দৃষ্টি ফিরিয়ে আইসিসির নজরে জিটিভি
শৈশব আর কৈশরে তাঁর বন্ধুরা যখন ক্রিকেট খেলতেন, দৃষ্টিহীন সামিউলকে তখন বসে থাকতে হয়েছে মাঠের বাইরে। চোখের দৃষ্টি না থাকলেও ক্রিকেটের প্রতি তাঁর দারুণ ভালোবাসা তৈরি হয়েছিল। তাই স্বপ্নও বুনতে থাকেন একদিন স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখবেন তিনি।
মাত্র ছয় মাস বয়সেই চোখের দৃষ্টি হারান সামিউল। চোখে ছানি পড়ার কারণে সব আলো নিভে যায় তাঁর। কিন্তু ছোটবেলা থেকে ক্রিকেটের প্রতি তাঁর যে ভালোবাসা তৈরি হয়েছিল তা আর কমেনি। মাঠের বাইরে বসে বন্ধুদের কাছ থেকে খেলার খবর শুনেছেন, বাজারের চায়ের দোকানে বসে রেডিওতে শুনেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের সাফল্য।
স্বপ্ন ছিল একদিন দৃষ্টি ফিরবে, খেলবেন ক্রিকেট। মাঠে গিয়ে দেখবেন প্রিয় দলের খেলা। জিটিভি ও একটি এনজিওর যৌথ উদ্যোগে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সামিউল দৃষ্টি ফিরে পান। শুধু তাই নয় মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বসে দেখেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টেস্টে বাংলাদেশর অসাধারণ সাফল্য। হাজারো দর্শকের সঙ্গে বসে দুই চোখ ভরে দেখলেন নিজের প্রিয় দলের খেলা।
নিজের স্বপ্নপূরণে দারুণ খুশি সামিউল বলেন, ‘ছোট বেলায় আমার চলাফেরায় অনেক সমস্যা হতো। কেউ কাজে নিত না। তাই বাসায় গিয়ে আমাকে মন খারাপ করে বসে থাকতে হতো। জিটিভি আমার জন্য অনেক কিছু করেছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ।’
জিটিভির ভিন্ন এক উদ্যোগ ‘স্বপ্ন দেখে চোখ’। সামাজিক দায়বদ্ধতার খাতিরে এই উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমান আশ্রাফ ফয়েজ। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, “একটা বড় জনগোষ্ঠী যারা দেখতে চাইলেও পারে না। তারা আমাদের ভীষণভাবে ভাবাল। আমরা চিন্তা করলাম কী করা যায় তাদের জন্য। সেই ভাবনা থেকেই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি ‘স্বপ্ন দেখে চোখ’।”
এই অসাধারণ উদ্যোগের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলেরও (আইসিসি) প্রশংসা পেয়েছে জিটিভি। তাদের একটি প্রতিনিধিদলকে একটি কর্মশালায় যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে আইসিসি। আইসিসি মনে করে বাংলাদেশের এই প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে সারা বিশ্ব কিছুটা হলেও শিখতে পারবে।

ক্রীড়া প্রতিবেদক