আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে যুব বিশ্বকাপে টিকে রইল বাংলাদেশ
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে শুরুটা একদমই ভালো হয়নি বাংলাদেশের। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতের কাছে হেরে যায় মাহফুজুর রহমান রাব্বির দল। তাই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচটা ছিল বাঁচা-মরার। সেই ম্যাচে আর ভুল করেনি বাংলাদেশ। আইরিশদের উড়িয়ে টিকে থাকল শিরোপার দৌড়ে।
আজ সোমবার (২২ জানুয়ারি) দক্ষিণ আফ্রিকার ব্লুমফন্টেইনে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫০ ওভারে আট উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২৩৫ রান তোলে আয়ারল্যান্ড। জবাবে ৪৬.৫ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
২৩৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু করে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার আশিকুর রহমান শিবলী ও আদিল বিন সিদ্দিকের ব্যাটে ৯০ রান তোলে বাংলাদেশ। দলীয় ৯০ রানে ওয়েল্ডনের বলে হান্টারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আদিল। ৬৩ বলে ৩৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
আদিলের বিদায়ের পর দ্বিতীয় উইকেট হারাতেও সময় লাগেনি বাংলাদেশের। দলীয় ১০৭ রানের মাথায় বিদায় নেন শিবলী। ম্যাকবেথের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন তিনি। ৬০ বলে ৪৪ রান আসে ডানহাতি এই ব্যাটারের ব্যাট থেকে।
এরপর ক্রিজে এসে চাপ সামাল দিতে পারেননি অভিজ্ঞ আরিফুল। দলীয় ১২৮ রানের মাথায় তার বিদায়ে বড়সড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। ১৩ বলে ১৩ রান করেন তিনি। দুই রান পরই ফেরেন দারুণ ছন্দে থাকা ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান। দলীয় ১৩০ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরেন তিনি। ২৯ বলে ২১ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
এরপর আহরার আমিনকে সঙ্গে নিয়ে জুটি গড়েন শিহাব জেমস। এই দুজনের ১০৯ রানের জুটিতে জয়ের ভিত গড়ে বাংলাদেশ। শেষমেশ চার উইকেট হারিয়ে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লাল সবুজের দল।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে জর্ডান নেইল ও রায়ান হান্টারের ব্যাটে ভর করে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দেয় আয়ারল্যান্ড। তবে, দলীয় ২৬ রানের মাথায় হান্টারকে ফিরিয়ে প্রথম আঘাত হানেন মারুফ মৃধা। সাজঘরে ফেরান ১৫ বলে ৯ রান করা ওপেনার হান্টারকে।
এরপর গ্যাভিন রৌলসটনকে নিয়ে ফের জুটি গড়েন নেইল। তবে, এই জুটিও বড় হতে দেননি শেখ পারভেজ জীবন। দলীয় ৪৫ রানের মাথায় ১২ বলে ৫ রান করা রৌলসটনকে ফেরান তিনি। দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে আইরিশরা।
তবে, নেইল ও কিয়ান হিল্টনের ব্যাটে চাপ সামাল দেয় আয়ারল্যান্ড। দলীয় ৭২ রানের মাথায় নেইলকে হারায় আয়ারল্যান্ড। ৪৭ বলে ৩১ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর দলীয় ৯৫ রানে ফিলিপস লে রক্সকে ফেরান জীবন। ২৯ বলে ১৩ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
পরবর্তীতে স্কট ম্যাকবেথ ও কিয়ান হিল্টনের ব্যাটে ভর করে বড় জুটি গড়ে আইরিশরা। ১০০ বলে ৭৯ রানে জুটি গড়ে দলীয় ১৭৪ রানে ফেরেন ম্যাকবেথ। আউটের আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৫৯ বলে ৩৪ রান। শেষমেশ নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ২৩৫ রানে থামে আয়ারল্যান্ড। আইরিশদের হয়ে সর্বোচ্চ ৯০ রান করেন হিল্টন।
বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ের রেকর্ড নেই আয়ারল্যান্ড যুবাদের। আগের সাতবারের মুখোমুখি সব কয়বারই জিতেছে বাংলাদেশ। যদিও ১৪ বছর ধরে এই দুটি দল একে অপরের মুখোমুখি হয়নি। সবশেষ ২০১০ সালে নেপিয়ারে খেলেছিল তারা। সেই ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল ১৯৫ রানের বিশাল ব্যবধানে। রাব্বিদের সামনে সুযোগ সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আয়ারল্যান্ড : ৫০ ওভারে ২৩৫/৮ (জর্ডান ৩১, হান্টার ৯, রৌলসটন ৫, হিল্টন ৯০, রক্স ১৩, ম্যাকবেথ ২৭, ম্যাকনালি ১৯, কার্সন ৭, ওলিভার ১, উইলসন ০ ; বর্ষণ ১০-১-৪৫-১, মারুফ ৮-০-৪৫-২, জীবন ১০-১-৫৪-২, রাফি ৯-০-৪২-১, রাব্বি ৯-১-২৭-১, আহরার ১-০-৫-০, আরিফুল ৩-১-১০-০)
বাংলাদেশ : ৪৬.৫ ওভারে ২৩৯/৪ (শিবলী ৪৪, সিদ্দিক ৩৬, রিজওয়ান ২১, আরিফুল ১৩, আহরার ৪৫, জেমস ৫৫; উইলসন ৫-০-২৫-০, ওলিভার ৫-০-৩৪-০, জন ৭-১-২৩-১, কার্সন ৯-০-৪৩-০, ম্যাকবেথ ১০-০-৪১-২, উইল্ডন ৬.৫-০-৪৬-১, জর্ডান ৩-০-১৮-০)