হঠাৎ কী হলো সাকিবের?
কিছুদিন আগেও তাঁর দুর্দান্ত ব্যাটিং-বোলিংয়ে সওয়ার হয়ে জয়ের আনন্দে ভেসে বেড়াত বাংলাদেশ। অথচ সেই সাকিব আল হাসানই এখন অনুজ্জ্বল। গত বছরের শেষ দিকে বিপিএল, এ বছরের শুরুতে জিম্বাবুয়ে সিরিজ আর সদ্য-সমাপ্ত পিএসএলে তেমন ভালো খেলতে পারেননি। ভারতের বিপক্ষে এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচেও পুরোনো সাকিবকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি রোহিত শর্মার সহজ ক্যাচও পড়ে গেছে তাঁর হাত থেকে। বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারকে নিয়ে তাই অনেকেই চিন্তিত।
গত নভেম্বর-ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত বিপিএলের তৃতীয় আসরে রংপুর রাইডার্সের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন সাকিব। বাংলাদেশের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতায় বল হাতে ভালো করলেও ব্যাটিংয়ে তেমন সুবিধা করতে পারেননি। ১১ ম্যাচে ১৮ উইকেট নেওয়া সাকিবের ব্যাট থেকে এসেছিল মাত্র ১৩৬ রান।
জানুয়ারিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও দেশের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট তারকার কাছ থেকে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স পায়নি বাংলাদেশ। চার ম্যাচে সব মিলিয়ে ৫৪ রান করা সাকিব কোনোরকমে পাঁচ উইকেট নিতে পেরেছিলেন। তবে বোলিং গড় (২৭.৬) আর ইকোনমি রেট (৮.৬২) দুটোই ছিল তাঁর মানের বোলারের তুলনায় বেমানান।
পিএসএল বা পাকিস্তান সুপার লিগে অবশ্য দুর্দান্ত শুরু হয়েছিল সাকিবের। প্রথম ম্যাচে ৫১ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলে জয় এনে দিয়েছিলেন করাচি কিংসকে। পাশাপাশি প্রতিপক্ষের অধিনায়ক আজহার আলীর উইকেট নেওয়ায় ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও উঠেছিল তাঁর হাতে। কিন্তু এর পর নিষ্প্রভ হতে থাকে পারফরম্যান্স। পিএসএলে আট ম্যাচ খেললেও ১২৬ রান আর তিন উইকেট নিয়ে ফিরতে হয়েছে সাকিবকে। গত বুধবার ভারতের বিপক্ষেও তিনি জ্বলে উঠতে ব্যর্থ। তিন ওভার বল করে ১৫ রানের বিনিময়ে যুবরাজ সিংয়ের উইকেট নিলেও মাত্র তিন রান করতে পেরেছেন। তবে দলকে সবচেয়ে বেশি বিপদে ফেলেছেন রোহিতের সহজ ক্যাচ ফেলে দিয়ে।
তাই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কী হলো সাকিবের? তিনি কি একটানা খেলতে খেলতে ক্লান্ত? নাকি মনোযোগ বা ফিটনেসে কোনো সমস্যা হচ্ছে? মোহাম্মদ রফিক অবশ্য তাঁর উত্তরসূরিকে নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন। বাংলাদেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা স্পিনারের দৃঢ়বিশ্বাস, শিগগিরই পুরোনো রূপে দেখা যাবে সাকিবকে, ‘প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জীবনেই দুঃসময় আসে। আমি মনে করি, এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। আমরা সবাই জানি, সাকিব কতটা ভালো খেলোয়াড়। তাই আতঙ্কিত না হয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে সাকিবের ওপরে আস্থা রাখুন। সে যত তাড়াতাড়ি ফর্ম ফিরে পাবে, ততই দলের জন্য মঙ্গল।’
রফিকের শেষ কথাটা এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদেরও মনের কথা।

স্পোর্টস ডেস্ক