রেকর্ড ৭২ মিলিয়ন ইউরোতে এই দলটিতে যান এই স্প্যানিশ গোলরক্ষক।
সেই সময় তিনি ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে দামি গোলরক্ষক। কিন্তু চেলসিকে বড় কোনো সাফল্য এনে দিতে পারেননি।
আলভারো মোরাতা
আলভারো মোরাতা রিয়াল মাদ্রিদ থেকে চেলসিতে যান ২০১৭ সালে। এই স্প্যানিশ স্ট্রাইকার ইংল্যান্ডে গিয়ে গোলের জন্য ক্রমাগত লড়াই করেন। তিন মৌসুম ক্লাবটিতে থেকে ৪৭ ম্যাচে ১৬ গোল করেন। পরে ২০১৯ সালে অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদে চলে যান।
৬০ মিরিয়ন ইউরোতে চেলসি তাঁকে দলে নিয়ে ছিল। এটিও সর্বকালের সেরা ফ্লপ ট্রান্সফারের মধ্যে একটি।
নিকোলাস পেপে
নিকোলাস পেপে লিলে থেকে আর্সেনালে গিয়েছিলেন ২০১৯ সালে। একটা সময় মনে হয়েছিল পেপে আর্সেনালের জন্য ভালো সংগ্রহ। ৭২ মিলিয়ন ইউরোতে এই ফরাসি তারকাকে দলে নেয়া আর্সেনাল। কিন্তু খুব বেশি সাফল্য এনে দিতে পারছেন না তিনি। তাঁর ট্রান্সফারও ফ্লপ হয়েছে।
জেমস রদ্রিগেজ
জেমস রদ্রিগেজ মোনাকো থেকে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেন ২০১৪ সালে। রিয়াল মাদ্রিদের তখনকার প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ কলম্বিয়ার এই তারকাকে দল নিয়ে চমকে দিয়েছিলেন।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে এক রকম ব্যর্থ সময় পার করেন। ২০১৪-১৫ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলে ১৭ গোল করেন।
২০১৬ কোচ হিসাবে জিনেদিন জিদান যোগ দেওয়ার পর মাদ্রিদ থেকে চলে যেত বাধ্য হন তিনি। ২০১৭ সালে তাঁকে ধারে নেয় বায়ার্স মিউনিখ। সেখানে এভারটন হয়ে এখন আছেন কাতারের আল রাইয়ান ক্লাবে।
হ্যারি ম্যাগুয়ার
হ্যারি ম্যাগুয়ার লেস্টার সিটি থেকে ২০১৯ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড যাগ দেন। লেস্টারে দারুণ সাফল্য পাওয়া এই ডিফন্ডারকে সেই সময় পেপ গার্দিওয়ালা ম্যানচেস্টার সিটিতে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে রেকর্ডের মূল্যে ম্যান ইউ দলে নেয়। কিন্তু দলটিতে খুব একটা সাফল্য পাচ্ছেন না তিনি।
গত তিন বছর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড সমর্থকদের তিনি এক রকম হতাশ করেছেন। বড় অঙ্কের বিনিময়ে তাঁকে দলে নেওয়াটা বিশাল অপচয় হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
ইডেন হ্যাজার্ড
ইডেন হ্যাজার্ড চেলসি থেকে রিয়াল মাদ্রিদে গিয়েছিলেন ২০১৯ সালে। যিনি সাত বছর প্রিমিয়ার লিগকে আলোকিত করেছিলেন। লা লিগায় গিয়ে গিয়ে হতাশ করেন।
হ্যাজার্ড চ্যাম্পিয়নস লিগসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ট্রফিতে পেয়েছেন। তবে তিনি গ্যারেথ বেলের মতো দলটিতে গিয়ে খুব একটা সাফল্য পাননি। এই বেলজিয়ান এখনো ক্লাবটিতে আছেন। তবে খুব বেশি আলো ছড়াতে পারছেন না।
পল পগবা
পল পগবা জুভেন্টাস থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যান ২০১৬ সালে। অবশ্য এর আগে ম্যান ইউতে ২০১১-১২ মৌসুমে খেলছিলেন। পরে ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত জুভেন্টাসে খেলেন।
ম্যান ইউতে গত কয়েক বছরে ১৩৬ ম্যাচ খেলে ২৮ গোল করেন। অবশ্য অনেকে মনে করে থাকেন তিনি ইংলিশ ক্লাবে খুব বেশি সাফল্য এনে দিতে পারছেন না।
উসমানে দেম্বেলে
উসমান ডেম্বেলে ডর্টমুন্ড থেকে ২০১৭ সালে বার্সেলোনায় যোগ দেন। প্যারিস সেন্ট-জার্মেইতে নেইমার চলে যাওয়ার পর বার্সেলোনা তাকে দলে নেয়।
রেকর্ড ফিতে তঁকে দলে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত পাঁচ বছরে চোট, অসুস্থতা ও শৃঙ্খলাজনিত কারণে বিনামূল্যে তাঁকে দলে নিতে প্রস্তুত ক্লাবটি।
অঁতোয়ান গ্রিয়েজমান
অঁতোয়ান গ্রিয়েজমান অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ ২০১৯ সালে বার্সেলোনায় যোগ দেন। ক্যাম্প ন্যুতে গিয়ে একরকম ফ্লপ তিনি। কিন্তু তিনি ধারাবাহিক সাফল্য পেতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন। ২০২১ সালে মাদ্রিদে ফিরে যান।
ফিলিপে কুতিনহো
ফুটবল ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ট্রান্সফারগুলোর একটি কুতিনহোর লিভারপুল থেকে বার্সেলোনায় যোগ দেওয়া। রেকর্ড ট্রান্সফারে তাঁকে দলে নেয় কাতালানরা।
দারুণ প্রতিভাবান এই মিডফিল্ডারকে বার্সেলোনা যে আশা নিয়ে দলে নিয়েছিল সে অনুযায়ী সাফল্য এনে দিতে পারছিলেন না। তাই ব্রাজিলীয় মিডফিল্ডারকে ধারে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে দেয়। এখন সেই ক্লাবেই আছেন তিনি।